স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৬ অক্টোবর: দাম বেড়েছে ওষুধ তৈরির কাঁচামালের। তাই অ্যাস্থমা, গ্লকোমা, থ্যালাসেমিয়া, যক্ষ্মা ও মানসিক অসুস্থতার ওষুধ-সহ আটটি অবশ্য প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম অন্তত ৫০ শতাংশ বা তারও বেশি বৃদ্ধিতে অনুমোদন দিল কেন্দ্র। ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিকাল প্রাইসিং অথরিটি বা এনপিপিএ-র তরফে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, বাজার থেকে এই ওষুধগুলি যাতে উধাও না হয়ে যায়, তাই এই সিদ্ধান্ত।
ওষুধ তৈরির কাঁচামালের দাম অত্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি নিয়মিত অনুরোধ জানাচ্ছিল দাম বাড়ানোর। পাশাপাশি, বিনিময় মূ্ল্যের বৃদ্ধি (এক্সচেঞ্জ রেট), ওষুধ তৈরির খরচ বৃদ্ধি (প্রোডাকশন কস্ট)-সহ বহু কারণও দেখানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এনপিপিএ-র দাবি, খরচ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় ওষুধগুলি তৈরিতে সমস্যা হচ্ছিল। ওই আটটি ওষুধ যাতে বাজারে সব সময় পাওয়া যায়, সেই বৃহত্তর স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই দাম বাড়ানো হয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের দাবি, এ ভাবে এক ধাক্কায় ৫০ শতাংশ দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় মানুষের অসুবিধাই হবে।
যে ওষুধগুলোর দাম বাড়ানো হবে, সেগুলি হল, বেনজ়াইন পেনিসিলিন ১০ লাখ আইইউ ইনজেকশন, অ্যাট্রোপিন ইনজেকশন ০.৬ মিলিগ্রাম, স্ট্রেপটোমাইসিন পাউডার ইনজেকশন ৭৫০ মিলিগ্রাম ও ১০০০ মিলিগ্রাম, রেসপিরেটর সলিউশান ৫ মিলিগ্রাম, স্যালবুটামল ট্যাবলেট ২ মিলিগ্রাম ও ৪ মিলিগ্রাম, পিলোকারপাইন ২ পার্সেন্ট ড্রপস, সেফাড্রক্সিল ট্যাবলেট ৫০০ মিলিগ্রাম, ডেসফেরিওক্সামাইন ৫০০ মিলিগ্রাম (ইনজেকশনের জন্য) এবং লিথিয়াম ট্যাবলেট ৩০০ মিলিগ্রাম ।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশে দু’রকম ওষুধের তালিকা রয়েছে। এগুলি হল প্রয়োজনীয় ওষুধ তথা শিডিউলড ড্রাগস ও নন-শিডিউলড ড্রাগস। সরকার থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বেঁধে দেওয়া হয় প্রতি বছর। মূলত পাইকারি মূল্যের উপর নির্ভর করে এই ওষুধগুলির দামের অবস্থান। বর্তমানে, প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় রয়েছে ৩৮৪টি ওষুধ।
অন্য দিকে, ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি প্রতি বছর নন-শিডিউলড ড্রাগের দাম বৃদ্ধির জন্য আবেদন করতে পারে। তবে, কোনও অবস্থাতেই সেই মূল্য ১০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে না।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ ও ২০২১ সালে একইভাবে প্রায় ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছিল বহু ওষুধের। এর পর ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে প্যারাসিটামল-সহ প্রায় ৮০০টি ওষুধের দাম বাড়ানো হয়। মে মাসে আবার ৪১টি ওষুধের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তবে, ফের ওষুধের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তে জনমানস বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের একাংশের।