স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৫ আগস্ট : গত ১৯ আগস্ট এন এল এফ টি জঙ্গি গোষ্ঠীর গুলিতে রাজ্যে বিএসএফ জওয়ান শহীদ হওয়ার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আবারো উগ্রপন্থীর আতঙ্ক। এবার উগ্রপন্থী আতঙ্কের ঘটনা হেজামারা ব্লকের দুইঘরিয়া অন্তর্গত প্রত্যন্ত গ্রামে। রাতের বেলা চাঁদা সংগ্রহ করতে বন্দুক নিয়ে মানুষের বাড়ি-ঘরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে উগ্রপন্থী একটি দল বলে সূত্রে খবর।
জানা যায়, দুই ঘুড়িয়া এলাকার পিন্টু দেববর্মার বাড়িতে গত মঙ্গলবার একটি সামাজিক অনুষ্ঠান ছিল। বুধবার বেশ কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন ছিলেন বাড়িতে। রাতে ঘুমানোর স্থান সংকলনের কারণে পিন্টু দেববর্মা এবং তার অপর এক নিকট আত্মীয় বাড়ির উঠানে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আনুমানিক বারোটা নাগাদ আচমকা সশস্ত্র চার-পাঁচ জনের একটি দল বাড়িতে প্রবেশ করে এবং পিন্টু তার পাশে ঘুমিয়ে থাকা অপর এক ব্যক্তির বুকে বন্দুক তাক করে। অন্য দুজন ঘরে ঢুকে ঘরের অন্যান্য সদস্যদের বন্দুক তাক করে এবং মারধোর শুরু করে।
এরই মধ্যে পিন্টু দেববর্মা ঘরের ভেতর ছুটে গিয়ে বাড়ির সদস্য সদস্যাদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এমন সময় শুনতে পান সন্ত্রাসবাদীরা ককবরক ভাষায় প্রশ্ন করছেন বাড়ির মালিক কে। এই কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে পিন্টু দেববর্মা জানালা খুলে পালিয়ে যায়। পিন্টু জানায় সন্ত্রাসবাদীরা বাড়ির লোকেদের বলে তারা চাঁদা সংগ্রহের জন্য বেরিয়েছে। এমনকি তারা বাড়ির লোকেদের প্রশ্ন করতে থাকে চাঁদার ব্যাপারে তারা অবগত কিনা। এরই মধ্যে একজন সন্ত্রাসবাদী তার হাতের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ঘরের ভেতর এক রাউন্ড গুলি চালায়। যদিও এই গুলিতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আন্য দিকে ঘর থেকে পালিয়ে যাওয়া বাড়ির মালিক পিন্টু দেববর্মা গ্রামের অন্যান্য মানুষদের জড়ো করে পুনরায় বাড়িতে ফিরে এলে ততক্ষণে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসবাদীরা।
বাড়ির লোকেরা জানায় সন্ত্রাসবাদী প্রত্যেকের গায়ে ফৌজি পোশাক ছিল। তবে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল দেশীয়। এর পাশাপাশি তাদের কাছে ছিল ওয়াকি টকি বা ওয়ারলেস সেট। পরবর্তী সময় ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে যায় সিধাই থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার দফায় দফায় পুলিশের উদ্বোধন কর্তৃপক্ষ এস ডি পি ও ডঃ কামাল বিকাশ মজুমদার, ওসি জয়ন্ত মালাকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং গোটা বিষয়টি থেকে আবরন উন্মোচনের চেষ্টা করেন। যদিও এই ঘটনা প্রসঙ্গে বাড়ির মালিক পিন্টু দেববর্মা এবং পুলিশ ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় বেশ আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে খবর। পুলিশের পক্ষ থেকে চলছে এলাকায় চিরুনি তল্লাশি।
চলতি মাসের প্রথমদিকে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা শাখার কাছে খবর ছিল ত্রিপুরায় এন এল এফ টি জঙ্গি গুষ্টির আনাগোনা চলছে। সেই মোতাবেক পুলিশ তল্লাশিতে নেমে কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরবর্তী সময় তিনজন উগ্রপন্থী সহ দুজন সহযোগী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। তারপর পুলিশ কুম্ভ নিদ্রায় ঘুমাতে শুরু করে। গত ১৯ আগস্ট রাজ্যে শহীদ হয়েছে বিএসএফ -এর এক জওয়ান। এর রেশ কেটে উঠার আগে আবারো উগ্রপন্থীর আনাগোনা ঘিরে ব্যাপক আতংক সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।