স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ০২ মার্চ : ভেস্তে গিয়েছে আমেরিকা ও ইউক্রেনের খনিজ চুক্তি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে বৈঠকের মাঝেই কার্যত বের করে দেওয়া হয় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে। আর সেখান থেকেই ব্রিটেনে গেলেন তিনি। সেখানে তাঁকে সাদরে অভ্যর্থনা জানালেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার।
এদিন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ২.২৬ বিলিয়ন পাউন্ডের এক ঋণের চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছে ব্রিটেন প্রশাসন। এই ঋণ যে ইউক্রেনীয় সেনার শক্তিবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস ও ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী সের্গেই মার্চেঙ্কো এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর একেবারেই ভিন্ন আবহের সাক্ষী হন জেলেনস্কি। ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের সামনেই তাঁকে জড়িয়ে ধরেন স্টার্মার। আশ্বাস দেন, ব্রিটেনের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে কিয়েভের পাশেই। বলেন, ”আমরা সব সময়ই ইউক্রেনের পাশে রয়েছে।”
এরপর তাঁদের মধ্যে যে বৈঠক হয় তাকে ‘উষ্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন অভিভূত জেলেনস্কি। এই সমর্থনের জন্য ব্রিটেনকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। পরে স্টার্মার তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘রাশিয়ার এই বেআইনি যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে একটি পথ খুঁজে বের করতে আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’ রবিবার ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করার কথা জেলেনস্কির।
এপ্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, কেবল ব্রিটেনই নয়, হোয়াইট হাউসে ‘লাঞ্ছনা’র শিকার হওয়া জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়েছে ইউরোপ-সহ বিশ্বের একাধিক দেশ। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার বলেছেন, ”আজ হোয়াইট হাউস থেকে আমরা যা দেখলাম তা গুরুতর এবং হতাশাজনক।” জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলৎজ বলেছেন, ”ইউক্রেনের নাগরিকদের চেয়ে বেশি করে শান্তি আর কেউ চায় না! সেই কারণেই আমরা যৌথভাবে একটি স্থায়ী এবং ন্যায়সঙ্গত শান্তির পথ খুঁজছি। ইউক্রেন জার্মানির উপর এবং ইউরোপের উপর নির্ভর করতে পারে।” ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রোর কথায়, ”রাশিয়া আক্রমণকারী আর সেই আক্রমণের শিকার ইউক্রেনের জনগণ। তিন বছর আগেও আমরা ইউক্রেনকে সাহায্য করেছিলাম। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলাম রাশিয়ার উপর। আগামিদিনেও তা অব্যাহত রাখব।” একই ভাবে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে কানাডা, ইটালি-সহ বহু দেশ। আসলে ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের করুণ পরিণতি দেখে স্তম্ভিত বিশ্ব। আন্তর্জাতিক কূটনীতির ইতিহাসে যা বেনজির। দুপুরের খাবার খাওয়ার আগেই হোয়াইট হাউস থেকে রীতিমতো ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে বের করে দেওয়া হয় জেলেনস্কিদের।