স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,১৮ জুলাই: রাশিয়ার সঙ্গে ক্রাইমিয়া উপদ্বীপকে সংযুক্ত করা সেতুটি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার একদিন পর গাড়ি চলাচলের জন্য সেটি আংশিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ক্লিপে রাশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাড়িগুলো কের্চ প্রণালীর ওপর দিয়ে যাওয়া সেতুটির একক একটি লেন ব্যবহার করছে। সোমবার স্থানীয় সময় ভোররাতে সেতুটিতে একটি বা দু’টি বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সেতুটির সড়ক অংশের একটি সেকশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় ছুটিতে ঘুরতে আসা এক রুশ দম্পতি নিহত ও তাদের কন্যা আহত হন।
এ বিস্ফোরণের জন্য ইউক্রেইনকে দায়ী করে রাশিয়া বলেছে, দেশটি দুটি সমুদ্রগামী ড্রোন দিয়ে হামলাটি চালিয়েছে।রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী মারাত খুসনুলিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, তাতে দেখা গেছে, রাতের বেলা গাড়িগুলো সেতুটি পার হচ্ছে।সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সেতুর দুই লেনেই গাড়ি চলাচল শুরু করা যাবে, এমন আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।রাশিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় সেতুর একটি স্প্যান বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও কোনো পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।২০১৪ সালে এক গণভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে ইউক্রেইনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপটি নিজেদের ভূখণ্ডভুক্ত করে নেয় রাশিয়া। তবে ওই গণভোট আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি।২০১৮ সালে ক্রাইমিয়া সেতু নামে পরিচিত কের্চ সেতু উদ্বোধন করে রাশিয়া। এই সেতুটি ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার মূলভূখণ্ডের সড়ক ও রেল যোগাযোগের সূচনা করে।সোমবারের বিস্ফোরণে সেতুটি সড়ক অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সমান্তরালভাবে যাওয়া রেল সেতুটি আক্রান্ত হয়নি, সেটি অক্ষত আছে।
ইউক্রেইন আনুষ্ঠানিকভাবে এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। কিন্তু দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বিবিসি রুশকে জানিয়েছেন, তারা এই হামলাটি চালিয়েছে এবং হামলায় পানিতে চলাচল উপযোগী ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।সেতুতে হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে রাশিয়া বলেছে, গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন অবকাঠামোতে হামলা একটি সন্ত্রাসী কাজ। রাশিয়ার সামরিক বাহিনী এর জবাব দেবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।ইউক্রেইনের বিমান বাহিনী রাতে ওদেসা ও অন্যান্য দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরে হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করেছিল। এ ঘটনার পর রাশিয়া ইউক্রেইনের বন্দরগুলো থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তি আর না বাড়ানোর কথা জানিয়ে দেয়। সোমবার এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। তবে শস্য চুক্তির মেয়াদ না বাড়ানোর সঙ্গে সেতুতে হামলার কোনো সম্পর্ক নেই এবং এ সিদ্ধান্ত প্রতিশোধমূলক নয় বলে দাবি করেছে মস্কো।এই সেতুটি ইউক্রেইনে যুদ্ধরত রুশ বাহিনীর সরবরাহ পাঠানোর গুরুত্বপূর্ণ রুট। এই সেতুতে যানবাহন চলা বন্ধ থাকলে তা রুশ বাহিনীর রসদ সরবরাহের ওপর চাপ সৃষ্টি করতো।গত বছরও এই কের্চ সেতুতে হামলা ঘটনা ঘটেছিল। অক্টোবরের ওই হামলার পরও সেতুটির সড়ক অংশের এক পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে ফেব্রুয়ারিতে সেতুটি পুরোপুরি খুলে দেওয়া হয়।