স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৫ নভেম্বর: ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরির অর্থ পাচারের দায়ে এক হ্যাকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।২০১৬ সালে বিটফাইনিক্স ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জে হ্যাকিং এবং প্রায় এক লাখ ২০ হাজার চুরির জন্য গত বছর দোষী সাব্যস্ত হন ইলিয়া লিচেনস্টাইন। তার চুরির ক্রিপ্টোকারেন্সি পাচারে সহায়তা করেন স্ত্রী হিদার মরগান, যিনি তার হিপহপ সংগীত প্রচারে ‘রাজলেখান’ ছদ্মনাম ব্যবহার করে আসছেন।
চুরির সময় বিটকয়েনের মূল্য ছিল প্রায় ৭ কোটি ডলার, কিন্তু তারা গ্রেপ্তারের সময় (২০২২) বিটকয়েনের মূল্য বেড়ে ৪৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল লিসা মোনাকো তখন বলেছিলেন, এই মামলায় উদ্ধার হওয়া ৩৬০ কোটি ডলার মূল্যের সম্পদই যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আর্থিক বাজেয়াপ্তের ঘটনা।ডিস্ট্রিক্ট জজ কলিন কোলার-কোটেলি বলেন, “এই বার্তা দেওয়া জরুরি যে- আপনি দায়মুক্তি নিয়ে এসব অপরাধ করতে পারবেন না, এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।”
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে কারাগারে থাকা লিচেনস্টাইন তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন।তিনি এও বলেছেন, সাজা ভোগের পর সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজের দক্ষতা কাজে লাগাতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।তার স্ত্রী মরগানও গেল বছর অর্থ পাচারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। আগামী ১৮ নভেম্বর তার সাজা ঘোষণা করা হবে।আদালতের নথি অনুযায়ী, বিটফাইনিক্স হ্যাক করার জন্য লিচেনস্টাইন উন্নত হ্যাকিং সরঞ্জাম ও কৌশল ব্যবহার করেছিল। হ্যাকিংয়ের পরে তিনি চুরি করা তহবিল পাচারের জন্য মরগানের সহায়তা চান।
মার্কিন বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘অসংখ্য অত্যাধুনিক কৌশল প্রয়োগ করেছে’।এসব পদ্ধতির মধ্যে কল্পিত পরিচয় ব্যবহার করা, বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সিতে তহবিল স্থানান্তর করা এবং সোনার কয়েন কেনা অন্তর্ভুক্ত ছিল।কৌঁসুলিরা জানান, রাশিয়ায় জন্ম হলেও যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা লিচেনস্টাইন পারিবারিক ভ্রমণের সময় বাহকদের সঙ্গে দেখা করতেন এবং পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতেন।মরগানের মামলা প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ‘রাজলেখান’ চরিত্র ভাইরাল হয়।
বিবিসি লিখেছে, হ্যাকের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নিউ ইয়র্কের আশপাশে চিত্রায়িত কয়েক ডজন মিউজিক ভিডিও এবং র্যাপ গান প্রকাশ করেছিল এই দম্পতি।মরগান তার গানে নিজেকে ‘টাকা বানানোর খারাপ-গাধা’ এবং ‘ওয়াল স্ট্রিটের কুমির’ বলে বর্ণনা করেছেন।ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত নিবন্ধে মরগান নিজেকে একজন সফল প্রযুক্তি ব্যবসায়ী বলে দাবি করেন। সেই সঙ্গে নিজেকে একজন ‘অর্থনীতিবিদ, ধারাবাহিক উদ্যোক্তা, সফটওয়্যার বিনিয়োগকারী এবং র্যাপার’ বলে পরিচয় দেন।