Thursday, November 21, 2024
বাড়িখেলালারা-টেন্ডুলকারের চেয়েও ‘বেশি প্রতিভাবান’ ছিলেন যে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার

লারা-টেন্ডুলকারের চেয়েও ‘বেশি প্রতিভাবান’ ছিলেন যে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৬ জুলাই: চমকে উঠছেন নিশ্চয়ই! দারুণ স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান ছিলেন হুপার। একটা অলস সৌন্দর্য ছিল তার ব্যাটিংয়ে। তাই বলে লারা-টেন্ডুলকারের চেয়েও প্রতিভাবান! ওই সময়ে তো প্রজন্মের সেরা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সেভাবে উচ্চারিত হয়নি তার নাম। টেন্ডুলকার ও লারার তুলনায় সাবেক এই অলরাউন্ডারের রেকর্ডও বেশ সাদামাটা। কাজেই তাকে বেশি প্রতিভাবান বলাটা বিস্ময়করই। কিন্তু যদি বলা হয়, লারার নিজেরই মন্তব্য এটি!

প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা বই ‘লারা: দা ইংল্যান্ড ক্রনিকলস’-এ এমনটিই লিখেছেন লারা, “আমার দেখা সবচেয়ে সেরা ক্রিকেটারদের একজন অনায়াসেই কার্ল (হুপার)। আমি তো বলব, এমনকি টেন্ডুলকার ও আমি নিজেও তার প্রতিভার ধারেকাছে ছিলাম না।”১৯৮৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১০২ টেস্ট ও ২২৭ ওয়ানডে খেলেছেন হুপার। টেস্টে ১৩ সেঞ্চুরিতে তার রান ৫ হাজার ৭৬২। ব্যাটিং গড় ৩৬.৪৬। ওয়ানডেতে ৭ সেঞ্চুরি ও ৩৫.৩৪ গড়ে রান ৫ হাজার ৭৬১। অফ স্পিনে উইকেট শিকার করেছেন টেস্টে ১১৪টি, ওয়ানডেতে ১৯৩টি। ফিল্ডার হিসেবেও তিনি ছিলেন দারুণ, বিশেষ করে স্লিপে। টেস্টে ১১৫ ক্যাচ নিয়েছেন, ওয়ানডেতে ১২০টি।

হুপার যে তার প্রতিভার প্রতি সুবিচার করেননি, সেটিও বলছেন লারা। তার মতে, অধিনায়কত্বের ভারই কেবল হুপারের সেরাটা বের করে আনতে পেরেছে। “অধিনায়ক হিসেবে তার ক্যারিয়ারের সঙ্গে খেলোয়াড় হিসেবে তার ক্যারিয়ার আলাদা করুন। সংখ্যাগুলোর পার্থক্য বোঝা যাবে। অধিনায়ক হিসেবে তার গড় পঞ্চাশের কাছে, কারণ তিনি দায়িত্ব উপভোগ করতেন। এটা দুঃখজনক যে, কেবল অধিনায়ক হিসেবেই তিনি নিজের সম্ভাবনাকে পূর্ণতা দিতে পেরেছেন।”অধিনায়ক হিসেবে ২২ টেস্টে হুপারের ব্যাটিং গড় ৪৫.৯৭। বাকি ৮০ টেস্টে গড় ৩৩.৭৬।

১৯৯১ সালের লর্ডস টেস্টের উদাহরণ দিলেন লারা। সেই টেস্টে দারুণ এক সেঞ্চুরি করেছিলেন হুপার। লারা জানালেন, দলের অভিজ্ঞ ও গ্রেট ক্রিকেটাররাও মুগ্ধতাভরে সেই সময়ের তরুণ ব্যাটসম্যানের খেলা দেখতেন।“সেই লর্ডস টেস্টে যখন ফিরে তাকাই, হুপারের জাত আরও একবার বুঝতে পারি। কী দারুণ ক্রিকেটার! যতটা অনায়াসে তিনি ব্যাট করছিলেন, আমাদের চোয়াল ঝুলে গিয়েছিল। এমনকি সিনিয়র ক্রিকেটাররাও মুগ্ধ হয়েছিলেন। কার্ল ব্যাট করতে গেলে, তারা উপভোগ করতেন… ডেসমন্ড হেইন্স, ভিভ রিচার্ডস, গর্ডন গ্রিনিজ, তারা সবাই নিজের কাজ থামিয়ে কার্লের ব্যাটিং দেখতেন।”

“এত প্রতিভাবান ছিলেন তিনি, তবু নিজেও বুঝতে পারেননি, আসলে তিনি কতটা ভালো। লোকে জিজ্ঞেস করতে পারে, এত প্রতিভাবান হয়েও তিনি নিজের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি কেন। আসলে পরিষ্কার কারণ বলা কঠিন।”ভিভ রিচার্ডসের কাছ থেকে রূঢ় আচরণ পাওয়ার কথাও এই প্রসঙ্গে জানালেন লারা। তরুণদের মানসিকতা আরও পোক্ত করতে এবং তাদের ভালোর জন্যই কিংবদন্তি এই ব্যাটসম্যান কঠিন সব কথা শোনাতেন। টেস্টে ৪০০ রানের ইনিংস খেলা একমাত্র ব্যাটসম্যান লারা জানালেন, রিচার্ডসের কাছ থেকে দূরে থাকতে চাইতেন হুপার।

“প্রতি তিন সপ্তাহে একবার করে আমাক কাঁদিয়ে ছাড়তেন ভিভ। কার্লের ক্ষেত্রে সেটা ছিল প্রতি সপ্তাহে একবার। ভিভের কণ্ঠই এমন ভীতি জাগানিয়া যে, মানসিকভাবে যথেষ্ট শক্ত না হলে মনে আঘাত লাগতে পারে এবং পারফরম্যান্সে সেটির প্রভাব পড়ে।”“আমার ওপর এটার প্রভাব তেমন পড়েনি। আমার বরং এটা ভালোই লাগত। আমি প্রস্তুতই থাকতাম যে কটূ কথা শুনতে হবে এবং ব্যাক্তিগতভাবে শক্ত ছিলাম খুব। কিন্তু কার্ল? এটা সত্যি যে, কার্ল চেষ্টা করত ভিভের কাছ থেকে পালিয়ে বাঁচতে।”

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য