Saturday, February 8, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদকোভিড আক্রান্ত চীনের রাজধানীতে বাড়ছে বিধিনিষেধ

কোভিড আক্রান্ত চীনের রাজধানীতে বাড়ছে বিধিনিষেধ



স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৮ এপ্রিল।  বেইজিংয়ের প্রায় সোয়া দুই কোটি বাসিন্দার বেশিরভাগকে কোভিড শনাক্তে গণপরীক্ষা করাচ্ছে কর্তৃপক্ষ, পাশাপাশি কিছু জনসমাগমস্থল বন্ধ ও বিধিনিষেধের মাত্রাও বাড়িয়েছে।দেশটির বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের মতো লকডাউন পরিস্থিতি এড়াতে বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীতে এসব পদক্ষেপ কার্যকর করা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

চলতি সপ্তাহ থেকে বেইজিংয়ের বেশ কয়েকটি এলাকা কোভিড শনাক্তে তিন দফা গণপরীক্ষায় নেমেছে; কোভিড আক্রান্ত পাওয়ায় শহরটির একাধিক আবাসিক কম্পাউন্ড, অফিস এলাকা ও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লকডাউন জারি হয়েছে। বেশকিছু স্কুল, উৎসব ভেন্যু ও পর্যটন কেন্দ্রও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।বেইজিংজুড়ে গণপরীক্ষার প্রথম ধাপে যে প্রায় দুই কোটির মতো নমুনা সংগ্রহ হয়েছে, তার মধ্যে কয়েকজনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেলেও আক্রান্তের সংখ্যা সীমিতই ছিল। বুধবার নতুন করে ৫০ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, আগের দিন এ সংখ্যা ৩৪ ছিল।

২২ এপ্রিল থেকে বেইজিংয়ে যে ১৬০ জনের বেশি কোভিড রোগী মিলেছে, তার অর্ধেকেরও বেশি পাওয়া গেছে শহরটির সবচেয়ে জনবহুল এলাকা চাওইয়াংয়ে। রোগী সংখ্যা কম হলেও বেইজিং শুরু থেকেই সতর্ক অবস্থানে আছে।এলাকাটির এক সরু গলিতে হাটংস নামে পরিচিত ছোট বাড়িতে থাকা কানাডার নাগরিক ৩৬ বছর বয়সী অ্যান্ড্রু ওয়ার্ডকে বৃহস্পতিবার একটি হোটেলে কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে; অথচ শনাক্তকরণ পরীক্ষায় তার দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি।এক কোভিড রোগীর সংস্পর্শে এসেছিলেন জানিয়ে বুধবার হ্যাজম্যাট স্যুট পরা কয়েকজন ওয়ার্ডের ডংচেং এলাকার বাড়িতে এসে তার দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করেছিল।“আমি খানিকটা বিরক্ত, কারণ আমি ঘরে লকডাউনে থাকতে আমার সমস্ত অর্থ ও সময় ব্যয় করে খাবার মজুদ করছিলাম,” বলেছেন একটি আন্তর্জাতিক স্কুলে কাজ করা ওয়ার্ড।

একজনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার ডংচেংয়ের বেশ কয়েকটি হাটংস সিলগালা করে দিয়েছে।ডংচেং এবং শিচেং, বেইজিংয়ের প্রাণকেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি এলাকায় বৃহস্পতিবার থেকে সিনেমা হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।বেইজিংয়ের উত্তরে সাড়ে ৩ লাখ জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত ছোট জেলা ইয়ানকিং জানিয়েছে, তারাও বাসিন্দা এবং জেলাটিতে কাজ করতে আসা ব্যক্তিদের ‘স্ক্রিনিং’ শুরু করতে যাচ্ছে।চলতি সপ্তাহে কর্তৃপক্ষ যেসব এলাকায় গণশনাক্তকরণ পরীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল, সেই তালিকায় ইয়ানকিং নেই বলে জানিয়েছে রয়টার্স।বেইজিংয়ের উত্তরপূর্বে অবস্থিত জেলা পিঙ্গু জানিয়েছে, তারাও বৃহস্পতিবার ও শনিবার তাদের ৪ লাখ ৫৭ হাজার বাসিন্দার কোভিড পরীক্ষা করবে।

এর আগে চীনের বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ে প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে ১ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন নতুন শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা ১০০-র নিচেই ছিল, পরে তা দ্বিগুণ হতে থাকে এবং মার্চের ২০ তারিখেই ৭০০ ছাড়িয়ে যায়।

মার্চের শেষ দিকে সাংহাইয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হতে থাকে; পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্তৃপক্ষকে শহরজুড়ে লকডাউন দিতে হয়, যা গুরুত্বপূর্ণ এ অর্থনৈতিক কেন্দ্রের আড়াই কোটি বাসিন্দার দৈনন্দিন জীবন ওলটপালট করে দেয়।যতক্ষণ পর্যন্ত না সংক্রমণ ধরা পড়ছে এবং ছোট পরিসর লকডাউনের প্রয়োজন না পড়ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বেইজিংয়ের কর্তৃপক্ষ শহরের সিংহভাগ বাসিন্দাকে কাজে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে।

“আমাদেরকে প্রথমে ডরমেটরিতে থাকতে হবে, এরপর লকডাউন উঠলে কাজে ফিরতে পারবো,” বলেন এক বন্ধুকে নিয়ে ১০ ঘণ্টা ট্রেনভ্রমণ শেষে বুধবার বেইজিংয়ে নামা উ।

তাদের দুজনেরই বেইজিং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে কাজ করার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছের বেশ কয়েকটি আবাসিক কম্পাউন্ড লকডাউনে যাওয়ায় কাজে যোগ দিতে পারেননি তারা।বিশ্ববিদ্যালয় কর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর লকডাউনের মধ্যে তাদের ডরমেটরিতে থাকার বিষয়টি ঠিক হয়।“ডরমেটরিতে আমরা রান্না করতে পারবো। লকডাউন যে অল্প সময়ের মধ্যেই উঠে যাবে তা আমি নিশ্চিত। কাজ না করলে টাকা চাইতে পারবো না,” বলেছেন উ।বুধবার বেইজিংয়ের ইউনিভার্সাল স্টুডিওস জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে থিম পার্কটিতে ঢুকতে হলে দর্শনার্থীদের কোভিড পরীক্ষার ‘নেগেটিভ’ ফল দেখাতে হবে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য