Saturday, December 13, 2025
বাড়িখেলাজুনিয়র কুস্তিতে বিশ্বসেরা হয়ে বাবার স্বপ্নপূরণ করলেন তপস্যা

জুনিয়র কুস্তিতে বিশ্বসেরা হয়ে বাবার স্বপ্নপূরণ করলেন তপস্যা

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২১ অগস্ট : অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চে বিশ্বসেরা হলেন হরিয়ানার তপস্যা গেহলট। বুধবার বুলগেরিয়ার সামাকভে ৫৭ কেজি বিভাগে জয়ী হয়ে বাবার স্বপ্নপূরণ করলেন তপস্যা। ছোটবেলা থেকেই প্রপিতামহ চৌধুরী হাজারি লালের দঙ্গল কাঁপানো গল্প শুনে বড় হয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা। তাঁর বাবা পরমেশ গেহলটেরও ইচ্ছা ছিল, তাঁর মেয়ে একদিন বিশ্বমঞ্চে কুস্তিতে দাপাবে। সেই তপস্যা বিশ্বসেরা হয়ে বাবার স্বপ্ন সফল করলেন। তপস্যার এই সাফল্য যেন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত কটাক্ষের জবাবও। সেই গল্পও শোনালেন পরমেশ।

হরিয়ানার ঝাজ্জরের খানপুর কালান গ্রামের তপস্যার এমন সাফল্যের পর পরমেশ জানান, ২০০৬ সালে, বিয়ের ১১ মাস পর তাঁর স্ত্রী কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। এরপর পরিবেশ আনন্দের ছিল না। বরং মেয়ে হওয়ার জন্য অনেক কথা শুনতে হয়েছিল তাঁদের। পরমেশের কথায়, “মেয়ে হওয়ায় অনেক কটূক্তি সহ্য করতে হয়েছিল। কিন্তু আমি জানতাম, মেয়ে হোক কিংবা ছেলে, দেশের নাম যে কেউই উজ্জ্বল করতে পারে। তপস্যা আজ বিশ্বজয়ী হয়ে সেই কথাই প্রমাণ করল।”

তিনি আরও বলেন, “আমার ঠাকুরদা হাজারি লাল খানপুর কালান গ্রামে বিখ্যাত কুস্তিগির ছিলেন। তিনি আমাদের কুস্তির বিভিন্ন প্যাঁচ শিখিয়েছিলেন। স্কুল গেমসে কুস্তিতে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ছিলাম আমি। কিন্তু চোট আমার কেরিয়ার শেষ করে দিয়েছিল। কিন্তু সব সময় মেয়েকে কুস্তিগির তৈরি করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ন’বছর আগে যখন তপস্যাকে কুস্তি শেখাতে নিয়ে যেতাম, তখন অনেকেই কটাক্ষ করত। তপস্যা বিশ্বসেরা হয়ে তাদের মুখের উপর জবাব দিয়েছে।”

তপস্যা সেমিফাইনালে জাপানের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সোওয়াকা উচিদার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন। যিনি ৪০টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ অপরাজিত রেকর্ড নিয়ে রিংয়ে নেমেছিলেন। ম্যাচের একেবারে শেষ সেকেন্ডে ৪-৩ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন তপস্যা। তুলনায় ফেলিসিটাস ডোমাজেভার বিরুদ্ধে ফাইনাল অনেক সহজ ছিল। ৫-২ ব্যবধানে জিতে টুর্নামেন্টে ভারতের জন্য প্রথম সোনার পদক এনে দেন তিনি।

পরমেশের সংযোজন, “দেশের হয়ে ভালো কিছু করার তাগিদই ওকে সাফল্য এনে দিয়েছে। এ ব্যাপারে কোচেরও অবদান রয়েছে। উনি বারবার বলতেন, মেয়েকে নিয়ে চিন্তা না করতে। তপস্যাকে তিনি নিজের মেয়ের মতোই স্নেহ করেন।” উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে স্থানীয় অ্যাকাডেমিতে কুস্তিতে ভর্তি‌ হয়েছিলেন তপস্যা। উন্নত পরিকাঠামো না থাকায় মেয়েকে সোনিপতের কুলবীর রানার আখড়ায় ভর্তি করেন। তারপর তো এখন বাকিটা ইতিহাস। এহেন তপস্যা অনূর্ধ্ব-২০ বিভাগে এশিয়া সেরাও হয়েছিলেন। এবার সিনিয়র স্তরে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করাই তাঁর লক্ষ্য।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য