Tuesday, January 14, 2025
বাড়িখেলা১৭ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন ঋদ্ধিমান

১৭ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন ঋদ্ধিমান

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৪ নভেম্বর: ভারতের হয়ে ৪০ টেস্ট খেলা ক্রিকেটার রোববার রাতে সামাজিক মাধ্যমে জানান তার বিদায়ের ঘোষণা।“ক্রিকেটে স্মরণীয় পথচলার পর, এই মৌসুমই হবে আমার শেষ। শুধু রাঞ্জি ট্রফিতে খেলে অবসরের আগে শেষবারের মতো বাংলার প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি সম্মানিত। এই মৌসুমটাকে মনে রাখার মতো করে তোলা যাক।”২০০৭ সালে বাংলার হয়েই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক তার। সময়ের পরিক্রমায় তিনি হয়ে ওঠেন বাংলার ক্রিকেটের মুখ। তবে ক্রিকেট অ্যাসোসেশিয়ন অব বেঙ্গলের (সিএবি) কর্তাদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হওয়ায় গত দুই মৌসুমে তিনি ত্রিপুরার হয়ে খেলার পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করেন ‘মেন্টর’ হিসেবে।

বাংলা থেকে বিদায়ের সময় সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে তার মনোমালিন্যের খবর এসেছিল সংবাদমাধ্যমে। তবে সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক ও সিএবির সাবেক সভাপতি সৌরভের সঙ্গে এই মৌসুম শুরুর আগে বৈঠকের পর নিজ রাজ্যে ফেরার ঘোষণা দেন ঋদ্ধিমান।রাঞ্জির চলতি মৌসুমে এখনও পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি বাংলার হয়ে। এখন ব্যস্ত আছেন চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে বেঙ্গালুরুতে কর্নাটকের হয়ে খেলার প্রস্তুতিতে।

বাংলার হয়ে রাঞ্জি ট্রফি জয়ের স্বপ্ন পূরণ করার শেষ সুযোগ তার এবার। ২০১৯-২০ মৌসুমে ফাইনালে উঠলেও সেবার তারা হেরে গিয়েছিলেন সৌরাষ্ট্রের কাছে।২০০৭ সালে কটকে আসামের বিপক্ষে রাঞ্জি ওয়ানডে ট্রফির ম্যাচ দিয়ে ঋদ্ধিমানের পেশাদার ক্যারিয়ারের শুরু। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পা রাখেন ওই বছরই ইডেন গার্ডেন্সের হায়দরাবাদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করেও টেস্ট দলে সুযোগ তিনি পাচ্ছিলেন না, কারণ একজন মাহেন্দ্র সিং ধোনি যে তখন ছিলেন!

তবু ২০১০ সালে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবেই তার টেস্ট অভিষেক হয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। পরে ধোনির চোটের কারণে ২০১২ ও ২০১৪ সালে আরও দুটি টেস্ট খেলার সুযোগ পান। টেস্ট দলে তিনি নিয়মিত হতে পারেন মূলত ধোনির অবসরের পর। কিপিংয়ে তাকে অবিসংবাদিতভাবেই ভারতের সেরা মনে করা হতো। কিছুদিন বিশ্বের সেরা টেস্ট কিপারও তাকে মনে করেছেন অনেকে। সঙ্গে ব্যাটের হাতও মন্দ ছিল না।পরে রিশাভ পান্তের উত্থানে আবার পিছিয়ে পড়েন তিনি। বেশ কিছুদিন অবশ্য দ্বিতীয় কিপার হিসেবে ছিলেন স্কোয়াডে। তবে সেই জায়গাও হারাতে হয় একসময়।

ভারতের হয়ে তাকে শেষবার দেখা গেছে ২০২১ সালের নভেম্বরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। ওই সিরিজেও দুই ম্যাচের একটিতে অপরাজিত ফিফটি ছিল তার। তবে ওই সিরিজের পর কোচ রাহুল দ্রাবিড় ও টিম ম্যানেজমেন্ট জানিয়ে দেয়, তারা এখন ঋদ্ধিমানকে ‘ধন্যবাদ’ জানিয়ে সামনে তাকাতে চান।

৪০ টেস্টে ২৯.৪১ গড়ে ১ হাজার ৫৩ রান করেছেন ঋদ্ধিমান। তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৬ সালে হায়দরাবাদ টেস্টে। পরের মাসে সেঞ্চুরি করেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রাঁচিতে। পরে আর একটি সেঞ্চুরি করতে পেরেছিলেন তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। তিন সেঞ্চুরির পাশে তার ফিফটি ছয়টি।টেস্টে ৯২টি ক্যাচ নিয়েছেন তিনি, স্টাম্পিং করেছেন ১২টি। ২০১০ থেকে ২০১৪ সময়ে ভারতের হয়ে ৯টি ওয়ানডেও তিনি খেলেছেন। তবে বলার মতো কিছু করতে পারেননি।প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এখনও পর্যন্ত ১৩৮ ম্যাচ খেলে সাত হাজারের বেশি রান করেছেন তিনি ১৪ সেঞ্চুরিতে ও ৪১.৭৪ গড়ে। বাংলার হয়ে ৫৪ ম্যাচে ৭ সেঞ্চুরিতে সাড়ে তিন হাজার রান করেছেন ৪৯.১২ গড়ে।

প্রিয় দলের হয়ে শেষ ঝলক দেখিয়েই থামবে তার প্রায় দেড় যুগের ভ্রমণ।আইপিএলের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত সব মৌসুমেই দেখা গেছে তাকে। ১৭০ ম্যাচ খেলে ২ হাজার ৯৩৪ রান করেছেন তিনি ১২৭.৫৪ স্ট্রাইক রেটে। ২০১৪ আইপিএলের ফাইনালে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে স্মরণীয় এক সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। তার ৫৫ বলে ১১৫ রানের ইনিংসের পরও অবশ্য হেরে গিয়েছিল পাঞ্জাব।পাঞ্জাবের পাশাপাশি কলকাতান নাইট রাইডার্স, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, চেন্নাই সুপার কিংস ও সবশেষ গুজরাট টাইটান্সে দেখা গেছে তাকে। ২০২২ আইপিএলে গুজরাটের শিরোপা জয়ে বড় অবদানো রেখেছিলেন তিনি ৩১৭ রান করে। সবশেষ মৌসুমটা অবশ্য ভালো কাটেনি তার।এবার বিদায়ের ঘোষণা দেওয়ায় পরিষ্কার, আইপিএলের নিলামে নাম দিচ্ছেন না তিনি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য