স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৫ জুন : নির্ধারিত সূচি মেনে বুধবার ভারতীয় সময় অনুযায়ী ঠিক বেলা ১২টা ১ মিনিটে শুভাংশু শুক্ল-সহ চার নভশ্চরকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে স্পেস এক্সের মহাকাশযান ‘ড্রাগন’। আপাতত তাঁদের মহাকাশযান প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে প্রতি সেকেন্ডে ৭.৫ কিলোমিটার বেগে পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করছে। সেখান থেকেই পৃথিবীর উদ্দেশে প্রথম বার্তা দিলেন শুভাংশু। বললেন, দারুণ সফর!
বুধবার দুপুরে আমেরিকার ফ্লরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে চেপে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন শুভাংশুরা। সেখান থেকেই পৃথিবীকে বার্তা দেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন। উচ্ছ্বসিত গলায় বলেন, ‘‘সকল দেশবাসীকে নমস্কার। অসাধারণ সফর ছিল! ৪১ বছর পর ভারত আবার মহাকাশে পা রাখল। এই মুহূর্তে আমরা সেকেন্ডে ৭.৫ কিলোমিটার বেগে পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছি। আমার কাঁধে ভারতের তেরঙা পতাকা রয়েছে। এই পতাকাই আমাকে বলে দিচ্ছে যে আমি আপনাদের সঙ্গেই রয়েছি!’’ দেশবাসীদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি শুভাংশু আরও জানিয়েছেন, এই অভিযানই শেষ নয়, বরং এ এক নতুন শুরু! কারণ, এই অভিযানই ভবিষ্যতে ভারতের গগনযান অভিযানের ভিত্তিস্থাপন করবে। শুভাংশু বলেন, ‘‘আমি চাই আগামীর এই অভিযানে ভারতের সব মানুষ অন্তর থেকে শামিল হোন।’’
শুভাংশুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘শুভাংশু শুক্লই প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারী যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পা রাখবেন। তিনি নিজের কাঁধে ১৪০ কোটি ভারতীয়ের ইচ্ছা, আশা, আকাঙ্ক্ষার ভার বহন করছেন।’’
এর আগে ১৯৮৪ সালে রাশিয়ার মহাকাশযানে চেপে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন রাকেশ শর্মা। তার পর পেরিয়ে গিয়েছে দীর্ঘ চার দশক। এত বছরে আর কোনও ভারতীয় মহাকাশে যাননি। ৪১ বছর পর সেই খরা কাটল। শুভাংশুদের অভিযানের নাম ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’। অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন নাসার প্রাক্তন নভশ্চর তথা অ্যাক্সিয়ম স্পেসের মানব মহাকাশযানের ডিরেক্টর রেগি হুইটসন। এ ছাড়াও থাকছেন পোল্যান্ডের স্লায়োস উজ়নানস্কি-উইসনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু। ১৪ দিনের এই অভিযানের জন্য দীর্ঘ প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল চার নভশ্চরকে। যাতে মহাকাশে যাওয়ার আগে সংক্রমণজনিত কোনও রোগে অসুস্থ না পড়েন, সে জন্য গত এক মাস ধরে চার জনকেই থাকতে হয়েছিল নিভৃতবাসে (কোয়ারেন্টাইন)। আগামী ১৪ দিন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকবেন চার নভশ্চর। সেখানে অন্তত ৬০টি পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন তাঁরা।