স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৭ মে : ভারতীয় সেনার ‘এয়ার স্ট্রাইকে’ গুঁড়িয়ে গিয়েছে আজমল কাসভ, ডেভিড কোলেম্যান হেডলির ‘কোচিং’ সেন্টার! ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পাকিস্তানের মারকাজ-তইবা-মুরিদকে। যেখানে ২৬/১১ মুম্বই হামলার আগে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল আজমল কাসভ, ডেভিড কোলেম্যান হেডলিরা। রীতিমতো জঙ্গিদের কোচিং সেন্টার চলত লাহোর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের এই এলাকায়। সরাসরি যোগ ছিল ওসামা-বিন-লাদেনের সঙ্গেও।
লস্কর-ই-তইবার মাথা হাফিজ সইদের তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছিল মারকাজ মুরিদকে। একসময় লস্করের হেড কোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহৃত হত পাঞ্জাব প্রদেশের ২০০ একরজুড়ে থাকা এই কমপ্লেক্স। কী ছিল না সেখানে? রয়েছে হাসপাতাল থেকে বাজার, মাদ্রাসা থেকে মাছ চাষের জায়গা। এমনকী, চাষাবাদের জমি থেকে বাসযোগ্য বাড়ি-হস্টেলও ছিল এখানে। রয়েছে ২০০টি ঘোড়া। ছেলে এবং মেয়েদের জন্য আলাদা-আলাদা সুফা অ্যাকাডেমি ছিল এই কমপ্লেক্সে। যেখানে ধর্মশিক্ষা দেওয়া হত। এমনকী, কম্পিউরাইজড ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শেখানো হত নাশকতার ক-খ-গ…
এই কমপ্লেক্সেই ৮-২০ বছর বয়সিদের মগজধোলাই চলত। প্রশিক্ষণ দেওয়া হত অস্ত্রের। শেখানো হত গুলি-বোমা বানানো। অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণও চলত এই কমপ্লেক্সে। এমনকী, ধর্মের দোহাই নিয়ে সন্ত্রাসবাদের বীজ বপণও করা হত। প্রশিক্ষণ শেষ না হাওয়া পর্যন্ত কমপ্লেক্স ছেড়ে বেরনোর অনুমতি থাকত না কিশোরদের। প্রতি বছর প্রায় এক হাজার ‘ছাত্র-ছাত্রী’ ভরতি করত মারকাজ মুরিদকে। তারপর শুরু হত মগজধোলাই। তৈরি করা হত ‘আত্মঘাতী’ হামলাকারী। এই প্রশিক্ষণ নিয়েই মুম্বইয়ে নিরীহদের প্রাণ নিয়েছিল আজমল কাসভ, ডেভিড কোলম্যানরা।
কীভাবে চলত এই কোচিং সেন্টার? কোথা থেকে আসত টাকা? সূত্রের দাবি, সরাসরি অনুদান দিয়েছিল ওসামা-বিন-লাদেন। ২০০২ সালে ‘কাশ্মীর হেরাল্ড’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনুদানের পরিমাণ ছিল ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এমনকী, পাঞ্জাব প্রদেশের সরকারও বার্ষিক আর্থিক অনুদান দিয়ে থাকে। ২০১৩-২০১৪ অর্থবর্ষে ৬ লক্ষ ২০ হাজার মার্কিন ডলার আর্থিক সাহায্য করেছিল বলে সূত্রের খবর। আর এই টাকা খরচ করে তৈরি করা হত আত্মঘাতী জেহাদি।
মাত্র ২৫ মিনিটের অপারেশনেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হল সেই জেহাদি তৈরির কারখানা মারকাজ-তইবা-মুরিদ।