স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৫ জানুয়ারি: মালদ্বীপ ইস্যুতে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। প্রশ্নের মুখে পড়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিদেশনীতি। তবে চিনের উসকানিতেই যে পড়শি দ্বীপরাষ্ট্রটির ‘ভারত বিরোধী’ অবস্থান নিয়েছে তা স্পষ্ট। দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু বেজিংয়ের হাতে তামাক খান তা অজানা নয়। এই পরিস্থিতিতে প্রথমবার প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
রবিবার মহারাষ্ট্রে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জয়শংকর। নাগপুরের টাউনহলে ‘মন্থন’ শীর্ষক আলোচনায় বিদেশমন্ত্রীকে মালদ্বীপ বিবাদ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে তিনি বলেন, “দেখুন রাজনীতি হল রাজনীতি। সব দেশই যে ভারতের বন্ধু হবে তেমন কোনও গ্যারান্টি নেই। এমন ভাবার কোনও কারণও নেই যে সব সময় সবাই আমাদের পাশে থাকবে বা সব ইস্যুতে সহমত হবে।” তবে ভারতের বিদেশনীতির সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি জানান, বিগত ১০ বছরে বিশ্বে অনেক রাষ্ট্রের সঙ্গে মজবুত সম্পর্ক তৈরি করেছে দিল্লি।
বলে রাখা ভালো, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পরই উপহারের ডালি নিয়ে মালদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে যে ঋণের ফাঁদে ফেলতে চাইছে চিন, সেই বিষয়ে দ্বীপরাষ্ট্রটিকে সতর্ক করেছিলেন তিনি। সে সময় পড়শি দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন ‘ভারতবন্ধু’ ইব্রাহিম মহম্মদ সলিহ। ক্ষমতায় ছিল তাঁর দল মালদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সলিহর পূর্বসূরি আবদুল্লা ইয়ামিন ছিলেন চিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। ইয়ামিনের জমানায় চিনের সঙ্গে সখ্যতা দৃঢ় হয়েছিল মালদ্বীপের। বেজিংয়ের থেকে প্রচুর ঋণও নিয়েছিল ইয়ামিন সরকার। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এই দ্বীপরাষ্ট্রে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছিল বেজিং। কিন্তু ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ ওই নির্বাচনে জয়লাভ করে মালদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এমডিপি)। প্রেসিডেন্ট পদে বসেন ‘ভারতপন্থী’ ৫৪ বছরের ইব্রাহিম মহম্মদ সলিহ। এর ফলে ভারত মহাসাগরের বুকে মালদ্বীপে বিশাল নৌঘাঁটি বানানোর যে স্বপ্ন ছিল চিনের তা আপাতত ধূলিসাৎ হয়ে যায়৷ এবার ফের ‘চিনপন্থী’ মুইজ্জু ক্ষমতায় ফেরায় উদ্বেগ বেড়েছে দিল্লির।