স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৮ ডিসেম্বর: বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ কিংবা মানবিক ত্রাণ সরবরাহে নিয়োজিত দাতা সংস্থায় নারীদের কাজ করার ওপর তালেবান নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়ে আফগানিস্তানে নারী ও মেয়েদের অবাধ, সমান ও অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ চেয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।মঙ্গলবার পরিষদের ১৫ সদস্যের ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তানে হাই স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে, নারীদের শিক্ষা গ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা ‘মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার মর্যাদার যে ক্রমাগত ক্ষয় হচ্ছে, তার প্রতিনিধিত্ব করছে’।মঙ্গলবার টুইটারে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস নারীদের ওপর এসব নিষেধাজ্ঞাকে ‘অযৌ্ক্তিক মানবাধিকার লংঘন’ অ্যাখ্যা দিয়ে সেগুলো তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
“নারী ও মেয়েদের বাদ দেওয়া এবং চুপ করিয়ে রাখার এসব পদক্ষেপ আফগান জনগণের সম্ভাব্য অপরিমেয় দুর্ভোগ এবং বড় ধাক্কার কারণ হতে চলেছে,” বলেছেন তিনি।গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে আফগানিস্তান নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের সময়ই তালেবান নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা জানায়। মেয়েদের হাই স্কুলে পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলতি বছরের মার্চ থেকে বলবৎ রয়েছে।আর শনিবার কট্টরপন্থি গোষ্ঠীটি দেশি-বিদেশি সব এনজিওতে নারীদের কাজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।“এসব বিধিনিষেধ আফগানিস্তানের জনগণকে দেওয়া তালেবানের প্রতিশ্রুতি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশার সঙ্গে সাংঘর্ষিক,” বিবৃতিতে বলেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তারা উনামা নামে পরিচিত আফগানিস্তানে জাতিসংঘের রাজনৈতিক মিশনের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থনও ব্যক্ত করেছে।তালেবান এনজিওতে নারীদের কাজে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর রোববারই চারটি বড় বৈশ্বিক দাতা সংস্থা আফগানিস্তানে তাদের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে।
লাখ লাখ আফগানকে ত্রাণ সাহায্য দিয়ে আসা এ সংস্থাগুলো বলছে, নারী কর্মীদের ছাড়া তারা তাদের কর্মকাণ্ড চালাতে পারবে না।গত সপ্তাহে জাতিসংঘের ত্রাণপ্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, আফগানিস্তানের ৯৭ শতাংশ নাগরিক দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছেন; বেঁচে থাকতে দেশটির জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশেরই ত্রাণ দরকার, ২ কোটি মানষ তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি আর নিষেধাজ্ঞার কারণে স্কুলে যেতে পারছে না ১১ লাখ কিশোরী।কট্টরপন্থি তালেবান গত বছরের অগাস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করলেও তাদের সরকার এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি।দুই দশক আগে ক্ষমতায় থাকার সময়ও তারা মোটাদাগে নারীদের শিক্ষা ও কাজে নিষেধাজ্ঞাই দিয়ে রেখেছিল। এবার ক্ষমতা নেওয়ার আগে তারা নারীদের ব্যাপারে উদার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজে তা দেখা যাচ্ছে না।