স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৯ মার্চ: লা লিগায় নিজেদের মাঠে ১-০ গোলে জিতেছে শাভি এর্নান্দেসের দল। শুক্রবার রাতে ৭৩তম মিনিটে তিন পয়েন্ট এনে দেওয়া গোলটি করেছেন ইয়ামাল। শুরু থেকে রক্ষণে মনোযোগ দিয়ে প্রতি-আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলে মায়োর্কা। অনেক ফাঁকা জায়গা পেয়ে তাদের চেপে ধরে বার্সেলোনা। চতুর্থ মিনিটে রাফিনিয়ার একটি শট প্রতিহত হয় ডি-বক্সে। বেশির ভাগ সময় পায়ে বল রাখলেও মায়োর্কার ছয় জনের ডিফেন্স লাইনের সামনে সুযোগ তৈরি করতে ভুগছিল বার্সেলোনা। ডি-বক্সে ভীড়ের মধ্যে খুব ভালো ফাইনাল পাস দিতে পারছিলেন না কেউই। প্রথম ১৫ মিনিটে ৭২ শতাংশ সময় বল দখলে রাখলেও একবারের জন্যও গোলরক্ষককে ভাবাতে পারেননি রাফিনিয়া, জোয়াও ফেলিক্সরা। সেই সময় যখন এলো, তখন স্বাগতিকদের একরাশ হতাশায় ডোবালেন পেদ্রাগ রাইকোভিচ। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে গিনদোয়ানের পেনাল্টি শট ফিরিয়ে দিলেন মায়োর্কা গোলরক্ষক। বল পায়ে দ্রুত গতিতে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া রাফিনিয়াকে ডিফেন্ডার মানুয়েল কোপেতে লাথি দিলে পেনাল্টি পেয়েছিল বার্সেলোনা। শুরুতে অবশ্য গোল কিক দিয়েছিলেন রেফারি, পরে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে মনিটরে রিপ্লে দেখে স্পট কিকের বাঁশি বাজান তিনি। রবের্ত লেভানদোভস্কির অনুপস্থিতিতে শট নেন গিনদোয়ান। খুব একটা জোর ছিল না, নিচু ও দুর্বল শট ফেরাতে তেমন একটা অসুবিধা হয়নি সার্বিয়ান গোলরক্ষকের। ফিরতি বলে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ইয়ামাল। ২৯তম মিনিটে রাফিনিয়া ও জোয়াও কানসেলোর দুটি শট প্রতিহত হয় মায়োর্কার ডি-বক্সে। ছয় মিনিট পর কাইল লারিনের হেড অনায়াসে ফিরিয়ে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। পাল্টা আক্রমণে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফেলিক্সের শট বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে।
৩৮তম মিনিটে মানু মোর্লানেসের হেড ফিরিয়ে দেন টের স্টেগেন। চোট পাওয়া রাফিনিয়ার জায়গায় মাঠে নামা ফেরমিন লোপেসের থ্রু বলে গিনদোয়ান শট নেন একদম গোলরক্ষক বরাবর। ৪৫তম মিনিটে লোপেসের হেড দারুণ দক্ষতায় ক্রসবারের উপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন রাইকোভিচ। হতাশার প্রথমার্ধে বার্সেলোনার আটটি শট প্রতিহত হয় ডি-বক্সে। গোলের জন্য তাদের ৫ শটের চারটি ছিল লক্ষ্য। অন্যদিকে, ৩৫ শতাংশ সময় বলের দখল রাখা মায়োর্কার ৫ শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে। ৪৮তম মিনিটে বাঁদিক থেকে ফেলিক্সের শট একজনের পায়ে লেগে জালে জড়াতে যাচ্ছিল। চমৎকার রিফ্লেক্সে সেটি ঠেকিয়ে দেন মায়োর্কা গোলরক্ষক। এর আগে পরে ব্লকড হয় স্বাগতিকদের দুটি শট। ৫৭তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন ইয়ামাল। তার বুলেট গতির শট ফেরে ক্রসবার কাঁপিয়ে! তিন মিনিট পর ফের সুযোগ আসে গিনদোয়ানের সামনে। ডি-বক্সের মাথা থেকে তার দুর্বল শট সহজেই ঠেকান রাইকোভিচ।
৬২তম মিনিটে মাঠে আসেন লেভানদোভস্কি ও ভিতো হকে। বাড়ে বার্সেলোনার আক্রমণের গতি। ১১ মিনিট পর গোল পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে পায়ের কারিকুরিতে ভেতরে ঢুকে যান ইয়ামাল। সঙ্গে লেগে থাকা একজন ও সামনে দেয়াল হয়ে থাকা আরেকজনকে এড়িয়ে চমৎকার বাঁকানো শটে জাল খুঁজে নেন এই টিএনএজার। পিছিয়ে পড়ার পর রক্ষণ ছেড়ে আক্রমণে মনোযোগ দেয় মায়োর্কা। কিন্তু সেভাবে কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। প্রতি-আক্রমণ থেকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল বার্সেলোনার সামনে। কিন্তু লেভানদোভস্কি ও হকে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেননি। এই জয়ে দুই নম্বরে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। একই সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় নাপোলির মুখোমুখি হওয়ার আগে বাড়িয়ে নিয়েছে আত্মবিশ্বাস। শেষ ষোলোর ফিরতি লেগে আগামী বুধবার মাঠে নামবে তারা। প্রথম লেগ ড্র হয়েছিল ১-১ গোলে। ২৮ ম্যাচে ৬১ পয়েন্ট বার্সেলোনার। ২৭ ম্যাচে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগার চূড়ায় রেয়াল মাদ্রিদ। রেয়ালের সমান ম্যাচে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে জিরোনা।