Wednesday, January 22, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদম্যাকার্থি না হলে কে হবেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার

ম্যাকার্থি না হলে কে হবেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক ,৬জানুয়ারি:

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হওয়ার পরই এটাও ধারণা করা হচ্ছিল যে দলটির নেতা কেভিন ম্যাকার্থি পরিষদের স্পিকার হবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা ঘটল না। মঙ্গলবার তিন দফা ও বুধবার তিন দফা ভোটেও নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। বৃহস্পতিবারও এক দফা ভোটে কাঙ্ক্ষিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি তিনি। ফলে প্রশ্ন উঠছে ম্যাকার্থি না হলে কে হবেন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার।

কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার নির্বাচিত হতে ২১৮টি ভোটের প্রয়োজন। কিন্তু দীর্ঘদিনের রিপাবলিকান শিবিরের নেতা ম্যাকার্থি এই ভোট পাননি। আর স্পিকার নির্বাচিত না হওয়ায় মধ্যবর্তী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাঁরা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে, তাঁরা শপথ নিতে পারছেন না; পরিষদের কার্যক্রম থমকে রয়েছে। যদিও ক্যালিফোর্নিয়ার এই আইনপ্রণেতা এখনো গো ধরে আছেন, দলের পক্ষ থেকে তিনিই জয় ছিনিয়ে আনবেন, প্রতিনিধি পরিষদের সেই বিখ্যাত হাতুড়ি তাঁর হাতেই উঠবে। কিন্তু বুধবার যখন দফায় দফায় ভোট হয়, তখন অন্য প্রার্থীদের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

স্টিভ স্কেলিস

২০১৯ সাল থেকে প্রতিনিধি পরিষদে ম্যাকার্থির ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন স্টিভ স্কেলিস। অর্থাৎ প্রতিনিধি পরিষদে ম্যাকার্থি যখন বিরোধী শিবিরের নেতা, তখন উপনেতা স্কেলিস। অভিজ্ঞতার দিক থেকেও তিনি পিছিয়ে নেই। এ নিয়ে আটবারের মতো প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৭ সালে কংগ্রেসের বার্ষিক বেসবল প্রতিযোগিতার আগে অনুশীলনের সময় উগ্র বামপন্থীর গুলিতে আহত হয়েছিলেন তিনি। প্রতিনিধি পরিষদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে কাকে বসানো হবে, গত নভেম্বরে রিপাবলিকান পার্টির সেই অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে জিতেছেন তিনি।স্পিকার নির্বাচনে ম্যাকার্থি দুবার হেরে যাওয়ার পর তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন স্কেলিস। তৃতীয় দফা ভোটে ম্যাকার্থির প্রার্থিতা মনোনয়ন দিয়ে স্কেলিস ঘোষণায় বলেছিলেন, ‘বড় কোনো অর্জন করতে’ রিপাবলিকান পার্টির পরিষদের সদস্যদের একতাবদ্ধ হন।তবে স্কেলিসের জন্য পথের কাঁটা ম্যাট রোসেনডেল। ম্যাকার্থির স্পিকার পদে বসতে যে ২০ জন আইনপ্রণেতা বিরোধিতা করছেন, তাঁদের অন্যতম রোসেনডেল। গত মঙ্গলবারই তিনি বলেছেন, গত ১০ বছরে প্রতিনিধি পরিষদের যাঁরা রিপাবলিকান পার্টির নেতা ছিলেন, তাঁরা কেউ গ্রহণযোগ্য নন। অর্থাৎ ম্যাকার্থি বা স্কেলিস কাউকেই স্পিকার পদে বসতে দিতে চান না রোসেনডেল।২০১৯ সাল থেকে প্রতিনিধি পরিষদে ম্যাকার্থির ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন স্টিভ স্কেলিসফাইল ছবি: এএফপি

এলিস স্টেফানিক

স্পিকার হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন এলিস স্টেফানিক। ২০১৪ সালে প্রথম প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। তখন তাঁর বয়স ছিল ৩০ বছর। সেই সময় পরিষদের সবচেয়ে কম বয়সী নারী সদস্য ছিলেন তিনি। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির নামকরা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব পলিটিকসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।

নিউইয়র্কের আইনপ্রণেতা এলিস স্টেফানিক মধ্যপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তবে সম্প্রতি ডানপন্থী হিসেবে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। সম্প্রতি যাঁরা সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জোরালো সমর্থন দিচ্ছেন, তাঁদের একজন এই নারী।২০২১ সালের মে মাসে ট্রাম্পের সমালোচনা করে হাউস রিপাবলিকান কনফারেন্সের প্রধানের পদ হারান লিজ চেনি। পরে এই পদে বসেছিলেন এলিস স্টেফানিক। নভেম্বরের নির্বাচনে এই পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। রিপাবলিকান চতুর্থ সর্বোচ্চ পদ এটি।এলিস স্টেফানিকও ম্যাকার্থিকে সমর্থন করছেন। মঙ্গলবার প্রথম দফায় যখন স্পিকার নির্বাচনের ভোট হয়, তখন ম্যাকার্থিকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন এলিস স্টেফানিক।

আলোচনায় আরও নাম

ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে যাঁরা বিদ্রোহ করেছেন, তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন অ্যান্ডি বিগস। অ্যারিজোনার এই আইনপ্রণেতাকে ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে প্রথম দফায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যদিও তিনি মোটে ভোট পেয়েছেন ১০টি। এর মধ্যে নিজের ভোটটিও রয়েছে। প্রথম দফার ভোটে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল জিম জর্ডানকেও। প্রথম দফায় তিনি পেয়েছিলেন ৬ ভোট। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি ম্যাকার্থিকে সমর্থন দিয়েছিলেন। স্পিকার পদের চেয়ে পরিষদের জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন জিম।অ্যান্ডি বিগস ও জিম জর্ডানকে বাদ দিলে স্পিকার পদের জন্য আরেকটি নাম উচ্চারিত হয়। সেটি হলো ডেমোক্রেটিক পার্টির হাকিম জেফরিস। ডেমোক্রেটিক পার্টিতে কোনো বিভক্তি নেই। ফলে দলের ২১২টি ভোটই তিনি পেয়েছেন।

রিপাবলিকান পার্টির ছয় আইনপ্রণেতা যদি দলের প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে হাকিমকে ভোট দেন, তবে তিনি স্পিকার হয়ে যাবেন। যদিও এই সম্ভাবনা একেবারেই কম।যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুসারে, প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার হতে এই কক্ষের নির্বাচিত সদস্য হতেই হবে, এমনটা জরুরি নয়। তবে যে–ই স্পিকার হবেন, তাঁকে আগে আইনপ্রণেতাদের কাছ থেকে মনোনয়ন পেতে হবে। এরপর তিনি স্পিকার পদের ভোটে অংশ নিতে পারবেন। সাধারণত পরিষদের স্পিকার এই কক্ষের একজন আইনপ্রণেতাই হয়ে থাকেন। তবে মনোনয়নে ব্যতিক্রম দেখা গেছে বেশ কয়েকবার। সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ২০১৯ সালে। ওই সময় বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল স্পিকার হিসেবে। তবে এবার কি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই পদের জন্য মনোনয়ন পেতে পারেন?

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য