Wednesday, February 12, 2025
বাড়িরাজ্যরবীন্দ্র ভবনে অনুষ্ঠিত হয় স্বর্ণিম বিজয় মশাল স্বাগত সমারোহ

রবীন্দ্র ভবনে অনুষ্ঠিত হয় স্বর্ণিম বিজয় মশাল স্বাগত সমারোহ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ নভেম্বর : শুক্রবার রাজ্যে এসে পৌঁছালো স্বর্নিম বিজয় মশাল। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিজয়কে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে এক বছর ব্যাপী নানান কর্মসূচি শুরু হয়েছে ২০২০সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে। তার প্রতীক হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেদিন নয়াদিল্লিতে স্বর্নিম বিজয় মশাল জ্বালিয়ে কর্মসূচির সূচনা করেন। ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল শাশ্বত মশাল থেকে চারটি বিজয় মশাল জালানো হয়। সেগুলি ১৯৭১-এর যুদ্ধে পরম বীর চক্র, মহাবীর চক্র বিজেতাদের জন্মভূমিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈনিকরা আগরতলা শহরকে আক্রমণের লক্ষ্য বানিয়েছিল।

কিন্তু মরণোত্তর পরম বীর চক্র ল্যান্স নায়েক এলবার্ট এক্কার সাহসী পদক্ষেপে আগরতলা শহর রক্ষা পায়। আগরতলার মানুষ তখন ভারতীয় সৈনিকদের শত্রু সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য ও অন্যান্য  সহায়তা প্রদান করেছিল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকেও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছিল। সেই মোতাবেক স্বর্নিম বিজয় মশাল দেশের বিভিন্ন রাজ্য পরিক্রমা করে শুক্রবার ত্রিপুরা রাজ্যে এসে পৌঁছায়। শনিবার রবীন্দ্র ভবনে অনুষ্ঠিত হয় স্বর্ণিম বিজয় মশাল স্বাগত সমারোহ। এদিনের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। এদিনের  স্বর্ণিম বিজয় মশাল স্বাগত সমারোহে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন  দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে আজাদীকা অমৃত মহোৎসব পালন করছে। তার মধ্যে স্বর্ণিম বিজয় মশাল স্বাগত সমারোহকে যুক্ত করা হয়েছে।

২০২০সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এর সূচনা করেন। চার মশালের  মধ্যে একটি রাজ্যে এসেছে। ১৯৭১ সাল ত্রিপুরাবাসী ও বাংলাদেশের জন্য  ঐতিহাসিক মুহূর্ত। সেই সময়  ভারতের হাজারো সৈনিক ও মুক্তি যোদ্ধা বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। পাকিস্তানের সৈনিকদের হাত থেকে আগরতলা শহরকে রক্ষা করেছিলেন ল্যান্স নায়েক এলবার্ট এক্কা।  মরণোত্তর পরম বীর চক্র ল্যান্স নায়েক এলবার্ট এক্কা এবং মুক্তি যোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্বের সব চাইতে বড় ব্যবস্থিত সৈনিক ব্যবস্থা রয়েছে ভারতে। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭১ সালে যেভাবে পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিয়েছিল ভারত সেই কায়দায় সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে ফের জাবাব দিয়েছে পাকিস্তানকে । যা গোটা বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৭১ সালে দেশ, রাষ্ট্র ভক্তির পরিচয় দিয়ে পাকিস্তানকে শায়েস্তা করেছিল, ঠিক সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে তাদের শায়েস্তা করা হয়েছে। পাকিস্তান উদ্রবাদীদের পক্ষে কাজ করে। তা আজও বর্তমান।  প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময় পাকিস্তান পেছনের দরজা দিয়ে তার স্বভাব সিদ্ধ  ভঙ্গিমায় আক্রমণ করে। কার্গিল জুদ্ধে বীর সেনানী তার যোগ্য জবাব দিয়েছে। বহু সৈনিক শহীদ হয়েছেন। কিন্তু সেই যুদ্ধেও পাকিস্তানকে পরাজিত করেছে ভারত। সেই বীর সেনানীদের আজকের দিনে শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী।

ত্রিপুরায় মহিলার সংখ্যা কোন অংশে কম নয়। এখন প্রাতিষ্ঠানিক সন্তান জন্মানোর হার ত্রিপুরার বেড়েছে। যার ফলে সিসুর জন্মের সময় মায়দের মৃত্যুর হার কমেছে। দেশের মধ্যে শিশু মৃত্যুর হার কমায় কেন্দ্রীয় সরকার ৫ টি রাজ্যকে পুরস্কৃত করেছে। তার মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা। এই রাজ্যে শিশু মৃত্যুর হার ৬ শতাংশ কমেছে। আগে ছিল ২৭ শতাংশ। এখন তা হয়েছে ২১ শতাংশ।  সৈনিক পরিবার গুলির মধ্যেও মহিলাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে। চণ্ডীগড় এই ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সৈনিক শহর হিসাবে মানুষ চণ্ডীগড়কে জানেন। মহিলাদের সামনে এনে ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে এগিয়ে দেওয়ার কাজ করে ভারতীয় সেনা। ছেলে- মেয়েদের সমান চোখে দেখতে হবে। তবেই দেশ এগুবে। একজন মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব মহিলাদের স্বনির্ভর করার পাশাপাশি সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তার প্রসস্ত করে দেওয়া। সেই দিশাতে কেন্দ্র ও রাজ্য কাজ করছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

দেশ থেকে তিন তালাকা প্রথা বন্ধ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কোন ভোট ব্যাঙ্কের প্রতি না ছুটে মহিলাদের জন্য একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করে তা বাস্তবায়িত করে দেখিয়েছেন। সমাজের মধ্যে সদর্থক মানসিকতা তৈরি হলে দেশ ও রাজ্য এগিয়ে যায়। নাকারাত্মক মানসিকতা মানুষকে ধবংস করে দেয়। সেই পথে না যাওয়ার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী প্রমান করে দেখিয়েছে অন্তিম ব্যক্তিও দেশ চালাতে পারে।  এই মশালের ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। এই স্মৃতি একটা নতুন দেশের জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তি যোদ্ধাদের দিশা দেখিয়েছে ভারতীয় সেনা। তবেই সেই দেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। সেই জুদ্ধে ত্রিপুরা থেকেও অনেকে মুক্তি যোদ্ধা হিসাবে কাজ করেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, ৫৭ মাউন্টেইন আর্টিলারি ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার নিলেশ চৌধুরী, আই জি বি এস এফ- সুশান্ত কুমার নাথ সহ অন্যান্যরা। পরে একটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন অতিথিরা। সম্মানিত করা হয় মুক্তি জুদ্ধের সময় যারা সহায়তা করেছেন এবং শহীদ বীর পরিবারের সদস্যদের। মুখ্যমন্ত্রী জানান  মরণোত্তর পরম বীর চক্র ল্যান্স নায়েক এলবার্ট এক্কা পার্কের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। এই পার্কে ইতিহাস জানানোর পাশাপাশি লাইট এন্ড সাউন্ডের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী ৯ নভেম্বর পর্যন্ত এই মশাল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যাবে। ৫ টি রাজ্যের মাটি সংগ্রহ করে শেষে দিল্লি যাবে মশালটি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য