Sunday, January 26, 2025
বাড়িখেলাস্বপ্নযাত্রার পথে নেপালের ‘মাত্রই শুরু’

স্বপ্নযাত্রার পথে নেপালের ‘মাত্রই শুরু’

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,,৩ মে: সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে মঙ্গলবার এসিসি মেন’স প্রিমিয়ার কাপের শিরোপা জিতে এবারের এশিয়া কাপে জায়গা করে নেয় নেপাল। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে তারা খেলবে।২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ তাদের হয়েছিল বটে। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে এত বড় মঞ্চে তাদের পদচারণা পড়বে প্রথমবার। ৫১টি ওয়ানডে খেললেও এই সংস্করণে নেপাল এখনও পর্যন্ত টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের সঙ্গে খেলার সুযোগ পায়নি।গত মার্চ মাসেই আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড ডিভিশন ২-তে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স দেখিয়ে এবারের বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে জায়গা করে নেয় নেপাল। বাজে সময়ের চক্রে পড়ে এক পর্যায়ে সম্ভাব্য ১২ ম্যাচের মধ্যে ১১টিতেই জয়ের প্রয়োজন ছিল তাদের। অসাধারণ প্রত্যাবর্তনের গল্প রচনা করে তারা সত্যিই ১১টি জিতে নিয়ে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।সেই সাফল্যের রেশ থাকতে থাকতেই ধরা দিল এসিসি প্রিমিয়ার কাপের অপরাজিত শিরোপা। এশিয়া কাপে ‘এ’ গ্রুপে তারা খেলবে দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে।প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তখন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, বাবর আজমদের পাশাপাশিই উচ্চারিত হবে রোহিত কুমার পাউড়েলের নাম। কেমন লাগবে তখন? এই প্রশ্নে রোহিত পাউড়েলের গৌরবময় ছোট্ট উত্তর, “শোনাচ্ছে তো দারুণ!”তবে তার দল যে স্রেফ এতটুকুতেই সন্তুষ্ট নয়, সেটিও স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন নেপাল অধিনায়ক।“দল হিসেবে এটি মাত্রই আমাদের শুরু। স্রেফ পথচলার শুরু হলো। আমার বিশ্বাস, আরও অনেক সাফল্য আমাদের ধরা দেবে।”

 “আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি যে, অসাধারণ একটি দল আছে আমার।”গত ফেব্রুয়ারিতে মন্টি দেসাই প্রধান কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নেপালের ভাগ্য বদলের শুরু। ভারতের সাবেক এই ক্রিকেটার কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন অন্ধ্য প্রদেশ দল দিয়ে। পরে আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কানাডা দলে কাজ করেন নানা ভূমিকায়। ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব নেন। এছাড়াও আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালস, গুজরাট টাইটান্সে বিভিন্ন ভূমিকায় কাজ করেছেন। এরপর এবার হাল ধরেন নেপালের। ধুঁকতে থাকা দল রাতারাতি বদলে যায় তার কোচিংয়ে।নেপাল অধিনায়ক রোহিতও প্রাপ্য কৃতিত্ব দিলেন কোচকে। ফাইনালে নেপালের বোলাররা স্রেফ ১১৭ রানেই আটকে ফেলে আমিরাতকে। তবে ব্যাটিংয়ে নেমে নেপাল ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ২২ রানে। কিন্তু তিন নম্বরে প্রমোশন পেয়ে ৬ ছক্কায় ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জেতান গুলশান ঝা।সাধারণত সাত-আট নম্বরে ব্যাট করেন গুলশান। আগের ম্যাচে ফিফটি করেছিলেন সাতে নেমে। তাকে ব্যাটিং অর্ডারে তাকে ওপরের তোলার সিদ্ধান্ত কোচেরই ছিল, জানালেন রোহিত।

“অনেক বড় একটি সিদ্ধান্ত ছিল এটি এবং এই কৃতিত্ব মন্টির। আমাদের জন্য তিনি দারুণ এক রোল মডেল এবং আমরা প্রতিনিয়ত তার কাছ থেকে শিখছি। গুলশান অসাধারণ ইনিংস খেলেছে, তার ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসগুলোর একটি।”নেপালের এই সাফল্যযাত্রার সঙ্গী ছিলেন দেশের ক্রিকেট পাগল জনতা। নেপালের মানুষের ক্রিকেট উন্মাদনা এর মধ্যেই নজর কেড়েছে ক্রিকেট বিশ্বে। এই টুর্নামেন্টে ও এবারের ফাইনালেও তা ফুটে উঠেছে দারুণভাবে। প্রতি ম্যাচেই ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠের গ্যালারি ছিল ঠাসা। ফাইনালের প্রথম দিনে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে মাঠ ছেড়ে যাননি তারা। হাজার হাজার দর্শকের ছাতা মাথায় অপেক্ষায় থাকার সেসব ছবি ছড়িয়ে পড়ে ক্রিকেট বিশ্বময়। রাজধানী কাঠমাণ্ডুর বাইরে থেকে, অনেক দূর থেকেও খেলা দেখতে আসেন অনেকে। ফাইনাল ম্যাচ রিজার্ভ ডেতে গড়ানোর পরও তারা থেকে যান। পরদিনও গ্যালারি ছিল টইটম্বুর।নেপাল অধিনায়ক আলাদা করেই কৃতজ্ঞতা জানালেন সেই ক্রিকেট পাগল মানুষদের।“সবচেয়ে বড় ধন্যবাদ প্রাপ্য সমর্থকদের। এত লম্বা সময় ধরে তারা অপেক্ষা করেছে। গতকালকে (প্রথম দিনে) বৃষ্টির মধ্যেও তারা মাঠ ছেড়ে যাননি, আজকেও আবার এসেছেন। আমাদের গোটা দল তাদের ভালোবাসায় মুগ্ধ ও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।”

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য