Wednesday, February 12, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদযুদ্ধ বন্ধে চীনকে রাশিয়ার ওপর চাপ দেওয়ার আহ্বান জার্মানির

যুদ্ধ বন্ধে চীনকে রাশিয়ার ওপর চাপ দেওয়ার আহ্বান জার্মানির

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৫ নভেম্বর: ইউক্রেইনে চলমান যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়াকে চাপ দিতে চীনকে আহ্বান জানিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। শুক্রবার একদিনের চীন সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। ইউক্রেইন যুদ্ধে রাশিয়া পারমাণবিক হামলার যে হুমকি সৃষ্টি করেছে ‘তা কাণ্ডজ্ঞানহীন এবং অত্যন্ত বিপজ্জনক’- এ ব্যাপারে চীন ও জার্মানি একমত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন শলৎস। পারমাণবিক অস্ত্রের ঝুঁকি সৃষ্টি করে রাশিয়া সীমা অতিক্রম করছে উল্লেখ করে শলৎস রাশিয়ার ওপর চীনকে প্রভাব খাটানোর আহ্বান জানান এবং বলেন, ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধে চীনের দায়িত্ব রয়েছে।জবাবে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইউক্রেইন এবং রাশিয়াকে আবারও আলোচনায় বসার আহ্বান জানান এবং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে সতর্ক করেন।তবে রাশিয়ার ইউক্রেইন আগ্রাসনের নিন্দা জানাতে অসম্মতি জানিয়েছেন শি। তিনি বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিৎ শান্তিপূর্ণভাবে এই সংকট সমাধানে সহায়তা করা এবং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার বা ব্যবহারের হুমকির বিরোধিতা করা।শি চীনের একচ্ছত্র নেতা হিসেবে নিজের অবস্থান শক্ত করার পর বেইজিংয়ে জার্মান চ্যান্সেলরের এই সফর সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। জার্মানিতে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। শলৎসের মাত্র ১১ ঘণ্টার এই চীন সফর নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। 

গত মাসেই কমিউনিস্ট পার্টির ন্যাশনাল কংগ্রেসে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতা পোক্ত করেছেন শি। এরপর এই প্রথম কোনও পশ্চিমা নেতা চীন সফর করলেন।  তাছাড়া, ২০১৯ সালে কোভিড মহামারী শুরুর পর থেকেও প্রথম জি-৭ নেতা হিসেবে এটিই শলৎসের প্রথম চীন সফর।জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশই শলৎসের সফরের সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এ সফর চীনে শি’র মতো একজন স্বৈরাচারী শাসকের খ্যাতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে উদ্বিগ্ন তারা।তবে পূর্বসূরি আঙ্গেলা মার্কেলের মতো শলৎসেরও বিশ্বাস, কেবল চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করেই বিশ্বের সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। শি’র সঙ্গে বৈঠকে যেসব বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে, সেসব বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শলৎস।

বৈঠক থেকে কী অর্জন করলেন তিনি?সময় যে খুব কঠিন তা স্বীকার করে নিয়েছেন দুই নেতাই; ‘পরিবর্তন ও অশান্তির এই সময়ে’ একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন শি জিনপিং।ইউক্রেইন যুদ্ধ, বিশ্বের খাদ্য ও জ্বালানি সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন ও মহামারী নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে একমত হয়েছেন দুইজন।তাইওয়ান পরিস্থিতি নিয়ে জার্মানির অবস্থানও পুনরায় জানিয়ে দিয়েছেন শলৎস বলেছেন, বিদ্যমান অবস্থার যে কোনও পরিবর্তন হতে হবে শান্তিপূর্ণভাবে ও পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে। তাছাড়া, মানবাধিকারও অবশ্যই রক্ষা করতে হবে, বিশেষ করে শিনজিয়াংয়ের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের।বিবিসি জানায়, ইউরোপের দেশগুলো এই সফরকে নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। চীন ইস্যুতে ব্যতিক্রমী পথ অবলম্বনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ওলাফ শলৎস। বলেছিলেন, “চীন বদলালে তাদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাতে হবে।”তবে এ নিয়ে জার্মানি এবং ইউরোপের অনেকেরই তার ওপর আস্থা নেই। কারণ,  হামবুর্গে একটি বন্দর প্রকল্পে চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত কোম্পানি ‘কসকো’-র অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্কের মধ্যে মন্ত্রিসভার ছয় মন্ত্রীর বিরোধিতা উপেক্ষা করে শলৎস তা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নরম মনোভাব দেখিয়েছেন৷বার্লিনে অনেকেরই সন্দেহ, শলৎস এটি করার কারণ হচ্ছে, তিনি চীনে একটি ‘উপহার’ নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। আবার চীন সফরে যাওয়ার সময় শলৎস উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলও নিয়ে গেছেন। জার্মানির গ্রিন পার্টির এক রাজনীতিবিদের মতে, এতে এই বার্তাই পাওয়া যায় যে, জার্মানি অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে চায়।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য