Saturday, July 27, 2024
বাড়িখেলাস্মরণীয় জয়ের পর চেলসি কোচের জবাব, ‘আমি ভাঁড় নই’

স্মরণীয় জয়ের পর চেলসি কোচের জবাব, ‘আমি ভাঁড় নই’

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,৫ এপ্রিল: গত বছর চেলসির কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সুসময়ের দেখা খুব একটা পাননি পচেত্তিনো। তবে সামনে তাকিয়ে আশার আলো দেখার মতো এক জয় বৃহস্পতিবার পেয়েছে তার দল। অবিশ্বাস্য নাটকীয়তায় নিজেদের মাঠে তারা ৪-৩ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে। ম্যাচের শুরুটা দাপটেই করে পচেত্তিনোর দল। ২০ মিনিটের মধ্যে তারা দুই গোলে এগিয়ে যায় কনর গ্যালাগার ও কোল পালমারের সৌজন্যে। তবে প্রথমার্ধেই আলেহান্দ্রো গার্নাচো ও ব্রুনো ফের্নান্দেসের গোলে সমতায় ফেরে ইউনাইটেড।৬৭তম মিনিটে গার্নাচো আরেকটি গোল করে পিছিয়ে দেন চেলসিকে। ওই ৩-২ গোলেই জয়ের খুব কাছাকাছি ছিল ইউনাইটেড। কিন্তু চেলসি হাল ছাড়েনি। ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের দশম ও একাদশ মিনিটে গোল করেন পালমার। স্মরণীয় হ্যাটট্রিক করে দলকে এনে দেন অভাবনীয় এক জয়। গোটা দল, কোচিং স্টাফ আর গ্যালারির দর্শক, বাঁধনহারা উদযাপনে একাকার হয়ে যান সবাই। 

গত শনিবার এই মাঠেই ১০ জনের বার্নলির সঙ্গে ড্র করার পর দর্শকেরা দুয়ো দিয়েছিলেন পচেত্তিনোকে। মৌসুমজুড়ে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে তাকে আগেও। সমর্থকদের একটা অংশের ক্ষোভ ও অভিযোগ, কোচ হিসেবে মাঠে যথেষ্ট আবেগ বা ‘প্যাশন’ দেখান না পচেত্তিনো। ইউনাইটেডের বিপক্ষে জয়ের পর সেই প্রসঙ্গই তুলে ধরা হলো পচেত্তিনোর সামনে। চেলসি কোচ বেশ চটে গিয়েই পাল্টা তির ছুড়লেন। “টাচলাইন পাগলাটে হয়ে ফালতু সব কাজ করাকে ‘প্যাশন’ বলে না। আমি অমন নই। দল যখন মাঠে থাকে, যে ১১ জন খেলে, তাদের প্যাশন থাকা জরুরি মাঠে ছুটে বেড়ানো এবং বল কেড়ে নিয়ে গোল করার ক্ষেত্রে। কোচ হিসেবে আমার কাজ শান্ত থাকা, যতটা সম্ভব নিখুঁত থাকা এবং বিশ্লেষণ করা, যেন খেলার প্রতিটি দিক থেকে দলকে সহায়তা করতে পারি।”

“ম্যাচ শেষে অবশ্যই প্যাশন দেখানো যায়, যেমনটি আমি দেখিয়েছি। তবে এটা তো সার্কাস নয় যে টাচলাইনে একজন ভাঁড়ের প্রয়োজন হবে। আমাদের দলটি তরুণ কোনো দল নয়। কোচিং স্টাফ হিসেবে আমাদের তাই স্থির থাকা জরুরি। আমি কোনো ভাঁড় নই, আমি একজন কোচ। কেউ যদি ভাঁড় দেখতে চায়, গিয়ে কেনো ভাঁড় খুঁজে বের করতে পারে।” ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও এক পর্যায়ে হারের দুয়ারে পৌঁছে গিয়ে যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না পচেত্তিনোর। তবে দলের ওপর ভরসা ছিল তার। দলকেও তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন শেষ পর্যন্ত হাল না ছাড়তে।  “যেভাবে সবকিছু হচ্ছিল, আমার কাছে তা মনে হচ্ছিল অন্যায্য। আমাদের এটা প্রাপ্য নয়। ভালো লাগছিল না। মনে হচ্ছিল, ‘কেন আমরা ম্যাচটি হারছি!’ ফুটবলে এরকম হয়। আমরা তাই বিশ্বাস হারাইনি।” “ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলছিলাম যে, ‘এখনও মিনিট দুয়েক আছে।’ বিশ্বাস রেখেছি যে, এখনও জয়সূচক গোল করতে পারি। ওপরে থাকা দলগুলির সঙ্গে ব্যবধান কমাতে এই ম্যাচে জয়টা আবশ্যক ছিল আমাদের জন্য।”

কোচ প্রশংসায় ভাসালেন হ্যাটট্রিক নায়ক পালমারকেও। ম্যানচেস্টার সিটি থেকে এই মৌসুমেই চেলসিতে আসা ২১ বছর বয়সী ফুটবলারের শক্তির একটি দিক আলাদা করে তুলে ধরলেন তিনি। “তার একটি মৌলিক স্কিল হলো দারুণ মানসিকতা। চাপের সঙ্গে যেভাবে সে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। সে যেভাবে চাপ সামলায়, তা অসাধারণ।” এই জয়ের পরও পয়েন্ট টেবিলে বেশ নাজুক অবস্থায় আছে চেলসি। দলবদলের বাজালে অঢেল অর্থ খরচ করা ক্লাব ২৯ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে ১০ নম্বরে। তবে কোচের আশা, এই জয়ের পর ভাগ্য বদলের পথে যাত্রা করবে তার দল।“যেভাবে আমরা খেলা শেষ করেছি, খুব জরুরি ছিল তা। ফুটবলাদের সঙ্গে সমর্থকদের দারুণ এক সংযোগ তৈরি হয়েছে। আজকে যা হয়েছে, তা দারুণ এবং সমর্থকদের সঙ্গে ও দলের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপনে আমাদের জন্য এটা ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হওয়া উচিত।”

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য