Monday, February 17, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদখাবারের দাম বাড়ায় শিশুদের অপুষ্টি ‘বিপর্যয়’ আনতে পারে: জাতিসংঘ

খাবারের দাম বাড়ায় শিশুদের অপুষ্টি ‘বিপর্যয়’ আনতে পারে: জাতিসংঘ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ মে।  ইউক্রেইন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের জীবন রক্ষার চিকিৎসা ব্যয় ১৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা- ইউনিসেফ।মঙ্গলবার সংস্থাটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুদ্ধ ও মহামারীর কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের মধ্যে অপুষ্টির চিকিৎসায় ব্যবহার করা খাদ্যের (আরইউটিএফ) কাঁচামালের দাম লাফিয়ে বেড়েছে।

আগামী ছয় মাসে আরও তহবিল না পেলে জীবন রক্ষাকারী এই খাদ্যের যোগান না পাওয়া শিশুর সংখ্যা ৬ লাখ বাড়তে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। চীনাবাদাম, তেল, চিনি এবং বাড়তি পুষ্টি যোগ করে উচ্চ শক্তির এই খাবার তৈরি হয়।অপুষ্টি মোকাবেলার এই কর্মসূচি চালিয়ে নিতে তহবিলের পরিমাণ কতোটা বাড়ানো দরকার তা জানায়নি ইউনিসেফ।তবে তারা বলছে, এক কার্টন বিশেষায়িত আরইউটিএফের ভেতর দেড়শ প্যাকেট থাকে, যা চরম অপুষ্টিতে ভোগা একটি শিশুর স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের যোগান দেয়। গড়ে এই কার্টনের জন্য খরচ পড়ে প্রায় ৪১ ডলার।

সংস্থাটি হুঁশিয়ার করে জানিয়েছে, খাদ্য নিরাপত্তার ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হওয়ার পাশপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় চরম অপুষ্টির সংকট ‘বিপর্যয়কর’ পর্যায়ে যেতে পারে।ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল বলেন, “বর্তমান বিশ্ব দ্রুত গতিতে প্রতিরোধযোগ্য শিশুমৃত্যু এবং অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের একটি ভার্চুয়াল টিন্ডারবক্সে পরিণত হচ্ছে।”চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর ওজন উচ্চতার চেয়ে অনেক বেশি কম হয়, ৫ বছরবয়সের নিচে এমন শিশুর সংখ্যা ১ কোটি ৩৬ লাখ, এই বয়স সীমায় শিশু মৃত্যুর হার প্রতি ৫ শিশুর মধ্যে ১ বলে জানায় ইউনিসেফ।যুদ্ধ ও মহামারীর আগেও প্রতি ৩ শিশুর মধ্য ২ শিশু জীবন রক্ষাকারী এই  খাবার থেকে বঞ্চিত ছিল বলে জানায় সংস্থাটি।   ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়,শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি পরিস্থিতির অবনতি এবং জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসার খরচ বাড়ায় রুগ্ন শিশুদের জীবন রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নও হুমকির মুখে পড়েছে।প্রতিবেদনে জানানো হয়, দক্ষিণ এশিয়া অপুষ্টির ‘কেন্দ্র’ হিসেবে রয়ে গেছে। যেখানে প্রতি ২২ শিশুর একজন ক্ষীণকায়, যা সাব-সাহারা আফ্রিকার তুলনায় তিনগুণ বেশি। অন্য দেশগুলোতেও শিশুরা উচ্চহারে অপুষ্টির শিকার হচ্ছে।

উদাহরণ হিসেবে আফগানিস্তানের উল্লেখ করে সেখানে ১১ লাখ শিশু এ বছর অপুষ্টির শিকার হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, যা ২০১৮ সালের প্রায় দ্বিগুণ।

‘আফ্রিকার শৃঙ্গ’ হিসেবে পরিচিত অঞ্চলে খরা হলে কৃশকায় শিশুর সংখ্যা দ্রুতগতিতে বেড়ে ১৭ লাখ থেকে ২০ লাখে পৌঁছাতে পারে। এছাড়া সাহেল অঞ্চলে এই হার ২০১৮ সালের তুলনায় ২৬ শতাংশ বাড়তে পারে বলে জানানো হয়।সতর্কবার্তায় বলা হয়, তুলনামূলকভাবে উগান্ডার মতো স্থিতিশীল দেশগুলোতেও ২০১৬ সাল থেকে ক্ষীণকায় শিশুর সংখ্যা ৪০ শতাংশ বা তার বেশি বেড়েছে। সেখানে ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার কারণে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীর খাবারের মান ও পরিমাণে ঘাটতি তৈরি হয়েছে।প্রতি বছর তীব্র খরা, বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকা এবং জলবায়ু-সম্পর্কিত অভিঘাত এই সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়িয়ে তুলছে বলে জানায় ইউনিসেফ।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য