স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১২ সেপ্টেম্বর : পাপুয়া নিউ গিনির (পিএনজি) পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত চার জন নিহত, আরও বেশ কয়েকজন আহত এবং সম্পদ ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ভূমিকম্পটির উৎপত্তি রোববার স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ১০টায় দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কাইনানতু শহর থেকে ৬৭ কিলোমিটার পূর্বে এবং লায়ে শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে। ভূমিকম্পটি প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী পোর্ট মোরেসবিতেও অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পটি মূলত দুর্গম এলাকায় হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পুরো মাত্রা স্পষ্ট হওয়া যায়নি। প্রশান্ত মহাসাগরের ভূমিকম্পপ্রবণ ‘রিং অব ফায়ারের’ ওপর অবস্থিত হওয়ায় পাপুয়া নিউ গিনিতে নিয়মিতই ভূমিকম্প হয়। ভূপৃষ্ঠের টেকটোনিক প্লেটগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে এই অঞ্চলটি ভূতাত্ত্বিকভাবে খুবই সক্রিয়।পিএনজির সরকার ভূমিকম্পে কারও মৃত্যু হওয়া কথা জানায়নি। কিন্তু জাতিসংঘের অফিস ফর দ্যা কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) এর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক কার্যালয় জানিয়েছে, অন্তত চার জনের মৃত্যু ও চার জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ওসিএইচএ-র পিএনজি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিম টুইটারে পোস্ট করা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মাদাংয়ের রাই উপকূলে ভূমিধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে আর মোরোবের ওয়াউতে তিন জন ধসে পড়া মাটির নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছে।আঞ্চলিক বিদ্যুৎ গ্রিড, ইন্টারনেট ক্যাবল ও আঞ্চলিক মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্তু বিমানবন্দর সচল আছে বলে জানিয়েছে তারা। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে দ্রুত চিকিৎসা দিতে হেলিকপ্টার যোগে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্পের পর পাপুয়া নিউ গিনির বাসিন্দারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়া রাস্তা, ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ও গাড়ি এবং সুপারমার্কেটের তাক থেকে বিভিন্ন পণ্যের পড়ে যাওয়ার ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেছেনজাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লোকজন ভেঙ্গে পড়া কাঠামো ও উপর থেকে পড়া ইটপাথরের টুকরার আঘাতে আহত হয়েছে। কিছু স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাড়ি, গ্রামীণ সড়ক ও মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।দুর্গত এলাকার বিদ্যুৎ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুরো পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
অতি শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল পাপুয়া নিউ গিনিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পিএনজি ডাটাকোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামুদ্রিক কেবল নেট ওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইন্টারনেট সেবা ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।ভূমিকম্পের পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের সুনামি সতর্কতা সিস্টেম সুনামি সতর্কতা জারি করলেও কিছু সময় পর বিপদ কেটে গেছে বলে জানায় তারা। তাৎক্ষণিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার প্রতি সুনামির কোনো হুমকি ছিল না বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া ব্যুরো।২০১৮ সালে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্প দেশটির দুর্গম পাহাড়ি উচ্চভূমিতে শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কয়েক হাজার ঘরবাড়ি।