স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,২৭ ফেব্রুয়ারি: ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা সহিংসতা কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গতকাল রোববারের বৈঠকের পর দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েল বলেছে, চার মাস পর্যন্ত দখলকৃত পশ্চিম তীরে নতুন বসতি স্থাপনের আলোচনা স্থগিত রাখা হবে।জর্ডানের আকাবা শহরে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান ও মিসরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিদের আলোচনা হয়। কয়েক বছরের মধ্যে এ ধরনের বৈঠক এই প্রথম।বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ছয় মাসের জন্য পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের অনুমোদন বন্ধ রাখা হবে।বিবৃতিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সহিংসতা প্রতিরোধে দেশ দুটি ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। দেশ দুটি সহিংসতা কমিয়ে আনার প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। দুই দেশ পূর্ববর্তী চুক্তির প্রতি তাঁদের অঙ্গীকার সুনিশ্চিত করেছে।জর্ডান, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এ সমঝোতা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সম্পর্ক উন্নত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
তবে গাজার ক্ষমতায় থাকা ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক দল হামাস এ বৈঠককে অর্থহীন বলেছে। বৈঠকে পশ্চিম তীরভিত্তিক ফিলিস্তিনি সরকার অংশ নেওয়ায় নিন্দা জানিয়েছে হামাস।আগামী মাসের শেষ দিকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। রমজানকে সামনে রেখে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার উদ্বেগ নিরসনে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।তবে এসব পদক্ষেপের কারণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট সরকার সমস্যার মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের দায়িত্বে নিয়োজিত। তিনি টুইটে বলেছেন, ‘জর্ডানে তাঁরা কী আলোচনা করেছেন আর কী করেননি, তা নিয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। তবে একটা জিনিস আমি জানি—ইহুদি বসতি সম্প্রসারণকাজে কোনো ভবনের নির্মাণকাজ বা উন্নয়ন এক দিনের জন্যও থেমে থাকবে না।’
ফিলিস্তিনিরা পশ্চিম তীর ও গাজায় স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে এসব অঞ্চলের দখল নেয় ইসরায়েল। ২০১৪ সাল থেকে শান্তি আলোচনা স্থবির হয়ে পড়েছে। ফিলিস্তিনিরা বলছে, ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের কারণে কার্যকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা ক্ষুণ্ন হয়েছে।১২ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েল পশ্চিম তীরে নয়টি ইহুদি বসতির পূর্ববর্তী অনুমোদন দিয়েছে। আগে থেকে নির্মিত বসতিগুলোর মধ্যে নতুন বসতি সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে।সে সময় নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল আগের পরিকল্পনা অনুসারে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের কাজ চালিয়ে যাবে।জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গত ২০ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বসতি সম্প্রসারণে ইসরায়েলের পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে।জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এক বিবৃতিতে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহকে ঐতিহাসিক আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।আগামী মাসে মিসরে শারেম আল-মেখে আবার বৈঠকে বসবেন অংশগ্রহণকারীরা। তাঁরা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এ চুক্তিকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছেন।হামাস কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে বলেছেন, এ বৈঠকে কোনো পরিবর্তন আসবে না।