স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২ ডিসেম্বর : চীনের প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ৩০ হাজার কোটি ইউরোর বড় ধরনের একটি বৈশ্বিক বিনিয়োগ পরিকল্পনা সবিস্তারে প্রকাশ করেছে।
চীন তাদের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ এর মধ্য দিয়ে বিশ্বে, বিশেষ করে এশিয়ায় বড় ধরনের প্রভাব বিস্তার করেছে।চীনের এই উদ্যোগেরই ‘সত্যিকারের বিকল্প’ হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে ইইউ’র বিনিয়োগ পরিকল্পনাকে, যাকে বলা হচ্ছে ‘গ্লোবাল গেটওয়ে স্ট্র্যাটেজি’।
কোভিড-১৯ মহামারী খুবই স্পষ্টভাবে সামনে নিয়ে এসেছে বৈশ্বিক অবকাঠামোর নানা দুর্র্বল দিকের কারণে মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি।বিশ্বের অবকাঠামোয় যে অসম্পূর্ণতা, ফাঁক আছে তা পূরণ করাসহ অবকাঠামো-সংশ্লিষ্ট টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অংশীদার দেশগুলোতে এই প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হবে ইইউ। এই উন্নয়ন হবে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ এবং পরিবেশের ক্ষতি না করার পথে থেকেই।চীন তাদের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে থাকা ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের মধ্য দিয়ে নতুন নতুন সড়ক, বন্দর, রেলওয়ে, সেতু উন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্যকে উন্নত করছে। এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এশিয়া, ইন্দো-প্যাসিফিক, আফ্রিকা, এমনকী ইউরোপের বলকান অঞ্চলেও।
তবে চীনের এ উদ্যোগ নিয়ে সমালোচনা আছে। তারা ঋণ দেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশগুলোকে ঋণের ফাঁদে ফেলছে বলে অভিযোগ আছে।জার্মান মার্শাল ফান্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অ্যানড্রু স্মল বিবিসি-কে বলেন, গ্লোবাল গেটওয়ে উদ্যোগের মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই প্রথম একসঙ্গে একটি প্যাকেজ নিয়ে অগ্রসর হওয়া এবং আর্থিক কৌশল নির্ধারণের চেষ্টা নিয়েছে, যাতে চীনের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা দেশগুলো একটি বিকল্প পথ পেতে পারে।বুধবার ‘গ্লোবাল গেটওয়ে’ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিন। এই স্কিম যাতে আস্থাশীল হয়ে উঠতে পারে সেই আশা প্রকাশ করেন তিনি। টেকসই প্রকল্প হাতে নেওয়ার জন্য দেশগুলোর বিশ্বাসযোগ্য পার্টনার চাই বলেও জানান তিনি।
গ্লোবাল গেটওয়ের জন্য যে কোটি কোটি ইউরো প্রয়োজন, তা সদস্য রাষ্ট্র, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি খাত থেকে কিভাবে সংগ্রহ করা যায় তা খতিয়ে দেখছে ইইউ।
গত মাসে এক ব্রিফিংয়ে ইইউ-এ নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং মিং বলেছিলেন, ইইউ’র গ্লোবাল গেটওয়ে স্ট্র্যাটেজি উন্মুক্ত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সহায়ক হলে বেইজিং একে স্বাগত জানাবে।তবে এই অবকাঠামো প্রকল্পকে ভূ-রাজনৈতিক হাতিয়ার করে তোলার কোনওরকম চেষ্টা চললে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা পূরণ হবে না বলেও চীন হুঁশিয়ারও করে দিয়েছে।