স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২০ অক্টোবর : রাস্তা আটকানো নিয়ে মিজ়োরামের বিদ্যুৎমন্ত্রী এফ রডিংলিয়ানার সঙ্গে কাজিয়া হয়েছিল আসাম রাইফেলসের। ‘প্রতিশোধ নিতে’ মিজ়োরামে থাকা আসাম রাইফেলসের সব দফতর ও শিবিরে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিলেন তিনি।
এই ঘটনার কথা জানিয়ে আসাম রাইফেলস বিবৃতি ও ভিডিয়ো পাঠিয়ে দাবি করল, মন্ত্রীর দাবি সত্য নয়। তিনিই নিজে থেকে গাড়ি থামান এবং তাঁর সহকারীরা কর্তব্যরত জওয়ানদের সঙ্গে দুর্ব্যহহার করেন। এলাকা ছাড়ার সময়েই আসাম রাইফেলসকে শিক্ষা দেওয়ার হুমকি দিয়ে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। এ ভাবে ব্যক্তিগত ঝগড়ার প্রতিশোধ নিতে নিরাপত্তা বাহিনীর সব ঘাঁটি বিদ্যুৎহীন করে দেওয়ারঘটনা নজিরবিহীন।
রডিংলিয়ানার দাবি, তিনি চাম্ফাই থেকে ফেরার সময় আইজ়লের কাছে ৫৪ নম্বর জাতীয় সড়কে আসাম রাইফেলসের চেক পোস্টে তাঁকে আটকানো হয়। প্রথম ব্যারিকেড পার করার পরে ফের তিন জওয়ান তাঁদের পথ আটকান। বলেন, কমান্ডারের নির্দেশে তাঁরা রাস্তা আটকেছেন। মন্ত্রী পরিচয় দেওয়ার পরেও ছাড়া হয়নি। কর্তব্যরত অফিসার ও জওয়ানরা তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেনবলে অভিযোগ।
এই ঘটনা নিয়ে শুধু সরকারপক্ষ নয়, বিরোধীরা এবং মিজ়ো ছাত্র সংগঠনও আসাম রাইফেলসের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত। এমনকি প্রতিবাদপত্র পাঠানো হচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেও। কিন্তু আসাম রাইফেলস দাবি করেছে যে তারা আইজ়ল-সিলিং রোডে জোখাওসাং ঘাঁটি থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে একটি মোবাইল চেক পোস্ট বসিয়েছিল। বেসামরিক যানবাহনগুলি যেখানে তল্লাশি করা হচ্ছে সেখানে কনভয়টি নিজেই থামে এবং মন্ত্রীকে যেতে দেওয়া হলেও তিনি চেক পোস্ট সরানোর নির্দেশ দেন। ঘটনার কয়েকটি ভিডিয়ো পাঠিয়ে আসাম রাইফেলস দাবি করে, মন্ত্রীর গাড়ি রাস্তার মাঝে দাঁড় করিয়ে ওই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। ব্যক্তিগত সচিব গাড়ি থেকে নেমে কর্তব্যরত সৈন্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। অকথ্য গালি দেন এমনকি ‘গো ব্যাক টু ইন্ডিয়া’ বলেও মন্তব্য করেন। বিদ্যুৎমন্ত্রী কর্তব্যরত এক জওয়ানকে গাড়িতে উঠিয়ে পাশের গ্রামে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেন। কমান্ডারের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। মন্ত্রীর সচিব জওয়ানদের বডি ক্যামেরাও কেড়ে নেন। মন্ত্রী ও তাঁর দলবল আসাম রাইফেলসকে ‘এর ফল ভোগ করা’র হুমকি দিয়ে যাওয়ার অল্প পরেই বৃহস্পতিবার বেলা ২টোয় রাজ্যের সব আসাম রাইফেলস শিবির ও দফতরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ ফেরে রাতে।
আসাম রাইফেলস জানায়, মন্ত্রীর ব্যক্তিগত রোষের কারণে মায়ানমার সীমান্ত-সহ সব গুরুত্বপূ্র্ণ আসাম রাইফেলসের ঘাঁটি বিদ্যুৎহীন থাকা জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি আঘাত। মিজ়োরামের সীমান্ত, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও মাদক পাচার নিয়ন্ত্রণে এত বছরের অবদান রাখার পরে এমন ব্যবহার দেশের সবচেয়ে পুরনো আধাসেনার প্রাপ্য নয়।