Sunday, July 13, 2025
বাড়িখেলাকে এই আর্জেন্টিনার ‘লম্বা রেসের ঘোড়া’

কে এই আর্জেন্টিনার ‘লম্বা রেসের ঘোড়া’

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা,২৮ নভেম্বর: আনহেল দি মারিয়া, লাওতারো মার্তিনেজ, পাওলো দিবালা, আনহেল কোরেয়া, লিয়ান্দ্রো পারেদেস—আর্জেন্টিনা দলে লিওনেল মেসির পর এ নামগুলোই আগে আসে। কিন্তু পরশু রাতে মেক্সিকোর বিপক্ষে তাঁদের কেউ নন, মেসির পর পাদপ্রদীপের আলোর নিচে অনেকটাই অচেনা এক নাম—এনজো ফার্নান্দেস।আর্জেন্টিনার ২–০ ব্যবধানের জয়ে ৬৪ মিনিটে প্রথম গোলটি করেছেন মেসি। অসাধারণ এক পাসে সেই গোলের মুভটি শুরু করেছিলেন ফার্নান্দেস। ৮৭ মিনিটে মেসির ছোট এক পাস থেকে বল পেয়ে ডান পায়ের অসাধারণ শটে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন বেনফিকার মিডফিল্ডার। এরপর থেকেই তাঁকে নিয়ে তুমুল আগ্রহ বিশ্বজোড়া ফুটবলপ্রেমীদের। এরপর থেকেই প্রশ্ন—কে এই ফার্নান্দেস!২০০১ সালে জন্ম ফার্নান্দেসের, বেড়ে ওঠা ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা তারকা মেসির শহরের কাছেই। মেসির জন্মভূমি রোসারিও থেকে বুয়েনস এইরেস প্রদেশের সেই মফস্‌সল শহরের দূরত্ব ২০ কিলোমিটারের মতো।

আমরা দুজন একই সঙ্গে আর্জেন্টিনা দলে খেলছি—কাতার বিশ্বকাপে পা রাখার আগপর্যন্ত এটাই ছিল ফার্নান্দেসের একমাত্র আনন্দ! বিশ্বকাপের দলে জায়গা পেয়ে বেনফিকার এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের আনন্দের সংজ্ঞা কিছুটা পাল্টেছে। তাঁর কথা, ‘মেসির সঙ্গে বিশ্বকাপ খেলছি, এটাই আমার গর্ব!’ আর এবার নতুন করে আনন্দের সংজ্ঞা লিখলেন ফার্নান্দেস—বিশ্বকাপে একটি গোল করার শৈশবের স্বপ্নটা যে পূরণ হয়েছে তাঁর।লুসাইল স্টেডিয়ামে মেক্সিকোকে হারানোর পর ফার্নান্দেস বলেছেন তাঁর স্বপ্ন পূরণ হওয়ার কথা, ‘আমি সব সময়ই এই জার্সি পরে খেলার স্বপ্ন দেখেছি। আজ আমার বিশ্বকাপে একটি গোল করার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।’ ২১ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারকে ধরা হয় আর্জেন্টিনার ফুটবলের ‘লম্বা রেসের ঘোড়া’। কেউ কেউ তো তাঁকে আর্জেন্টিনার ভবিষ্যতের তারকাও বলছেন।ফার্নান্দেসের বাবা রাউল ছিলেন উরুগুইয়ান কিংবদন্তি এনজো ফ্রান্সেসকোলির পাঁড় ভক্ত। তাঁর নামের সঙ্গে মিলিয়েই পাঁচ ছেলের একজনের নাম রাখেন এনজো ফার্নান্দেস। ছয় বছর বয়সে ফার্নান্দেসকে সান মার্তিনের ক্লাব লা রেকোভায় নাম লিখিয়ে দেন বাবা রাউল।

লা রেকোভায় ফুটবলের প্রাথমিক পাঠ শেষ করার পরের বছরই রিভার প্লেটে নাম লেখান। ১৩ বছরের অধ্যবসায় শেষে রিভার প্লেটের মূল দলে ফার্নান্দেস সুযোগ পান ২০১৯ সালে। সেখানে তিন বছর খেলার সময় ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর নজরে আসেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদসহ বেশ কয়েকটি ক্লাবই তাঁকে পাওয়ার দৌড়ে নেমেছিল। অবশেষে এ বছর তাঁকে দলে ভেড়াতে পারে বেনফিকা।২০২২ সালটা হয়তো সোনালি ফ্রেমেই বাঁধিয়ে রাখতে চাইবেন ফার্নান্দেস। এ বছর রিভার প্লেটের হয়ে ১৯টি ম্যাচ খেলে ৮ গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের ৬টি গোলে রেখেছেন অবদান। রিভার প্লেটে তাঁর এমন পারফরম্যান্স দেখেই হয়তো বেনফিকা কর্তৃপক্ষ ফার্নান্দেসের পিঠে চাপিয়ে দেয় গুরু এক ভার। দলটির সবচেয়ে বিখ্যাত ফুটবলার পর্তুগিজ কিংবদন্তি ইউসেবিওর ১৩ নম্বর জার্সি পরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে।ইউসেবিওর ১৩ নম্বর জার্সির মান ফার্নান্দেস ঠিকই রেখে যাচ্ছেন। বেনফিকার হয়ে ২৪ ম্যাচ খেলে ৩টি গোল করার পাশাপাশি ৫টি গোলে করেছেন সহায়তা। এই ৫ সহায়তার দুটি আবার চ্যাম্পিয়নস লিগে। গত সেপ্টেম্বরে ডাক পান লিওনেল স্কালোনির আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে। সেখান থেকে দুই মাসের মধ্যে বিশ্বকাপে!ফার্নান্দেসের এমন উত্থানে বিস্মিত নন জাতীয় দলে তাঁর অধিনায়ক মেসি। পরশু রাতের ম্যাচ শেষে মেসি বলেছেন, ‘এনজো আমাকে বিস্মিত করছে না। আমি ওকে চিনি। আমি ওকে প্রতিদিনই অনুশীলনে দেখি…এটা তার প্রাপ্য, সে অসাধারণ এক খেলোয়াড়। আমি তাকে নিয়ে খুশি।’

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!