Wednesday, March 26, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদনেপালের পথে হাজার হাজার মানুষ, গণতন্ত্রে কেন অনীহা গণদেবতার?

নেপালের পথে হাজার হাজার মানুষ, গণতন্ত্রে কেন অনীহা গণদেবতার?

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১১ মার্চ : ১৯ বছর আগে তিনি শাসকের কুরসি ছেড়েছিলেন। এর বছর দুয়েক পরে পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে নেপালে সরকারি ভাবে যবনিকা পড়ে যায় রাজতন্ত্রের উপরে। কিন্তু ফের সেই রাজারই দ্বারস্থ নেপালের জনগণ! রবিবার কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবেশপথে দেখা গেল হাজার দশেক মানুষের ভিড়! তাঁরা জ্ঞানেন্দ্র শাহর সমর্থক। তাঁদের দাবি, ফের নেপালে ফিরুক রাজতন্ত্র। ফের নেপাল হয়ে উঠুক হিন্দু রাষ্ট্র।

বিমানবন্দরের সামনে জমা হওয়া ভিড় থেকে স্লোগান শোনা গেল, ”রাজপ্রাসাদ ছেড়ে দেওয়া হোক রাজার জন্য। ফিরে আসুন রাজা। দেশকে রক্ষা করো। প্রিয় রাজার জয় হোক। আমরা রাজতন্ত্র চাই।” পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দ্রুত এলাকা ঘিরে ফিরে রায়ট পুলিশ। যদিও প্রতিবাদীরা প্রবেশপথের মুখ থেকেই ফিরে যান। কোনও রকম হিংসার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু এদিনের প্রতিবাদ নতুন করে হাওয়ায় ভাসিয়ে দিতে পেরেছে এই দাবি। রাজতন্ত্র ফেরাতে হবে নেপালে।

২০০৬ সালে দেখা গিয়েছিল এর উলটো ছবি। রাজপথে ব্যাপক জন সমাবেশ হয়েছিল রাজাকে গদিচ্যুত করার দাবি তুলে। শেষপর্যন্ত বাধ্যতই সরে যা জ্ঞানেন্দ্র। বছর দুয়েক পরে ২০০৮ সাল থেকে পাকাপাকি ভাবে যতিচিহ্ন পড়ে যায় রাজতন্ত্রের উপরে। রাজা জ্ঞানেন্দ্র হয়ে যান আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই আম নাগরিক। সেই সময় বহু মানুষেরই বিশ্বাস ছিল এবার ‘সুসময়’ ফিরবে।

কিন্তু ২০০৮ সাল থেকে এযাবৎ ১৩টি সরকার দেখেছে নেপাল। রাজনৈতিক স্থিরতা আসেনি। বরং দুর্নীতি বেড়েছে উত্তরোত্তর। অর্থনীতি ধুঁকতে শুরু করেছে। ফলে এবার সেদেশের মানুষের বড় অংশই মনে করতে শুরু করেছেন এই অস্থিরতা থেকে বাঁচাতে পারে রাজতন্ত্রই।
৭২ বছরের বাহাদুর ভান্ডারি কথা বলছিলেন সিএনএন-এর সঙ্গে। তাঁর বক্তব্য পরিষ্কার। ”আমরা এখানে (বিমানবন্দরের সামনে) এসেছি রাজার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাতে। এবং তাঁর সঙ্গে সঙ্গে মিছিল করে এগিয়ে যেতে। দাবি তাঁকে ফের রাজপ্রাসাদা ফিরিয়ে দিতে হবে।” অথচ পেশায় ছুতোর বাহাদুর ২০০৬ সালে এভাবেই রাজপথে নেমেছিলেন রাজাকে গদিচ্যুত করতে। কেন হঠাৎ মতবদল? বাহাদুরের কথায়, ”সবচেয়ে খারাপ ব্যাপারটা হল দেশে ব্যাপক দুর্নীতি চলছে। যে সমস্ত রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁরা কেউই দেশের জন্য কিছু করেননি। আমি সেই প্রতিবাদেও ছিলাম, যার ফলে রাজতন্ত্রের অবসান হয়েছিল। তখন ভেবেছিলাম এতে দেশের ভালো হবে। কিন্তু আমি ভুল করেছিলাম। দেশ আরও ডুবেছে পরবর্তী সময়ে। আর তাই আমি এখন মত বদল করেছি।”

নেপালের বর্তমান এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পিছনে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক অবস্থানকেও দেখছেন কেউ কেউ। নেপালে যতগুলি সরকার এসেছে, ক্রমে তারা ঝুঁকেছে চিনের দিকে। এই পরিস্থিতিতে ভারতই পরোক্ষে এই ধরনের আন্দোলনে অক্সিজেন যোগ করছে কিনা সেই প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য