স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা,২২ নভেম্বর: তার দেশ বৈশ্বিক ফুটবলের পরাশক্তিদের মধ্যে একটি। দুটি বিশ্বকাপ ট্রফি আলো ছড়াচ্ছে তাদের অর্জনের শোকেসে। কিন্তু আর্জেন্টিনার তো দুটি বিশ্বকাপ জয়ের গল্পে তৃপ্ত থাকার, থেমে যাবার সুযোগ নেই মোটেও। তাছাড়া বৈশ্বিক ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে তাদের সেরা হওয়ার গল্পতেও জমেছে ৩৬ বছরের ধুলো। এই পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে আর্জেন্টিনা ও মেসি উভয়ই বিশ্বকাপের জন্য ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত। কাতার বিশ্বকাপে সে ক্ষুধা মিটবে কিনা, সে তৃষ্ণা নিবারণ হবে কিনা, এর উত্তর আপাতত সময়ের হাতে তোলা থাকছে। যার শুরু মঙ্গলবার, লুসাইল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪ টায় সৌদি আরবের বিপক্ষের ম্যাচ দিয়ে। এরই মধ্যে কাতারের রাজধানী দোহায় বিশ্বকাপের ২২তম আসরের দামামা বেজেছে অনেক তর্ক-বিতর্কের স্রোত পেরিয়ে। ‘সি’ গ্রুপে আর্জেন্টিনার সঙ্গী সৌদি আরব, মেক্সিকো ও পোল্যান্ড। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা গ্রুপ পর্বে মোটামুটি পাচ্ছে মসৃণ পথ। কিন্তু এই সহজ পথে যাত্রা শুরুর আগের ক’দিনের অনুশীলনে আর্জেন্টিনা কোচ লিওলেন স্কলোনির কেন এত রাখঢাক, মেসিরই বা কেন এত লুকোচুরি খেলা? মেসি অবশ্য নিজেই সৌদি আরব ম্যাচের আগের দিন জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে জানালেন থাকার না কারণ। ফ্রেঞ্চ লিগে খেলার সময় চোট পেয়েছিলেন অ্যাকিলিস টেন্ডনে। শঙ্কার মেঘ জমানো ওই চোটের কারণে প্রস্তুতির সময় গণমাধ্যমের দৃষ্টি থেকে দূরে থাকার ব্যাখ্যা দিলেন। এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে খুব ভালো অনুভব করছি বলে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় থাকা সমর্থকদের আশ্বস্ত করলেন। প্রত্যাশার পালে দিলেন নতুন হাওয়া।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানের পাতায় ভালো আছে আর্জেন্টিনা; আকাশী-নীল জার্সিধারীদের হয়ে আলো ঝলমলে মেসিও। দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। সবশেষ পাঁচ ম্যাচে করেছেন ১১ গোল। আর্জেন্টিনার পালেও বইছে সুবাতাস। স্কালোনি নামের এক ‘অখ্যাত’ কোচের হাত ধরে টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত আলবিসেলেস্তারা। বিশ্বকাপের আঙিনায় তাদের চলমান খরাও কাকতালয়ীয়ভাবে ৩৬ বছরের! খরা কাটানোর তো এটাই মোক্ষম সুযোগ আর্জেন্টিনার। মাঝে যে সুযোগ একেবারে দরজায় কড়া নাড়েনি, তা নয়। সবশেষ সুযোগ পেয়েছিল ২০১৪ সালে, ব্রাজিল বিশ্বকাপে। কিন্তু মারিও গোটসের গোলে জার্মানির কাছে হেরে ভেঙেছিল স্বপ্ন। খরা যতই দীর্ঘ হোক, আর্জেন্টিনার জন্য তা কাটানোর সময় সামনে পড়ে আছে ঢের, মেসির সে সময় কোথায়?
শৈশবে রোসারিওর বাড়ির আঙিনায়, অলিতে-গলিতে বল পায়ে আলো ছড়াতে-ছড়াতে, বার্সেলোনার লা মেসাইয়ার সুবজে শৈল্পিক ফুটবলের ছবি আঁকতে-আঁকতে, ক্লাব ফুটবলের সিনিয়র পর্যায়ে সব শিরোপা স্বাদ নিতে-নিতে যে কেটে গেল ৩৫ বছর! একটু একটু করে যে তিনিও এখন পথের শেষে এসে পৌঁছেছেন। শুনতে পাচ্ছেন বিদায়ের রাগিনী। মেসি অবশ্য সম্ভাবনা-শঙ্কার দোলাচলের মধ্যেও বরাবরের মতো স্থির। সৌদি আরবের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলনে এটাই শেষ বিশ্বকাপ কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন ঝানু কুটনীতিকের মতো। ‘সম্ভবত শেষ’ বলে ঝুলিয়ে রেখেছেন ভবিষ্যতের জন্য, সেখানে নিরাশার উপস্থিতি যেমন, আশার সুরও আছেও তেমনি। ঠারেঠুরে ঠিকই বুঝিয়ে দিয়েছেন এতসব দোটানা নিয়েই প্রস্তুত তিনি। শিকারের আগে ক্ষুধার্ত সিংহ যেমন প্রস্তুত, শান্ত থাকে, ঠিক তেমন! হয়তো নিজেকে প্রমাণের প্রত্যয়ও আছে সেখানে। অনেকে বলেন-শ্রেষ্ঠত্বের প্রশ্ন মেসির প্রমাণের কিছু নেই। কিন্তু তিনি তো শৈশবের সেই কঠিন জীবন থেকে জানেন অমরত্মের মুকুট কেবল সর্বজয়ীদের। ১৬৫ ম্যাচে ৯১ গোল করে আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে থাকা, একটি মাত্র কোপা আমেরিকা ট্রফি জেতা যথেষ্ঠ নয়। ১৯৭৮ সালের দানিয়েল পাসারেলা, ১৯৮৬ সালের দিয়েগো মারাদোনার মতো বিশ্বকাপ জিতলে কেবল সর্বজয়ী হবেন তিনি।
স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা,২২ নভেম্বর: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায়ের পর নিকোলাস পুরান বলেছিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কত্ব ছাড়ার কোনো ভাবনা নেই তার। তবে টুর্নামেন্ট থেকে আগেভাগেই বাদ পড়ার মাস না পেরোতেই বদলে গেল এ কিপার-ব্যাটসম্যানের চিন্তা। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ২৭ বছর বয়সী পুরান। ওয়েস্ট ক্রিকেট বোর্ডের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে সোমবার রাতে জানান হয়েছে এ খবর। স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব থেকেই ছিটকে যায় দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা। দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স পর্যালোচনার জন্য ব্রায়ান লারা ও মিকি আর্থারকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তখনও অধিনায়কত্ব চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন পুরান। তবে এখন দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণায় তিনি জানিয়েছেন, নতুন কিছু ভাবার জন্য বোর্ডকে যথেষ্ট সময় দিতে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খেলোয়াড় হিসেবে দলে অবদান রেখে যেতে চান তিনি।
“বিশ্বকাপে ব্যাপক হতাশার পর আমি অধিনায়কত্ব নিয়ে অনেক ভেবেছি। অনেক গর্ব ও নিবেদন নিয়ে এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম এবং গত এক বছরে সর্বোচ্চটা দিয়েছি। এই বিশ্বকাপ আমাদের পরিচায়ক হওয়া উচিত নয়।” “আসন্ন যেকোনো পর্যালোচনায় আমি পুরোপুরি সম্পৃক্ত থাকব। যেহেতু (সাদা বলের ক্রিকেটে) দল হিসেবে আবার একত্রিত হওয়ার আগে অনেক সময় বাকি, তাই আমি ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পরবর্তী সিরিজসহ সামনের ম্যাচগুলোর প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় দিতে চাই।” চলতি বছরের মে মাসে কাইরন পোলার্ডের অবসরের পর পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে ক্যারিবিয়ানদের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব দেওয়া হয় পুরানকে। এর আগে অস্থায়ী দায়িত্বেও সাদা বলের ক্রিকেটে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। সবমিলিয়ে পুরানের অধিনায়কত্বে ১৭ ওয়ানডে খেলে স্রেফ চারটিতে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ২৩ ম্যাচে অধিনায়ক পুরানের জয় ৮টি। ব্যাটিংয়েও তার সাম্প্রতিক ফর্ম ভালো নয়। সবশেষ ১০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে স্রেফ ৯৪ রান করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পুরানের জায়গায় নতুন অধিনায়কের নাম এখনও ঘোষণা করেনি ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট বোর্ড। টি-টোয়েন্টিতে সহ-অধিনায়ক হিসেবে রয়েছেন রভম্যান পাওয়েল। ওয়ানডেতে এ দায়িত্ব পালন করেন শাই হোপ। ২০২৩ সালের মার্চে ফের সাদা বলে খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই নতুন অধিনায়ক ঠিক করার জন্য প্রচুর সময় রয়েছে তাদের হাতে।