স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ মার্চ। ইউক্রেইনের শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলোর এগিয়ে আসাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা; বিশ্বের অন্যান্য যুদ্ধ কবলিত অঞ্চলের শরণার্থীদেরও ধর্ম, বর্ণ ও জাতীয়তা- নির্বিশেষে একই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়া আগ্রাসন শুরু করার পর গত তিন সপ্তাহে ইউক্রেইন ছেড়ে পালানো শরণার্থীর সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে দ্রুত বেড়ে চলা শরণার্থী সংকটে পরিণত হয়েছে।শরণার্থীদের একটি বড় অংশকেই প্রতিবেশী দেশগুলো আশ্রয় দিয়েছে এবং তাদের সাময়িক আবাস ও কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে। শরণার্থীদের আরেকটি অংশ আরও পশ্চিমের দিকে যেতে শুরু করেছে।২০১৫ সালে সিরিয়ায় যুদ্ধের সময় শরণার্থীদের ঢেউ যখন ইউরোপে যাচ্ছিল, পশ্চিমাদের প্রতিক্রিয়া তখন ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। ইউরোপের দেশগুলো শরণার্থীদের ওই ঢলের বড় অংশকেই আটকে দিয়েছিল গ্রিস ও তুরস্ক সীমান্তে। সেই যুদ্ধে এক কোটি ২০ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়।জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ‘ক্রমবর্ধমান বর্ণবিদ্বেষ ও বৈষম্যের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল। সেই অবস্থায় ইউক্রেইনের এই সংকট শরণার্থীদের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ করে দিয়েছে।
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ক্যাথরিন ম্যাহনি বলেন, “যারা আশ্রয় চায়, তাদের সবার জন্য প্রবেশাধিকারের পক্ষে সুপারিশ চালিয়ে যাবে ইউএনএইচসিআর। সিরিয়া, ইয়েমেন, ইথিওপিয়া এবং অন্য দেশের ও অঞ্চলের আশ্রয়প্রার্থীরাও এর অন্তর্ভুক্ত।”তিনি জানান, শরণার্থী নীতি নিয়ে ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সংস্থা।
“যেমন ধরুন, ‘পুশব্যাক’ চর্চা বন্ধের জন্য আমরা ক্রমাগত আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি – যা শরণার্থীদেরকে একটি নির্দিষ্ট দেশের ভূখণ্ডে প্রবেশকে বাধা দেয়।”ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের সেখানে তিন বছর পর্যন্ত থাকার ও কাজ করার অনুমতি দেবে।হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের পরিচালক জুডিথ সান্ডারল্যান্ড বলেন, ইউক্রেনীয়দের ক্ষেত্রে ইউরোপের যে শরণার্থী নীতি, তা বিশ্বের বাদামি ও কালো মানুষদের অঞ্চল থেকে যাওয়াদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত।“ইউক্রেনীয়দের প্রতি ইইউর নীতিকে স্বাগত জানায় ইউএনএইচসিআর, একই সঙ্গে আফগানিস্তান, সিরিয়া ও ইথিওপিয়ার মত অঞ্চল থেকে আসা শরণার্থীদেরও একই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা জরুরি।”