স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,১ জুলাই: ২০১৬ সালে ধরা পড়ে তার এই রোগ। এতদিন পরে এই খবর জানানোর কারণও তিনি ব্যাখ্যা করলেন নিউজকর্পকে।“নিউরোসার্জনের কাছে যাওয়ার পর তিনি সরাসরিই বললেন, ‘আমি দুঃখিত যে আপনাকে এটা বলতে হচ্ছে, আপনার পারকিনসন’স হয়েছে। যেভাবে আপনি এখানে হেঁটে এলেন, শরীরের পাশে আপনার হাত স্রেফ ঝুলেছিল, দুলছিল না।’ সে এমনিতেই বলতে পারছিল।”“আমি নিজের পরিসরে থাকতে পছন্দ করি এবং চাই না, লোকে আমার এসব শুনে দুঃখ অনুভব করুক। লোকে এটা খেয়াল করেছে কি না, জানি না। কবে জানতাম, একটি দিন আসবেই, যখন লোকে খেয়াল করবে।”অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৫৬ টেস্ট খেলেছেন বোর্ডার, দেশকে নেতৃত্বে দিয়েছেন রেকর্ড ৯৩ টেস্টে। একসময় টানা ১৫৩ টেস্ট খেলার বিশ্বরেকর্ডও ছিল তার, যা পরে ভেঙে দিয়েছেন অ্যালেস্টার কুক। আশির দশকে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে সঙ্কট সময়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আবার শীর্ষে তুলে নেওয়ার মূল কৃতিত্ব দেওয়া হয় তাকে। তার নেতৃত্বেই অস্ট্রেলিয়া প্রথম বিশ্বকাপ জয় করে ১৯৮৭ সালে।
টেস্ট ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি স্পর্শ করেন ১১ হাজার রান। টেস্টে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড অনেক দিন ছিল তারই। ২৭৩ ওয়ানডেতে রান করেছেন সাড়ে ৬ হাজারের বেশি।তাকে ও ভারতীয় কিংবদিন্ত সুনিল গাভাস্কারকে সম্মান জানাতেই অস্ট্রেলিয়া-ভারতের টেস্ট লড়াইকে নামকরণ করা হয়েছে ‘বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি।’খেলা ছাড়ার পর নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেছেন বোর্ডার। ধারাভাষ্য দিয়েছেন নিয়মিতই। পারকিনসন’স হওয়ার পর এই সময়টাতেও ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করে গেছেন।এখনও তিনি অনেক ভালো আছেন বলেই জানালেন। তবে জীবনের ইনিংস খুব বেশি দীর্ঘ হবে না বলেও মেনে নিয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্টে ২৭টি ও ওয়ানডেতে ৩টি সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান জীবনের ইনিংসে সেঞ্চুরির আশা করেন না কোনোভাবেই।
“আমার নিজের কাছে মনে হয়, অনেকের চেয়েই আমি ভালো আছি। এই মুহূর্তে আমার কোনো ভয় নেই নিকট ভবিষ্যৎ নিয়ে। আমার বয়স ৬৮। যদি ৮০ পর্যন্ত যেতে পারি, তা হবে অলৌকিক কিছু। আমার চিকিৎসক বন্ধু আছে একজন, সেও এটা বলে। তার মতে, আমি ৮০ স্পর্শ করতে পারলে তা হবে অলৌকিক কিছু।”“কোনোভাবেই আরেকটি সেঞ্চুরি আমার হবে না, নিশ্চিতভাবেই হবে না। আমি আস্তে আস্তে ঢলে পড়ব অন্তিমে।”বোর্ডারের এই রোগের খবর স্পর্শ করেছে ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ খেলতে থাকা অস্ট্রেলিয়া দলকেও। দলের প্রতিনিধি হয়ে এই কিংবদন্তিকে শুভ কামনা জানালেন মিচেল স্টার্ক।“অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের গ্রেটদের একজন ও বিশ্ব ক্রিকেটের এমন প্রতিথযশা একজনের এই খবর পেয়ে আমাদের খারাপ লাগছে। এবি (বোর্ডার) ও তার পরিবারের প্রতি আমাদের শুভ কামনা রইল।”