স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ জানুয়ারি। তিয়ানআনমেন স্কয়ারে স্বাধীনতার দাবিতে ৩২ বছর আগে হওয়া বিক্ষোভের স্মরণে বানানো নগরীর শেষ স্মারক চিহ্নটিও মুছে ফেলেছে হংকং কর্তৃপক্ষ।
হংকং ইউনিভার্সিটির কাছে একটি পায়ে চলা সেতুর উপর আঁকা ক্যালিগ্রাফিতে ১৯৮৯ সালে স্বাধীনতার পক্ষে বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কয়ারে হওয়া বিক্ষোভে শহীদদের স্মরণ করা হয়। প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা নতুন করে ওই ক্যালিগ্রাফিতে রঙ করে দিত। বিবিসি জানায়, শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ধাতুর পাত বসিয়ে ওই ক্যালিগ্রাফি ঢেকে দেয়। তারা জানিয়েছেন, নিয়মিত সংস্কারের অংশ হিসেবে তারা এটা করেছেন।গত কয়েক বছর ধরে চীন সরকার দেশটির আধাস্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ের উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে। যার অংশ হিসেবে হংকং থেকে একে একে তিয়েনআনমেন বিক্ষোভের স্মরণে বানানো নানা স্মারক মুছে ফেলা হচ্ছে।
রাজনৈতিক স্বাধীনতার দাবিতে ১৯৮৯ সালে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে জড়ো হয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা বিক্ষোভ করেছিল। বিক্ষোভ দমনে চীন সরকার ওই বছর জুনে সেনাবাহিনী নামায় এবং সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের উপর সরাসরি গুলি চালায়।চীন সরকারের হিসাব অনুযায়ী, বিক্ষোভে ২০০ বেসামরিক নাগরিক এবং বেশ কয়েক ডজন নিরাপত্তা সদস্য নিহত হয়েছেন।কিন্তু বেসরকারিভাবে বিক্ষোভে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার দাবি করা হয়।তিয়েনআনমেন বিক্ষোভের একটি ভিডিও জগৎবিখ্যাত হয়। ওই ভিডিওতে রাস্তায় এক লোককে ভয়ডরহীন ভাবে খালি হাতে মাথা উঁচু করে সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্কের সারির সামনে দাঁড়িয়ে সেগুলোর গতি রোধ করতে দেখা যায়।
চীন সরকারের জন্য তিয়ানআনমেন স্কয়ারের বিক্ষোভ সব সময়ই খুবই সংবেদনশীল বিষয়। তারা এটি নিয়ে কথা বলতে দিতে চায় না।চীনের যে দুই-একটি এলাকায় জনসম্মুখে তিয়ানআনমেন বিক্ষোভ স্মরণে আনুষ্ঠান আয়োজন করা বা স্মারক চিহ্ন ছিল হংকং তার অন্যতম। চীনের কমিউনিস্ট সরকার এখন হংকংয়েও তাদের সমালোচনার গলা টিপে ধরেছে।বিবিসি জানায়, গত মাসে ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের বিখ্যাত স্ট্যাচু ‘দ্য পিলার অব শেম’ (লজ্জার স্তম্ভ) সরিয়ে ফেলা হয়। তারপর নগরীর আরো দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তাদের স্মারক সরিয়ে ফেলে। তিয়ানআনমেন বিক্ষোভের সেই বিভীষিকাময় স্মৃতির স্মরণে মোমবাতি মিছিলের আয়োজন করায় এ মাসের শুরুতে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকর্মী চাউ হ্যাং তাং কে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।