স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩ জানুয়ারি: ইরানে আটক হওয়ার সময় সানচেসের বয়স ছিল ৪১ বছর। মঙ্গলবার দুপুরে মাদ্রিদের বিমানবন্দরে নামেন তিনি। সেখানে তার জন্য অপেক্ষায় ছিল পরিবারের সদস্যরা থেকে শুরু করে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার পর বিমানবন্দরে সানচেস সাংবাদিকদের বলেন, “আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। (সময়টা) খুব কঠিন ছিল, কিন্তু এখন আমি এখানে আছি। এই দেশে জন্মগ্রহণ করে আমরা কতটা ভাগ্যবান, সেটা আমরা বুঝতে পারি না।” ২০২২ সালের ১ অক্টোবর ইরাক-ইরান সীমান্তে নিজের একটি ছবি বন্ধুদের পাঠিয়ে সানচেস লিখেছিলেন, ‘ইরানে প্রবেশ’। স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষ পরে নিশ্চিত করে, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে তাকে আটক করেছে ইরান এবং তারা তার মুক্তির চেষ্টা করছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ইরানের নীতি পুলিশের নির্যাতনে নিহত হয় ২২ বছরের কুর্দি তরুণী মাশা আমিনি। বাধ্যতামূলক ইসলামি পোশাকবিধি অমান্য করায় তাকে আটক করা হয়েছিল। তার মৃত্যুতে ইরান জুড়ে নারী স্বাধীনতার পক্ষে এবং বাধ্যতামূলক হিজাবের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। ওই সময়েই আটক হন সানচেস। সেই সময়ে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, মাশা আমিনির কবরস্থান দেখতে যাওয়ার পর আটক করা হয় সানচেসকে। নিখোঁজ হওয়ার আগে সানচেস তার বিশাল যাত্রাপথের প্রতিটি ধাপ সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানাতেন। একজন সাবেক প্যারাট্রুপার ও রেয়াল মাদ্রিদ সমর্থক সানচেস তার যাত্রা শুরু করেছিলেন ২০২২ সালের জানুয়ারিতে। ইরানে আটক হওয়ার আগে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ হয়ে তিনি ইরাকে ভ্রমণ করেছিলেন।
নিখোঁজ হওয়ার আগে সামাজিক মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ছবি দিয়ে সানচেস লিখেছিলেন, “উত্তর ইরাকের শেষ গ্রাম, কাতারের আগে ইরানে পৌঁছানো থেকে মাঝে কেবল একটি পাহাড়।” শেষ পর্যন্ত ইরানে যেতে পারলেও কাতারে বিশ্বকাপ আর দেখা হয়নি তার। আটক হয়ে লম্বা সময় কাটাতে হয় কারাগারে। গত রোববার সানচেসের মুক্তির খবর প্রকাশ করে স্পেনে ইরান দূতাবাস সামাজিক মাধ্যমে লিখেছিল, “দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণে এবং ইরানের আইন মেনে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।” মাদ্রিদের বিমানবন্দরে ছেলের আগমনের অপেক্ষায় থাকার সময় সানচেসের মা সাংবাদিকদের বলেন, “দুঃস্বপ্ন অবশেষে শেষ হলো।”