স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৭ জুলাই : বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারকে আবারো কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। বুধবার ভানু স্মৃতি ভবনে ত্রিপুরা রাজ্য হকার্স ইউনিয়নের চতুর্থ রাজ্য সম্মেলন থেকে বিরোধী দলনেতা বললেন এই সরকারের প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস রাখা বৃথা। স্বাধীনতার আন্দোলন দমন করার জন্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ যে আক্রমণ, নির্যাতন ও ষড়যন্ত্র করেছে তার সমর্থন করেছে আর এস এস। ফলে স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসকে বিজেপি নতুন করে দেখবার চেষ্টা করছে, সংবিধান পাল্টে যাওয়ার চেষ্টা করছে শোষকদের স্বার্থে।
স্বাধীনতার পর এমন পরিস্থিতি দেশে কখনো আসেনি। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন, আর সেই অবস্থা থেকে এখনকার অবস্থা তার চেয়েও বেশি খারাপ। এবং যে আক্রমণ গুলি সরকার নামিয়ে আনছে, তা বিজেপির শক্তি নয়। জনগণ সরকারটার উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। জনগণ বুঝে গেছেন বিজেপি বক্তৃতা ভালো করতে পারে। মিথ্যা কথা সাজিয়ে গুছিয়ে ভালো বলতে পারেন। আর কোটি কোটি টাকা খরচ করে পত্রিকায় টিভিতে বিজ্ঞাপন দিতে পারে। আসলে মানুষের জীবনে সমস্যা তারা সমাধান করছে না এবং করবেও না। আর এর থেকে বেশি তাদের কাছে আশা করলে ভুল করা হবে। কারণ বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রাস্তার ঘাট, জল, বিদ্যুৎ, রেগা কাজ সহ কোটি কোটি টাকার কাজ হতো। কিন্তু বর্তমানে রাস্তাঘাটের অবস্থা চচির, বিদ্যুৎ খুঁটি ভেঙে পড়ে আছে, একবার বিদ্যুৎ খেলে ঘন্টার পর ঘন্টা, সপ্তাহের পর সপ্তাহ এবং মাসের পর মাস আসে না। ফলে কৃষির কাজে ব্যাঘাত ঘটছে, হাসপাতালে অপারেশন হয় না, ব্যাংকে গেলে টাকা তোলা যাচ্ছে না। আর দ্বিগুণ বিদ্যুৎ বিল দাবি করছে দপ্তর। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যায় না। মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে আছে। চাকরি নেই। গত ৫২, ৫৩ মাসে ৫ হাজারের চাকরি দিতে পারেনি সরকার। কিন্তু এর মধ্যে প্রায় ১৮ থেকে ২১ হাজার শূন্যপদ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে স্কুল গুলির অবস্থাও বেহাল। শিক্ষক স্বল্পতা শিক্ষা পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। এখন স্কুলের সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছে সরকার। পাঁচটি স্কুল থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটি স্কুল করা হচ্ছে। এই স্কুল বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া পরিকল্পনা। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে নানা কৌশলে টাকা নিচ্ছে। বামফন্ট সরকারের আমলে যা কলেজ স্কুল হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে একটি নতুন কলেজও হয় নি।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সার্বিক আক্রমণ নামই আনা হয়েছে। মানুষের রোজগার নেই, হকারদের দেওয়া হচ্ছে না কোন দোকান ঘর। আর এই সমস্যা গুলি নিয়ে রাজ্যে যেমন কথা বলা যাচ্ছে না, তেমনি রাজ্য সভা এবং লোকসভায় কথা বলা যাচ্ছে না। সরকারের কাছে পরামর্শ দিতে চাইলে তারা সংসদ থেকে বহিষ্কার করে দিচ্ছে সাংসদদের বলে তীব্র সমালোচনা করেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। আয়োজিত সম্মেলনে এদিন এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সি আই টি ইউ রাজ্য সভাপতি মানিক দে সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।