Friday, December 6, 2024
বাড়িখেলাপঞ্চমবার স্ট্রেস ফ্র্যাকচার, জটিল অস্ত্রোপচারের মুখোমুখি ক্যামেরন গ্রিন

পঞ্চমবার স্ট্রেস ফ্র্যাকচার, জটিল অস্ত্রোপচারের মুখোমুখি ক্যামেরন গ্রিন

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৪ অক্টোবর: গত ২৪ সেপ্টেম্বর চেস্টার-লি-স্ট্রিটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে চোটে পড়েন গ্রিন। তার পুরোনো স্ট্রেস ফ্র্যাকচার ফিরে আসে। ক্যারিয়ারের এই নিয়ে পঞ্চমবার স্ট্রেস ফ্র্যাকচার হলো তার। আগের চারবারই ছিল ২০১৯ সালের আগে, তখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেক হয়নি।২০২০ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেকের পর তার এই চোটকে সামলে রাখতে পেরেছিলেন মেডিকেল স্টাফরা। এখন হুট করে এই চোট ফিরে আসায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার মেডিকেল স্টাফরা হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছে ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো। দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে জটিল এক অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পিঠের নিচের ওই অংশকে স্থিতিশীল করতে ও পরবর্তীতে সমস্যা আর ফিরে আসবে না, এই আশায় সেখানে স্ক্রু ও টাইটানিয়ামের তার মিশ্রিত করে স্থাপন করা হবে। একই পথ বেছে নিয়েছিলেন আগে অস্ট্রেলিয়ান পেসার জেমস প্যাটিনসন, জেসন বেহরেনডর্ফ, বেন ডোয়ার্শিস, নিউ জিল্যান্ডের গতি তারকা শেন বন্ড ও পেসার ম্যাট হেনরি।অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বেহরেনডর্ফের সঙ্গে কথা বলেছেন গ্রিন। বাঁহাতি এই পেসারের ক্ষেত্রে এই অস্ত্রোপচার ছিল খুবই সফল।ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, গত প্রায় দুই দশকে নিউ জিল্যান্ড-ভিত্তিক শল্যবিদ গ্রাহেম ইংলিস ও রোয়ান স্কাউটেন মিলে এই ধরনের অস্ত্রোপচার করেছেন ২৬ রোগীকে। এর মধ্যে ২৪ জনের ক্ষেত্রে এটি ছিল সফল। দীর্ঘদেহী কিউই পেসার কাইল জেমিসনের ক্ষেত্রে এটি ততটা কার্যকর হয়নি এখনও। তবে আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে জেমিসন মাঠে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের কোচ গ্যারি স্টেড। এবার তিনি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এই অস্ত্রোপচারের পর সেরে ওঠা নির্ভর করছে কার শরীর কতটা সাড়া দেয়, এর ওপর। সাধারণত সেরে উঠতে অন্তত ৯ মাস সময় লাগে। তবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বাস, গ্রিন মাঠে ফিরতে পারবেন ৬ মাসে।ডোয়ার্শিস এই অস্ত্রোপচারের সাত মাস পর ফিরেছিলেন গ্রেড ক্রিকেটে, ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরেছিলেন ১০ মাসের মধ্যে। তবে ওই অস্ত্রোপচারের পর এই কয়েক বছরে কেবল ৯টি বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ তিনি খেলেছেন। বেহরেনডর্ফ এই অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন ২০১৯ সালের অক্টোবরে, মাঠে ফিরেছিলেন পরের বছরের ডিসেম্বরে। ফেরার পর আর বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেট তিনি খেলেননি। তার সমস্যা আর ফিরে আসেনি।

প্যাটিনসন অস্ত্রোপচারের পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফিরেছিলেন এক বছর পর। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট খেলেছেন পরে। তবে নানা চোটের কারণে তার সম্ভাবনাগুলো পূর্ণতা পায়নি। অবসর নিতে বাধ্য হন তিনি। ম্যাট হেনরির এই অস্ত্রোপচার হয়েছিল সেই ২০১২ সালে কেবল ২০ বছর বয়সে। এর বছর দুয়েক পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বেশ সফল ক্যারিয়ার তার। সম্প্রতি এই ৩২ বছর বয়সে টেস্টেও দুর্দান্ত বোলিং করছেন।গ্রিনের সেরে উঠতে ছয় মাস লাগলে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ, শ্রীলঙ্কা সফর ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিশ্চিতভাবেই খেলতে পারবেন না ২৫ বছর বয়সী অলরাউন্ডার।

প্রত্যাশামতো সেরে উঠলে আগামী জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল (যদি অস্ট্রেলিয়া উঠতে পারে) কিংবা জুন-জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তাকে দেখা যেতে পারে। তবে তখন ফিরতে পারলেও তা শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে নাকি বোলিংও করতে পারবেন, সেটা সময়ই বলবে।স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের পুরোনো সমস্যার কারণেই নিয়মিত পরীক্ষা করিয়ে থাকেন গ্রিন। অগাস্টে এরকম একটি পরীক্ষায় কোনো সমস্যা তার ধরা পড়েনি। যুক্তরাজ্য সফরে তাই পুরোদমেই বোলিং করেন। খুব বেশি নয়, পাঁচ টি-টোয়েন্টি ও দুই ওয়ানডে মিলিয়ে ২১.২ ওভার বোলিং করেন তিনি। চেস্টার-লি-স্ট্রিটের ওয়ানডেতে কৌশলের অংশ হিসেবেই একের পর এক শর্ট বল করতে দেখা যায় তাকে। সেই ম্যাচেই ফিরে আসে তার পুরোনো চোট।

এই চোট ফিরে আসতে পারে, এরকম কোনো আভাস মেডিকেল স্টাফরা পাননি। তাকে নিয়ে তাই তেমন সতর্কতাও ছিল না। মিচেল মার্শের বোলিং নিয়ে যেমন সাবধানতা ছিল। গোটা সফরে কেবল চার ওভার বোলিং করেন মার্শ, সেটিও গ্রিন ছিটকে পড়ার পর।কিন্তু গ্রিনের ক্ষেত্রে কোনো ইঙ্গিত পাননি চিকিৎসকরা। এই বছর তার বোলিং ওয়ার্কলোড খুব বেশি ছিল না। ২০২১ ও ২০২২ সালে ২৩০ ওভারের বেশি বোলিং করেছিলেন তিনি, গত বছর করেছিলেন ১৯০ ওভার। এই বছর সেখানে চোটে পড়ার আগে বোলিং করেন কেবল ১২৪.৩ ওভার। তার পরও হানা দিল পুরোনো আততায়ী।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য