স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ০৪ অগস্ট ২০২৪ :- সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনে রক্তাক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। হিংসাত্মক ছাত্র বিক্ষোভের পরে কোটা সংস্কার করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছিল বাংলাদেশ, এর মধ্যেই নতুন করে অশান্তি ছড়াচ্ছে নানা প্রান্তে। পড়ুয়াদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির জেরে কার্যত অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে জামালপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাই, কুমিল্লা-সহ দেশের একাধিক একালা। পুলিশের সঙ্গে কয়েকদফায় সংঘর্ষ হয়েছে শিক্ষার্থীদের। ছাত্রদের মিছিলে কয়েকজন দুষ্কৃতী গুলি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ। আহতদের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে। এদিকে, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নতুন করে আন্দোলনে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ উঠছে বিএনপি ও জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে। শাসকদল আওয়ামি লিগের দাবি, এই ছাত্র আন্দোলন এখন বিএনপি-জামাতের নেতৃত্বে চলে গিয়েছে। তারা মৃত্যুমিছিল জারি রেখে সরকারের পতন ঘটানোর ষড়যন্ত্র করছে। শুক্রবার বিকালের দিকে খুলনায় ছাত্র-জনতার গণমিছিল কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। ঢাকার উত্তরাতেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা হয়। এর পর আজ, শনিবার কুমিল্লা শহরে পড়ুয়াদের মিছিলে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় অন্তত ৫০ জন জখম হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ ৫। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলিগ এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধদের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানেও পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনের কো-অর্ডিনেটর ঘোষণা করেছেন, তাদের নয় দফা দাবি আদায়ের জন্য রবিবার থেকে দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন শুরু করা হবে। নয় দফার মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ক্ষমা চাওয়া এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলি আরাফাত এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের পদত্যাগ।
এদিকে, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান হাসিনা। শনিবার গণভবনে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ছাত্রদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “গণভবনের দরজা খোলা। সমস্যা সমাধানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমি আলোচনায় বসতে চাই। সকলের কথা শুনতে চাই। আমি এই সংঘাত চাই না।” কিন্তু এই আন্দোলনের অন্যান্য ছাত্রনেতা যেমন নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসতে আগ্রহী নন। তাঁরা এই প্রস্তাব সাফ নাকচ করে জানিয়ে দিয়েছেন, এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলবে। অন্যদিকে, রবিবার রাজধানী ঢাকার সব ওয়ার্ডে ও দেশের সব জেলায় জমায়েত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শাসকদল আওয়ামি লিগ। এছাড়া সোমবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত শোকমিছিল বেরবে বলেও জানানো হয়েছে।