স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২ নভেম্বর: দরজায় কড়া নাড়ছে ভোট। এ সময়ে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোয় নির্বাচনী প্রচারের জন্য পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক (ভলান্টিয়ার) খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিসকে।ভোটের একেবারে শেষ মুহূর্তের প্রচারে স্বেচ্ছাসেবকেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাঁরা ভোটারদের বাড়ি বাড়িতে গিয়ে এবং ফোন করে ভোট দিতে উৎসাহ দেন।এবারের নির্বাচন নিয়ে প্রায় সব কটি জনমত জরিপে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিটি ভোটই মূল্যবান।যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। কমলা ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন উভয়ই নানা চুক্তি নিয়ে আলোচনার সময় শ্রমিক ইউনিয়নকে সমর্থন দিয়েছেন এবং শ্রমিকদের অধিকারের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন।
কিন্তু রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প গত কয়েক বছরে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর ভেতর ডেমোক্রেটিকদের দুর্গে হানা দিয়েছেন। ট্রাম্পের এই প্রচেষ্টার ফলে যদি ইউনিয়নের ভেতর ডেমোক্র্যাট সমর্থক সামান্য হলেও কমে যায়, তবে হাড্ডাহাড্ডির এই লড়াইয়ে কমলার শক্তিতে উল্লেখ করার মতো প্রভাব ফেলতে পারে।এবার যদি কমলা জিতে যান, তবে তিনি হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী ও দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তাঁর জয়ের পথে লিঙ্গবৈষম্য ও জাতিগত বৈষম্য বড় বাধা হয়ে আছে।১ কোটি ২৫ লাখ সদস্যের শ্রমিক ইউনিয়ন এএফএল-সিআইও। সেটির প্রেসিডেন্ট লিজ শুলার বলেন, সামগ্রিকভাবে কমলার জন্য উৎসাহ অনেক বেশি। কিন্তু লিঙ্গবৈষম্যের কারণে কিছু কিছু ইউনিয়নে তাঁর প্রতি সমর্থন কমতে পারে।
এই নেত্রী আরও বলেন, ‘সত্যি করে বলি, অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা নারী প্রার্থীদের এমনভাবে দেখেন। আপনি জানেন, তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও কম, তিনি (কমলা) ঠিক প্রেসিডেন্টের মতো নন। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে কারও মনে এ ধরনের প্রশ্ন নেই।’ সিআইওর প্রধান লিজ শুলার। তিনি বলেন, এএফএল-সিআইও এই সংকট সমাধানে পুরুষ শ্রমিকদের নাগাল পেতে বাড়ির পরিবর্তে তাঁদের কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছেন। সেখানে তাঁদের উদ্বেগ নিয়ে আলোচনার সুযোগ অনেক বেশি।ভবন নির্মাণকাজের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের ইউনিয়নে এ সমস্যা (বাড়িতে না পাওয়া) বেশি। বিশেষ করে যাঁরা বিদ্যুৎ–সংযোগ ও পাইপ লাগানোর কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে। তাঁদের বেশির ভাগই পুরুষ ও শ্বেতাঙ্গ।বৃহত্তর পরিষেবা ইউনিয়নগুলোয় সদস্যসংখ্যা আরও বৈচিত্র্যময়। সেখানেও লিঙ্গবৈষম্য বাড়ছে। সেগুলোয় পুরুষ সদস্যদের মধ্যে কমলার প্রতি সমর্থন যেমন কমছে, তেমনি নারী সদস্যদের মধ্যে সমর্থনের জোয়ার লক্ষ করা যাচ্ছে বলে জানান শ্রমিক কর্মকর্তারা। এটা ভোটারদের একটি অংশের চিত্র। এবারের নির্বাচনে সারা দেশে এই চিত্র গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
রয়টার্সের জনমত জরিপে দেখা গেছে, নারীদের মধ্য কমলার প্রতি সমর্থন বাড়ছে। বিশেষ করে শ্বেতাঙ্গ নারীদের মধ্যে। অন্যদিকে ২০২০ সালের নির্বাচনের তুলনায় এবার পুরুষদের মধ্যে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন বেড়েছে।ডেলাওয়ারের এএফএল-সিআইওর প্রধান জেমস মারভেলিয়াস বলেন, নানা সামাজিক বিষয়ে কমলার নিরপেক্ষ অবস্থানের কারণে পুরুষ সদস্যদের কিছু অংশের মধ্যে তাঁর প্রতি সমর্থন দুর্বল হয়ে গেছে কিছু অংশের পুরুষ শ্রেষ্ঠত্ববাদের কারণে। ভোটের দিন তাই ভোটারদের একটি অংশ ভোট দিতে যাবেনই না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।