স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২ মে : স্রেফ গোলটাই পাননি জেডন স্যানচো। এছাড়া ম্যাচজুড়ে করতে বাকি রাখেননি আর কিছু। অসাধারণ পারফরম্যান্সে তিনি মাতিয়েছেন মাঠ। আরও একবার মেলে ধরেছেন তার প্রতিভার প্রমাণ। সাম্প্রতিক সময়ে তার এমন চেহারা ভুলে যেতে বসেছিলেন অনেকেই। এই পারফরম্যান্স তাই কিছুটা অবাকও করেছে অনেককে। তবে বিস্মিতদের তালিকায় নেই এদিন টেরজকি। বরুশিয়া ডর্টমুন্ড কোচ বললেন, স্যানচোর কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্সই প্রত্যাশিত।চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে বুধবার নিজেদের মাঠে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ১-০ গোলে হারায় পিএসজিকে। প্রথমার্ধে গোলটি করে নিকলাস ফুয়েলখুগ। তবে ম্যাচে ডর্টমুন্ডের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন নিঃসন্দেহে স্যানচো।উইংজুড়ে ওপর থেকে নিচে তার ছিল দাপুটে উপস্থিতি। দুর্দান্ত পায়ের কাজ দেখানোর পাশাপাশি দারুণ সব পাস দিয়েছেন তিনি। নিজের প্রতিভার জানান দিয়েছেন আরেকবার।
অথচ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন তিনি। এই ডর্টমুন্ড থেকেই ২০২১ সালে ৯ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার ট্রান্সফার ফিতে ইউনাইটেডে পাড়ি জমান এই উইঙ্গার। কিন্তু সেখানে থিতু হতে পারেননি ঠিকমতো। পারফরম্যান্সে ছিল ওঠানামা। পরে পরিস্থিতি তার জন্য আরও কঠিন হয়ে পড়ে কোচ এরিক টেন হাগের সঙ্গে সম্পর্কে অবনতি হওয়ায়।\ট্রেনিংয়ে স্যানচো যথেষ্ট ভালো করতে পারছেন না এবং ইউনাইটেডের পর্যায়ে নিজেকে আনতে পারছেন না বলে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন টেন হাগ। স্যানচো সেটির জবাব দেন সামাজিক মাধ্যমে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি হয়ে পড়ে প্রতিকূল। অবশেষে গত জানুয়ারিতে ধারে আবার ডর্টমুন্ডেই পাঠানো হয় তাকে।পুরোনো ক্লাবে ফিরেও পুরোনো চেহারা ফিরে পেতে সময় লাগছিল তার। তবে পিএসজির বিপক্ষে নিজের জাত চেনালেন ২৪ বছর বয়সী ইংলিশ তারকা।
তার এমন পারফরম্যান্সকে খুব স্বাভাবিকই বলছেন ডর্টমুন্ড কোচ টেরজিক। ইউনাইটেড কোচের অভিযোগ ছিল স্যানচোর ট্রেনিং নিয়ে, কিন্তু ডর্টমুন্ডের কোচ মুগ্ধ ট্রেনিংয়ের স্যানচোকে দেখেই।“তার পারফরম্যান্সে আমি একটুও অবাক নই। অনুশীলনে এই ধরনের মান সে তুলে ধরে প্রায়ই। ম্যাচে সবসময় তা বয়ে আনা সহজ নয় অবশ্যই, বিশেষ করে কেউ যখন লম্বা সময় ধরে ছন্দের জন্য ধুঁকতে থাকে।” “তবে আমরা জানি তার মান কেমন এবং আজকে সে তা দেখিয়েছে আবার। জেডনের কাছ থেকে এরকম একটি পারফরম্যান্সই আমাদের প্রয়োজন ছিল।”
স্যানচো নিজেও দারুণ খুশি নিজেকে ফিরে পেয়ে। ২০১৭ সালে ডর্টমুন্ডের দ্বিতীয় দল হয়ে মূল দলে অভিষেক তার। এই ক্লাবের হয়ে মাঠ রাঙিয়েই ইউরোপের বড় বড় ক্লাবের নজর কেড়েছেন। এখন প্রিয় আঙিনায় ফিরতে পারার স্বস্তি ও এই আবহ যে তাকে আবার জাগিয়ে তুলেছে, তা ফুটে উঠল তার কণ্ঠেই। “১৭ বছর বয়সে এই ক্লাবে এসেছি আমি এবং তারা আমাকে সুযোগ করে দিয়েছে পেশাদার ফুটবলে খেলার। আমি খুবই উচ্ছ্বসিত যে, ক্লাবের সব স্টাফ ও ফুটবলাররা আমাকে দারুণভাবে স্বাগত জানিয়েছে এখানে।”“আমি প্রতিটি ম্যাচ ধরে এগোতে চাই এবং আশা করি, এই ফর্ম ধরে রাখতে পারব।”ধারের পর্ব শেষ হলে আবার ইউনাইটেডে ফিরবেন নাকি থেকে যেতে চাইবেন এখানেই, তা নিয়ে অবশ্য এখনই ভাবছেন না বলে দাবি স্যানচোর। “সত্যিই জানি না (এখানেই থাকব কি না)… আপাতত আমি স্রেফ বর্তমানেই মনোযোগ দিতে চাই।”