স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১২ ডিসেম্বর: ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে হার যেন মেনেই নিতে পারছেন না নেইমার। এতো কাছে গিয়েও জিততে না পারাটা প্রতিনিয়ত পোড়াচ্ছে ব্রাজিলিয়ান তারকাকে। তবে করার তো কিছুই নেই, ভালো করেই জানেন তিনি। তাই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার ক্ষত নিয়েই এগিয়ে যেতে চান সামনের দিকে। সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে নিয়ে এবার স্বপ্ন দেখছিলেন সমর্থকরা। ষষ্ঠ শিরোপা জিতে রেকর্ডটি আরও সমৃদ্ধ করবেন নেইমার-ভিনিসিউসরা, আশায় ছিলেন অনেকেই। টুর্নামেন্টের ফেভারিট দলগুলোর একটিও ছিল তারা। কাতার আসর ব্রাজিলের শুরু হয় প্রত্যাশিত জয় দিয়েই। দারুণ ফুটবল খেলে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ফেলে তারা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বেঞ্চের পরীক্ষা করতে গিয়ে ক্যামেরুনের বিপক্ষে অবশ্য হারতে হয় তাদের। তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি ব্রাজিল। নকআউট পর্বের প্রথম ধাপে ভয়ঙ্কর সুন্দর ফুটবল উপহার দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেয় দলটি ৪-১ গোলে। এতে তাদের নিয়ে প্রত্যাশার পালে লাগে জোর হাওয়া। কিন্তু সেই হাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারেনি লাতিন আমেরিকার দলটি। কোয়ার্টার-ফাইনালে হেরে যায় ক্রোয়েশিয়ার কাছে। টানা দ্বিতীয়বার ও গত পাঁচ আসরে চতুর্থবারের মতো শেষ আট থেকে বিদায় নেয় তারা।
ওই ম্যাচেও জয়ের খুব কাছেই ছিল ব্রাজিল। গোলশূন্য ৯০ মিনিটের পর ১০৬তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন নেইমার। অতিরিক্ত সময়ের পরের ১৫ মিনিট কাটিয়ে দিতে পারলেই সেমি-ফাইনালে ওঠে যেত তারা। কিন্তু বিধিবাম। ১১৭তম মিনিটে সমতা টানেন দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা ক্রোয়াট ফরোয়ার্ড ব্রুনো পেতকোভিচ। এরপর ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। যেখানে ৪-২ গোলে হারতে হয় সবশেষ ২০০২ সালে বিশ্বকাপ জেতা ব্রাজিলকে। ম্যাচের পর কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় ৩০ বছর বয়সী নেইমারকে। তখন বলেছিলেন, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু জানেন না তিনি। ইনস্টাগ্রামে রোববার লিখলেন, হারের কষ্ট নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার কথা। “ব্রাজিলের মাটিতে…এখনও পরাজয়টি অনেক বেশি কষ্ট দিচ্ছে, আমরা খুব, খুব কাছে ছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত বা ভাগ্যক্রমে আমি এখনও হারতে শিখিনি। পরাজয় আমাকে শক্তিশালী করে, কিন্তু আমাকে খুব বেশি আঘাতও করে এবং আমি এখনও এটিতে অভ্যস্ত নই।” “যাই হোক, আমাদের এগিয়ে যেতে হবে…জীবন আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। এমনকি যদি এটা কষ্ট দেয় এবং ক্ষতটি সারতে সময়ও নেয়, আমাদের এগিয়েই যেতে হবে।” খেলোয়াড়দের সঙ্গে ব্রাজিলিয়ানদের সমর্থকদেরও হৃদয় ভেঙেছে আরও একবার। তবে খেলোয়াড়দের চেষ্টা, তাড়না, আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি তারা, দেখে ভালো লাগছে নেইমারের। “আমি আবারও ব্রাজিলের মানুষদের ধন্যবাদ জানাতে চাই তাদের সমর্থন এবং ভালোবাসার জন্য। আমরা লড়াই করেছি, শেষ অবধি সেরাটা দিয়েছি, এসব কথা আপনাদের কাছ থেকে শুনলে আমাদের কষ্ট কিছুটা কমে।”