Thursday, November 13, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদহামলা চালাতে পারে ইজরায়েল! কাতারকে দেখে আতঙ্কিত তুরস্ক

হামলা চালাতে পারে ইজরায়েল! কাতারকে দেখে আতঙ্কিত তুরস্ক

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৮ সেপ্টেম্বর ।। হামাস নেতাদের শেষ করতে সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় গোলাবর্ষণ করেছে ইজরায়েলি সেনা। সেই ঘটনার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তুরস্ক। দোহার মতো একই কায়দায় তাদের দেশেও ইজরায়েল হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে অঙ্কারা। বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল জেকি আকতুর্ক সতর্ক করে বলেন, “কাতারের মতো ইজরায়েল আরও অন্যান্য জায়গায় তাদের হামলার ঝাঁজ প্রসারিত করবে। নিজের দেশ তো বটেই, গোটা অঞ্চলকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে তারা। তুরস্কের উপর হামলা হলে তার ফল ভালো হবে না।”

ইজরায়েল ও তুরস্কের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইহুদি দেশটির জন্ম কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি তুরস্ক। শুধু তাই নয়, প্যালেস্তাইনের সমর্থক হিসাবে প্রথম সারিতে যে দেশগুলির নাম উঠে আসে, তার মধ্যে অন্যতম হল তুরস্ক। গাজায় ইজরায়েলের হামলা নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। ইহুদি আক্রমণকে ‘গণহত্যা’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি। ইজরায়েলের অভিযোগ, হামাসের প্রভাব বিস্তারে এবং তাদের হাত শক্ত করতে আঙ্কারার মদত রয়েছে। সম্প্রতি ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, “হামাসকে নির্মূল করতে আমরা যে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারি। সেটা সীমান্তের বাইরেও হতে পারে। নিজেদের রক্ষা করার অধিকার আমাদের আছে।”
ওয়াকিবহল মহলের মতে, এর মাধ্যমে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী আসলে তুরস্ককেই কড়া বার্তা দিয়ে রাখল। উল্লেখ্য, মিউনিখ হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে ১৯৭২ সালে অপারেশন ‘র‍্যাথ অফ গড’ শুরু করে ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ। খুঁজে খুঁজে হামলাকারীদের শেষ করে ইহুদি দেশটি। এবার হামাসকে মুছে ফেলতে সেই ধরনেরই যে কোনও কৌশল নিয়েছে নেতানিয়াহুর দেশ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

কিন্তু চাইলেই কি তুরস্কে সহজে হামলা চালাতে পারবে ইজরায়েল? বিশেষজ্ঞদের মতে, দোহার মতো এক্ষেত্রে বিষয়টি অত সহজ হবে না। কারণ, সামরিক শক্তির দিক থেকে দোহার থেকে অনেকটাই এগিয়ে আঙ্কারা। পাশাপাশি, সামরিক শক্তির বৃদ্ধি ঘটাতে জোরকদমে কাজ করছে তারা। আরও সমৃদ্ধ করা হচ্ছে দেশের বায়ুসেনাকেও। অন্যদিকে, ন্যাটোর (নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন) অন্যতম সদস্য হল তুরস্ক। তাই তাদের উপর হামলা হলে তুরস্ক সমঝোতা অনুযায়ী, ন্যাটোভুক্ত অন্য দেশগুলিকে সম্মিলিতভাবে পাশে টানার অধিকার প্রয়োগ করবে। সেক্ষেত্রে তখন সমস্যায় পড়তে পারে ইজরায়েল। আবার তেল আভিভ যদি তুরস্কে হামলা চালায় তখন আঙ্কারার পাশে দাঁড়াতে পারে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারা এবং ইহুদি- বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী, যারা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনে অন্যতম বড় ভূমিকা পালন করেছিল।

তবে এক্ষেত্রে ইজরায়েলেরও কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন- ন্যাটোভুক্ত দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হল আমেরিকা। আমেরিকার সঙ্গে তেল আভিভের যথেষ্ট সখ্যতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আঙ্কারায় হামলা হলে মার্কিন প্রভাবে ন্যাটো কতটা তুরস্কের পাশে থাকবে, সেই প্রশ্নও থাকছে। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলির মধ্যে রয়েছে গ্রিস। গ্রিসের সঙ্গে তুরস্কের বহুদিনের বিবাদ রয়েছে। অন্যদিকে, ব্রিটেন এবং জমার্নি ইজরায়েল-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। সব মিলিয়ে তুরস্কের জন্য পরিস্থিতি তখন জটিল হতে পারে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য