স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৮ এপ্রিল। ইরানের বিরুদ্ধে ‘সমান্যতম কিছু করলেও’ দেশটির সেনাবাহিনী ইসরায়েলের প্রাণকেন্দ্রে হামলা চালাবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইরনের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।জাতীয় সশস্ত্র দিবসে সোমবার সেনাবাহিনীর প্যারেড অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট রাইসি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এই ভাষণ সম্প্রচার করা হয়েছে।
রাইসি বলেন, ‘‘ইহুদিদের রাষ্ট্র, আপনাদের জানা থাকা উচিত…যদি আপনারা আমাদের দেশের বিরুদ্ধে সামান্যতম পদক্ষেপও নেন, তবে আমাদের সেনাবাহিনী ইসরায়েলের প্রাণকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালাবে।”বিশ্বাস করা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র পরমাণু অস্ত্রধারী দেশ ইসরায়েল। ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চাইছে বলে দাবি পশ্চিমাদের। ইরানের পরামণু অস্ত্র তৈরি করা রুখতে ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তি ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করে। যেটি ইরান পরমাণু চুক্তি নামে পরিচিত।ওই চুক্তি অনুযায়ী, তেহরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অনেকাংশে কমাবে, বিনিময়ে পশ্চিমা বিশ্ব দেশটির উপর আরোপ করা নানা নিষেধাজ্ঞা ধাপে ধাপে তুলে নেবে।
চুক্তি নিয়ে উভয় পক্ষের আলোচনা চলার মধ্যেই ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তার দেশকে ওই চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন। চুক্তির ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।যুক্তরাষ্ট্রে সরকার বদল হয়ে ক্ষমতায় এসেছেন জো বাইডেন। তিনি তেহরানের চুক্তির সব শর্ত কঠোরভাবে অনুসরণের সাপেক্ষে যুক্তরাষ্ট্রকে পুনরায় ইরান পরমাণু চুক্তিতে ফিরিয়ে আনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।এ নিয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে পরোক্ষ আলোচনাও চলছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। বরং গত মাসে আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়। তেহরান দাবি করেছে তাদের অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের নাম ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দিক।
কিন্তু ওয়াশিংটন এখনও এ সংক্রান্ত বেশ কিছু ইস্যুতে একমত হতে পারেনি। ওদিকে, চুক্তির আলোচনা স্থবির হয়ে পড়ায় ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়িয়ে দিয়ে চুক্তি লঙ্ঘন করতে শুরু করেছে।সম্পতি ইরানের একাধিক পরমাণু বিজ্ঞানী গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন। তাদের পরমাণু ক্ষেত্রেও হামলা চালানো হয়েছে। তেহরানের দাবি, ইসরায়েল ওই হত্যাকাণ্ড ও হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েল স্বীকার বা অস্বীকার কিছুই করেনি।বরং তারা বলেছে, তারা ইরান পরমাণু চুক্তি মেনে চলতে বাধ্য নয়। সোমবারের প্যারেডে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র, সশস্ত্র যোদ্ধাদের বহনকারী যান, ড্রোন এবং ছোট সাবমেরিন প্রদর্শন করেছে।রাইসি বলেন, ‘‘আমাদের কৌশল আক্রমণ করা নয় বরং আত্মরাক্ষা করা। ইরানের সেনাবাহিনী নিষেধাজ্ঞার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে এবং আমাদের সামরিক শক্তি এখন সব থেকে শক্তিশালী পর্যায়ে রয়েছে।”