স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২১ জুন: টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে আটলান্টিক মহাসাগরে ডুব দিয়ে নিখোঁজ পর্যটকবাহী ডুবোযান টাইটানের খোঁজে তল্লাশিরত কানাডার একটি আকাশযান পানির নিচে ‘শব্দ’ শনাক্ত করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড জানিয়েছে।বুধবার ভোররাতে ধারাবাহিক কয়েকটি টুইটে তারা জানায়, মঙ্গলবারের এ অগ্রগতি অনুসন্ধানকারী দলকে তাদের পানির নিচের রবোটিক (আরওভি) তল্লাশি অভিযানের এলাকা নতুনভাবে র্নিধারণ করে ‘ওই শব্দের উৎস বের করার উদ্যোগ নিতে’ সহায়তা করবে।আরওভি (দূর থেকে চালিত যান) মাধ্যমে নতুন করে নির্ধারিত এলাকাগুলোতে যে তল্লাশিগুলো চালানো হয়েছে এখনও পর্যন্ত সেগুলো নিস্ফল হলেও অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড। কানাডার একটি পি-৩ আকাশযান টাইটানের খোঁজে একটি অনুসন্ধান এলাকায় পানির নিচের ওই ‘শব্দ’ শনাক্ত করেছে বলে কোস্টগার্ড নিশ্চিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম মার্কিন সরকারের অভ্যন্তরীণ মেমো উদ্ধৃত করে সেটি ‘আঘাতের মতো শব্দ’ বলে জানিয়েছে।
কিন্তু এই শব্দ কতোক্ষণ স্থায়ী ছিল তা পরিষ্কার হয়নি এবং কোস্টগার্ডও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।সিএনএন ও রোলিং স্টোন সাময়িকী পৃথকভাবে জানিয়েছে, কানাডীয় বিমানটি তল্লাশি এলাকায় ৩০ মিনিটের ব্যবধানে শব্দগুলো শনাক্ত করেছে। টাইটান নামের ওই টুরিস্ট সাবমেরিন পাঁচজন আরোহী নিয়ে রোববার কানাডার উপকূলীয় আটলান্টিক মহাসাগরে ডুব দেওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় এর সঙ্গে পানির ওপরে থাকা জাহাজ পোলার প্রিন্সের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।\এরপর থেকে উত্তর আটলান্টিকের বিশাল এলাকাজুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু হলেও মঙ্গলবার শেষ খবর পর্যন্ত ডুবোযানটির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।ডুবোযানটিতে থাকা বাতাসের সরবরাহ দিয়ে বৃহস্পতিবার ১০.০০ জিএমটি পর্যন্ত চলা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর আরোহীদের নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো অক্সিজেন যানটিতে থাকবে না।১৯১২ সালে ইংল্যান্ডের নিউ সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে প্রথম যাত্রায় বিশাল আইসবার্গের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল তখনকার সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী জাহাজ টাইটানিক, প্রাণ গিয়েছিল দেড় হাজার মানুষের।
দুটুকরো হয়ে যাওয়া টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষটি রয়েছে আটলান্টিকের ৩ হাজার ৮০০ মিটার নিচে। ১৯৮৫ সালে ওই ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। আটলান্টিক মহাসাগরের এ এলাকাটি কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেইন্ট জোন্স থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণে।পর্যটন সংস্থা ওশেনগেইট টাইটানিকের ওই ধ্বংসাবশেষ দেখাতে নিয়ে যায় পর্যটকদের। সেজন্য তারা ব্যবহার করে কার্বন-ফাইবারের তৈরি প্রায় ট্রাকের সমান আকারের একটি সাবমারসিবল বা ডুবোযান, যার নাম টাইটান। এটি সাগরতলের ৪০০০ মিটার পর্যন্ত গভীরে যেতে সক্ষম।এর আরোহীদের মধ্যে ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান এবং ব্রিটিশ অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের সঙ্গে ফ্রান্সের নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি পল হেনরি নারজুলেত ও ওশেনগেইটের প্রধান নির্বাহী স্টকটন রাশও রয়েছেন। টাইটানের খোঁজে তল্লাশি অভিযানটি যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের বোস্টন শহর থেকে পরিচালিত হচ্ছে।