স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৯ এপ্রিল : দেশে ফেরানো হচ্ছে ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অন্যতম চক্রী তাহাউর রানাকে। বুধবার গভীর রাত অথবা বৃহস্পতিবার সকালে ভারতে ফেরানো হবে তাঁকে। ইতিমধ্যেই আমেরিকায় পৌঁছে গিয়েছে এনআইএ-ও। কুখ্যাত জঙ্গির জন্য দিল্লি ও মুম্বইয়ের কয়েকটি জেলে প্রস্তুতি সেরে ফেলা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, প্রাথমিক ভাবে কয়েক সপ্তাহ রানাকে এনআইএ-র হেফাজতে রাখা হবে। এ বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা যাবতীয় ব্যবস্থা করে ফেলেছেন বলে খবর।
ভারতে প্রত্যর্পণের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সম্প্রতি আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন রানা। সেই আবেদন নাকচ করে দেয় আদালত। ৬৪ বছরের রানা অসুস্থতার অজুহাত দিয়ে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ভারতে প্রত্যর্পণের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন। সে দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের বেঞ্চে গত ৪ এপ্রিল রানার আবেদন বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সোমবারই জানানো হয়েছে, সেই আবেদন নাকচ হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, তার আগেও এক বার আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে নিম্ন আদালতের প্রত্যর্পণের নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়েছিলেন রানা। আবেদনপত্রে লিখেছিলেন, ‘‘আমি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এবং মুসলিম। তাই ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আমার উপর অত্যাচার চালাবেন বলে আশঙ্কা করছি।’’ গত ৭ মার্চ মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের নবম সার্কিটের বিচারপতি এলেনা কাজ়ান সেই আবেদন খারিজ করে দেন।
উল্লেখ্য, রানা আদতে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হলেও বর্তমানে কানাডার নাগরিক। এত দিন লস অ্যাঞ্জেলসের বন্দিশালায় আটক ছিলেন তিনি। অভিযোগ, পাক বংশোদ্ভূত আর এক সন্ত্রাসবাদী ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। হেডলির সঙ্গে মিলেই ২৬/১১-র মুম্বই হামলার বিষয়টি ছকেছিলেন রানা। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বার সঙ্গেও যোগ ছিল তাঁর। মুম্বই হামলার অন্যতম এই চক্রীকে দীর্ঘ দিন ধরে এ দেশে ফেরানোর দাবি তুলেছে নয়াদিল্লি। শেষমেশ চলতি বছরের শুরুতে রানার প্রত্যর্পণে সায় দেয় আমেরিকার একটি আদালত। এর পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে রানাকে ভারতে প্রত্যর্পণের বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্যতম শত্রু, যিনি ২০০৮ সালে মুম্বই হামলায় জড়িত, তাঁকে বিচারের সম্মুখীন হওয়ার জন্য ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।