Saturday, January 25, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদএকমাস জেলবন্দি থাকতে হবে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস

একমাস জেলবন্দি থাকতে হবে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ০৩ ডিসেম্বর : মঙ্গলবারও জামিন পেলেন না বাংলাদেশের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। উল্টে আরও একমাস জেলবন্দি থাকতে হবে তাঁকে। চট্টগ্রাম আদালতে এ দিন তাঁর জামিন মামলার শুনানির কথা ছিল। কিন্তু তা পিছিয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম সূত্রের দাবি, সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে আদালতে মামলা লড়ার জন্য মঙ্গলবার রাজি ছিলেন না কোনও আইনজীবী। এই পরিস্থিতিতে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত এই মামলার শুনানি স্থগিত রেখেছে চট্টগ্রাম আদালত। ঘটনাচক্রে ইসকনের কলকাতা শাখার মুখপাত্র রাধারমণ দাস সোমবার রাতে অভিযোগ করেছেন, চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবীর উপর হামলা হয়েছে এবং তিনি হাসপাতালে ভর্তি।

চট্টগ্রামের এক স্থানীয় বিএনপি নেতার অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ পুলিশ গ্রেফতার করে চিন্ময়কৃষ্ণকে। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চত্বর থেকে প্রথমে তাঁকে আটক করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম আদালতে পেশ করা হয় সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণকে। কিন্তু জামিনের আর্জি মঞ্জুর হয়নি। তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় চট্টগ্রামের আদালত। সে দিন তাঁকে আদালত চত্বর থেকে প্রিজ়ন ভ্যানে তোলার সময় বিক্ষোভ দেখান চিন্ময়কৃষ্ণের অনুগামীরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। সেই ঘটনার এক সপ্তাহ পরে মঙ্গলবার ফের চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

২৬ নভেম্বরের ঘটনার পর এ দিন চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করে পুলিশ। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের দাবি, আদালতে প্রচুর সংখ্যক পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়। চট্টগ্রামের আইনজীবীরা সকালে আদালত চত্বরে মিছিলও করেন। তবে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করানো হয়নি সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণকে।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। এই আবহে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য একাধিক ধর্মীয় সংগঠন মিলে গঠন করে ‘সনাতনী জাগরণ মঞ্চ’। ওই মিলিত মঞ্চের অন্যতম মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। তার ডাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমাবেশ আয়োজিত হয়েছে। প্রচুর সংখ্যালঘু মানুষ তাতে ভিড় করেছেন। সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ ইস্‌কনের প্রাক্তন সদস্যও। সংগঠনের সঙ্গে আপাতত কোনও সরাসরি যোগ না থাকলেও, তাঁর গ্রেফতারির পর পাশে দাঁড়িয়েছে ইস্‌কনও।

সূত্রের খবর, আগের শুনানিতে আদালতে ৫৩ জন আইনজীবী চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে সওয়ালে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সকলকে একটি বিস্ফোরক মামলা-সহ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে দুই সাংবাদিক এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কয়েক জন বিশিষ্ট জনের নামও যুক্ত করা হয়েছে ওই মামলায়। পাশাপাশি গত রাতে চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রমেন রায়ের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইস্‌কন। চিন্ময়কৃষ্ণের আর এক আইনজীবী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার আদালতে তাঁদের উপরে হামলা করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অভিযোগ, তার পরেই আতঙ্কিত আইনজীবীরা চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের সওয়ালে হাজির হতে চাইছেন না।

সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে কেন কোনও আইনজীবী আদালতে উপস্থিত নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে আদালতেও। ‘প্রথম আলো’র এক প্রতিবেদন অনুসারে, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিমউদ্দিন চৌধুরী আদালতে জানান, সন্ন্যাসীর হয়ে কোনও আইনজীবী কেন দাঁড়াননি, সে বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনও তথ্য নেই। কোনও আইনজীবীকে ভয় দেখানো বা হুমকি দেওয়ার তথ্যও তাঁদের কাছে নেই বলে আদালতে দাবি করেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য