স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, ৯ সেপ্টেম্বর।। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ১০১টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। ইংল্যান্ডের কোচের দায়িত্বে পালন করছেন গত সাড়ে তিন বছর ধরে। জো রুট খেলেছেন ১৫৮টি টেস্ট, অ্যাশেজের স্বাদ পেয়েছেন সাতবার। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় আগামী অ্যাশেজকে তাদের সবার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ মনে করেন ম্যাককালাম। সেই চ্যালেঞ্জ জয়ে ইংল্যান্ড কোচের বড় অস্ত্রের নাম জফ্রা আর্চার।
প্রায় সাড়ে চার বছর বাইরে থাকার পর গত জুলাইয়ে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ফেরেন আর্চার। দুই টেস্ট খেলে ৯ উইকেট নিয়ে দেখিয়ে দেন, তার স্কিলে মরচে পড়েনি। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অবশ্য তার প্রত্যাবর্তনটা হয়েছে গত বছরই। গত এক বছরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন মোটামুটি নিয়মিতই।
চোট কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর তার সেরাটা দেখা গেল রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডেতে। সাউথ্যাম্পটনে ৩৪২ রানের বিশ্বরেকর্ড ব্যবধানের জয়ে ১৮ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন। গতি, বাউন্স, স্কিল, সব মিলিয়ে ৩০ বছর বয়সী ফাস্ট বোলারের বোলিংয়ে দেখা যায় সেই পুরোনো বারুদ।
আর্চারের ওই বোলিং দেখেই ম্যাককালামের উচ্ছ্বাসে নতুন রঙয়ের ছোঁয়া লেগেছে। ম্যাচের পর আর্চারের প্রতি প্রত্যাশার কথা শোনালেন ইংল্যান্ড কোচ, সেখানেই ফুটে উঠল আগামী অ্যাশেজের গুরুত্ব তার কাছে কতটা। “অবিশ্বাস্য এক স্পেল ছিল এটি… একদম বক্স অফিস বোলিং। স্রেফ গতির ব্যাপার নয় এখানে, তার স্কিল, দুই দিকেই বল নেওয়ার সামর্থ্য এবং যে তীক্ষ্ণ বাউন্স সে আদায় করে নেয়, তা দিয়ে ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেওয়া। যে একদম যথাযথ এক ক্রিকেটার। এজন্যই আমরা অনেকটা সময় নিয়েছি তাকে নিয়ে, এটা নিশ্চিত করতে যেন আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সিরিজে তাকে পাওয়ার সবটুকু সম্ভাবনা থাকে।”
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুতেই ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ে বড় অবদান রাখেন আর্চার। তবে ক্রিকেট বিশ্বে সত্যিকারের তারকা হয়ে ওঠেন তিনি বিশ্বকাপের পরপরই অ্যাশেজ দিয়ে। অভিষেক সিরিজেই ভীতি জাগানিয়া আগুনে বোলিংয়ে সাড়া জাগান তিনি।
তবে ওই সিরিচে চার টেস্টে ২২ উইকেট নেওয়ার পর আর কোনো অ্যাশেজ খেলার সুযোগ এখনও পাননি তিনি। একের পর এক চোটের কারণে এই ছয় বছরে টেস্ট খেলেছেন আর মোটে ১১টি।
চোটপ্রবণতার কারণেই লম্বা সময় ধরে তাকে যত্ন নিয়ে অতি সতর্কতায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরিয়েছে ইংল্যান্ড। ফেরার পরও তাকে বেছে বেছে সাবধানতা অবলম্বন করে খেলানো হচ্ছে ম্যাচ। ম্যাককালাম জানালেন, অ্যাশেজের আগ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলতেই থাকবে তাদের।
“গত বেশি কিছুদিন ধরেই জফকে (আর্চার) নিয়ে ভালো পরিকল্পনায় এগিয়েছি আমরা এবং আমাদের পরিকল্পনার পুরস্কার সে দিয়েছে এই ম্যাচের মতো বোলিং দিয়ে। আমরা যখন অস্ট্রেলিয়ায় যাব, সে আমাদের জন্য হবে মহাগুরুত্বপূর্ণ এক ক্রিকেটার, আরও কয়েকজনের মতোই।” “এর মানে এমন নয় ওকে আমরা সযতনে মুড়িয়ে রাখব। সে কোন পথে এগোচ্ছে এবং কীভাবে তার সেরাটা বের করে নিতে পারি, সেই কাজ চলতেই থাকবে আমাদের।”
এই মাসের শেষ দিকে অ্যাশেজের দল ঘোষণা করবে ইংল্যান্ড। অ্যাশেজ শুরু আগামী ২২ নভেম্বর।

