স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রিন্স চার্লস যখন ব্রিটিশ সিংহাসনে আরোহণ করবেন তখন তার স্ত্রী ডাচেস অব কর্নওয়াল ক্যামিলা হবেন রানি এবং তার মাথায় শোভা পাবে অমূল্য কোহিনূর হীরা খচিত ‘দ্য কুইন মাদার’ মুকুট।
৯৫ বছর বসয়ের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গত শনিবার তার ব্রিটিশ সিংহাসনে অরোহণের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দেশের রাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নির্ধারণী বার্তায় চার্লস রাজা হলে পুত্রবধূ ক্যামিলাকেই ‘রানি কনসর্ট’ হিসাবে দেখার আশা প্রকাশ করেছেন।
এর পরপরই ‘দ্য ডেইলি মেইল’ জানায়, চার্লস রাজা হলে অমূল্য ওই প্লাটিনাম ও হীরার মুকুট ক্যামিলার মাথাতেই শোভা পাবে।
প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানা এবং প্রিন্স চার্লসের বিবাহিত জীবনে এক সময়ের ‘কাঁটা’ ছিলেন ক্যামিলা। প্রিন্সেস ডায়ানা নিজে ১৯৯৫ সালে টিভিতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তার বিবাহিত জীবন ধ্বংস করার জন্য ক্যামিলাকে দোষারোপ করেছিলেন।ডায়ানার সঙ্গে চার্লসের বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য নিন্দার পাত্রীও হয়েছিলেন ক্যামিলা। ১৯৯৭ সালে প্যারিসে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান ডায়ানা। এরপর ‘প্রিন্সেস অব ওয়েলস’ ডায়ানার প্রতি জনগণের ভাবাবেগ আরো বেড়ে যায়। ক্যামিলাকে নীচ বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল তারা।যেহেতু জনমনে প্রয়াত ডায়ানার প্রতি ভালোবাসা এবং তার দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর জন্য ক্যামিলা কিছুটা হলেও দায়ী মনে করার মনোভাব ছিল, তাই ২০০৫ সালে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পরও খানিকটা আড়ালেই থাকতেন ক্যামিলা। এমনকি তিনি ‘প্রিন্সেস অব ওয়েলস’ উপাধিও ব্যবহার করেন না।
ব্রিটিশ সিংহাসনের ইতিহাসে রাজার স্ত্রীকে ‘কুইন কনসর্ট’ বলা হয়। কিন্তু ক্যামিলাকে ঘিরে যেহেতু বিতর্ক আছে। তাই চালর্স ভবিষ্যতে রাজা হলে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ক্যামিলাকে ‘কুইন কনসর্ট’ নয় বরং ‘প্রিন্সেস কনসর্ট’ ডাকা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।শেষ পর্যন্ত ক্যামিলার ভবিষ্যৎ উপাধি ঘিরে থাকা বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। জনগণের উদ্দেশে দেওয়া বার্তায় তিনি বলেছেন, “সময় পূর্ণ হয়ে আমার ছেলে (চার্লস) যখন রাজা হবে, সেই সময়টা যখন আসবে; আমার একান্ত ইচ্ছা, তখন ক্যামিলা ‘কুইন কনসর্ট’ হিসাবে পরিচিতি পাবেন।”প্লাটিনামের তৈরি ‘দ্য কুইন মাদার’ মুকুটে ১০৫ দশমিক ৬ ক্যারেট ওজনের হীরা কোহিনূরের সঙ্গে ঐতিহাসিক অনেক ঘটনা জড়িত। ১৪ শতকে ভারতে এই হীরাটি পাওয়া যায় এবং ওই সময় সেটি বহু হাত ঘোরে।
১৮৪৯ সালে পাঞ্জাব যখন ব্রিটিশ শাসনের অন্তর্ভুক্ত হয় তখন কোহিনূর হীরাটি উপহার হিসেবে রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে পাঠানো হয়। তারপর থেকে সেটি ব্রিটিশ রাজপরিবারের অলঙ্কার ভাণ্ডারে শোভা বাড়াচ্ছে।কোহিনূর হীরার মালিকানা নিয়ে ভারত ও যুক্তরাজ্যসহ অন্তত চারটি দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।১৯৮৭ সালে রাজা ষষ্ঠ জর্জ এর অভিষেক অনুষ্ঠানে রানি এলিজাবেথের জন্য ওই মুকুটটি তৈরি করা হয়। সেময় তিনি ‘কুইন মাদার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মুকুটটি এখন টাওয়ার অব লন্ডনে রাখা আছে।