স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৬ ডিসেম্বর: লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ডেনমার্কের শিপিং কোম্পানি মেয়ার্স্ক।ইদানিং লোহিত সাগরে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের হামলার পর ড্যানিশ শিপিং কোম্পানি এমন সিদ্ধান্ত জানাল।হুতিরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে সমর্থন দিচ্ছে। লোহিত সাগরে ইসরায়েল অভিমুখে যাওয়া জাহাজগুলোকে হামলার নিশানা করার হুমকি দিয়েছে তারা।তেল ও জ্বালানির চালান নিয়ে যাওয়ার জন্য লোহিত সাগর বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচল পথ।
কিন্তু “এপথে চলচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর ওপর সাম্প্রতিককালে যেসব হামলা হচ্ছে তা উদ্বেগজনক এবং নাবিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে তা গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে” বলে বিবিসি-কে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে মেয়ার্স্ক।ড্যানিশ এই জাহাজ কোম্পানি বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিপিং কোম্পানিগুলোর একটি।কোম্পানিটি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার তাদের মেয়ার্স্ক জিব্রালটার কন্টেইনার জাহাজ বাব- আল-মান্দেব প্রণালীতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হতে হতে বেঁচে গেছে এবং শুক্রবার আরেকটি কন্টেইনার জাহাজ হামলার নিশানা হয়েছে। এ ঘটনার পর ওই অঞ্চলে মেয়ার্স্কের সব জাহাজকেই বাব-আল-মান্দেব প্রণালী পাড়ি দিতে নিষেধ করেছে তারা। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যাত্রা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
বাব-আল-মান্দেব লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরকে সংযোগকারী ২০ মাইল চওড়া একটি প্রণালী। এটি ‘গেট অব টিয়ারস’ নামেও পরিচিত। আরব উপদ্বীপের ইয়েমেন এবং আফ্রিকা উপকূলের জিবুতি ও ইরিত্রিয়ার মধ্যে এই প্রণালী অবস্থিত।বিবিসি জানায়, এই রুটে জাহাজ দক্ষিণ দিক থেকে সুয়েজ খালে পৌঁছতে পারে। এটি একটি প্রধান জাহাজ চলাচল পথ। এ পথ দিয়ে জাহাজ যেতে না পারলে জাহাজগুলোকে অনেক ঘুরপথে গন্তব্যে পৌঁছতে হবে।লোহিত সাগরের রুটে প্রতিবছর প্রায় ১৭ হাজার জাহাজ চলাচল করে এবং এ পথে বিশ্বের ১০ শতাংশ বাণিজ্য হয়। ভারত মহাসাগর অভিমুখী কিংবা সেখান থেকে আসা যে কোনও জাহাজকে সুয়েজ খাল পাড়ি দিতে হলে এপথে আসতেই হয়।
রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক গুরুত্বপূর্ণ ওই রুটে মেয়ার্স্কের জাহাজ চলাচল বন্ধ হওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, “(পণ্য) সরবরাহে এর প্রভাব পড়বে… বড়দিনের এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য গন্তব্যে না পৌঁছতে পারার সম্ভাবনাই কেবল বাড়বে।”শুক্রবার লোহিত সাগরে অন্তত দুটো মালবাহী জাহাজ হামলার শিকার হয়েছে। একটিতে ড্রোন হামলা এবং অপরটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হুতিদেরকে এ হামলার জন্য দায়ী করেছে তারা।হুতিরা ড্রোন হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তবে তারা দুটো জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে জানিয়েছে।