Sunday, June 1, 2025
বাড়িজাতীয়আদানি প্রশ্নে মোদির সমালোচনাকারী কে এই জর্জ সরোস

আদানি প্রশ্নে মোদির সমালোচনাকারী কে এই জর্জ সরোস

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,১৮ ফেব্রুয়ারি: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে মার্কিন বিনিয়োগকারী জর্জ সরোসের করা মন্তব্য ঘিরে দেশটিতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনকে সামনে রেখে দেওয়া বক্তব্যে সরোস আদানি গ্রুপের সংকট নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, আদানি–কাণ্ডের কারণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর মোদির প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। তিনি আরও বলেন, আদানির বিরুদ্ধে জালিয়াতির যেসব অভিযোগ আছে, তা নিয়ে পার্লামেন্টে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নের জবাব মোদিকে দিতে হবে।

মিউনিখে সম্মেলনে জর্জ বলেন, ‘মোদি এ বিষয় (আদানি–কাণ্ড) নিয়ে এখনো নীরব। কিন্তু তাঁকে জবাব দিতেই হবে। এ ঘটনা ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় মোদির রাশকে দুর্বল করে দেবে।’ সেই সঙ্গেই তাঁর আশা, এবার ভারতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসবে। তাঁর এমন বক্তব্যর পর, ভারতে বলা হচ্ছে, তিনি বলতে চাইছেন ভারতে এ মুহূর্তে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই। তাঁর মন্তব্য ঘিরে ভারতে বিতর্ক চলছে। সব দলের নেতারা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এ মন্তব্যের জন্য।

জর্জ সরোস কে?

৯২ বছর বয়সী জনহিতৈষী সরোস বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন। হাঙ্গেরির এক সম্ভ্রান্ত ইহুদি পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর বয়স যখন ১৭ বছর বয়স, তখন হাঙ্গেরিতে নাৎসিরা পৌঁছায়। তাঁর পরিবার তখন দেশ ছেড়ে চলে যায়। ১৯৪৭ সালে তাঁরা লন্ডনে পৌঁছায়। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে সরোস দর্শন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর সরোস লন্ডনের সিঙ্গার অ্যান্ড ফ্রাইডল্যান্ডার ব্যাংকে যোগ দেন। ১৯৫৬ সালে তিনি নিউইয়র্কে চলে যান। সেখানে শুরুতে ইউরোপিয়ান সিকিউরিটিজে বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করেছেন।

১৯৭৩ সালে একটি হেজ ফান্ড প্রতিষ্ঠার পর বড় বড় বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক জগতে প্রবেশ করেন সরোস। ১৯৬৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন দেশের মুদ্রা সংগ্রহ করেছেন।সরোসকে বিনিয়োগকারী হিসেবে চেনে বিশ্ব। সাহসী বিনিয়োগের জন্য তাঁর খ্যাতি জগৎজোড়া।ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, সরোস ব্রিটিশ পাউন্ডের ঘাটতি তৈরি করেছিলেন। এর মধ্য দিয়ে তাঁর ১০০ কোটি ডলার পরিমাণ অর্থ লাভ হয়েছিল।এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সোরোসের নিট সম্পদের পরিমাণ ৮৫০ কোটি মার্কিন ডলার। গণতন্ত্র ও বাক্‌স্বাধীনতার প্রচার করতে প্রতিষ্ঠা করেছেন ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন। তাঁর এ সংস্থা গণতন্ত্র ও বাক্‌স্বাধীনতার প্রচার করে দেশে-বিদেশে। বাক্‌স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বজায় রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেও অনুদান দেয় তাঁর সংস্থা।

স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ৭০টির বেশি দেশে সরোস এ ফাউন্ডেশনের শাখা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনিও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন এবং বিভিন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটন এবং জো বাইডেনের হয়ে প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন।জর্জ সরোসকে এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকটের মূল হোতাদের একজন বলে মনে করা হয়ে থাকে। এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকটের সূত্রপাত হয় ১৯৯৭ সালে, থাইল্যান্ডে। তখন দেশটির মুদ্রা বাথের পতন হয়। পরে অন্য দেশগুলোতেও এ অর্থনৈতিক সংকট ছড়িয়ে পড়ে।এর প্রভাবে দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হংকং, লাওস, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনেও এর প্রভাব পড়েছিল। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ অভিযোগ করেছিলেন, মুদ্রা নিয়ে ব্যাপক ফটকা কারবার করে সরোস দেশটির অর্থনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছেন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!