Friday, November 14, 2025
বাড়িরাজ্যযুবক হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছয়জনের শাস্তির দাবিতে আদালত চত্বরে ভিড়, ইন্দ্র নগরে মৌন...

যুবক হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছয়জনের শাস্তির দাবিতে আদালত চত্বরে ভিড়, ইন্দ্র নগরে মৌন মিছিল করে তীব্র প্রতিবাদ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা,  ১২ জুন :  হাড়হিম! বোনের প্রেমে উন্মাদ দাদা নৃশংসভাবে খুন করল তরুণীর প্রেমিককে! আইসক্রিম ফ্রিজারে হতভাগ্যের দেহ পায় পুলিশ। পুলিশ ৬ জনকে আটক করে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডের আর্জি জানিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করে। আদালত চত্বরে জমায়েত হয় এলাকাবাসী। পুলিশ রিমান্ডের আবেদনের পক্ষে ও বিপক্ষে আদালতে জোর সাওয়াল করেন উভয় পক্ষের আইনজীবীরা। এদিকে এলাকায় মৌন মিছিল করলো স্থানীয়রা। জানা যায়, ৮ জুন রবিবার থেকে নিখোঁজ ছিল শরিফুল হাসান। জানা যায় রবিবার রাতে ডাক্তার দিবাকর সাহা নামে এক ব্যক্তি শরিফুলকে গিফট দেওয়ার নাম করে ফোন করে নিয়ে যায়। তারপর থেকে নিখোঁজ ছিল শরিফুল। শরিফুলের পরিবারের পক্ষ থেকে এনসিসি থানায় মিসিং ডায়েরি করা হয়। পাশাপাশি ডাক্তার দিবাকর সাহাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

পুলিশ দফায় দফায় দিবাকরকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে গোটা রহস্যের পর্দা ফাঁস করে। তারপর মঙ্গলবার রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে মোট ৬ জনকে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বুধবার গণ্ডাছড়ার এক পান দোকানের ডিপ ফ্রিজ থেকে উদ্ধার করা হয় শরিফুলের মৃতদেহ। বুধবার পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমার কে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান ত্রিকোণ প্রেমের শিকার শরিফুল। গোটা ঘটনার বিষয়ে বলতে গিয়ে জেলা পুলিশ সুপার জানান শরিফুল একটি যুবতীর সাথে প্রেম করতো। মাঝে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। তারপর ঐ যুবতীর সাথে ভাই সম্পর্কের ডাক্তার দিবাকর সাহার সাথে প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। অর্থাৎ ত্রিকোণ প্রেমের সুত্রপাত। ৮ জুন রাতে ডাক্তার দিবাকর গিফট দেওয়ার নাম করে শরিফুলকে নিয়ে যায় দক্ষিন ইন্দ্রনগর জয়দীপ দাসের বাড়িতে। সেখানে আগে থেকে ছিল অনিমেষ যাদব ও নবনিতা দাস। জয়দীপ দাসের বাড়িতে শ্বাসরুদ্ধ করে শরিফুলকে হত্যা করে ডাক্তার দিবাকর সাহা। ঘটনার দুইদিন পূর্বে একটি ট্রলি ক্রয় করে ঘরে নিয়ে রেখেছিল ডাক্তার দিবাকর সাহা।

 সেই ট্রলিতে শরিফুলের মৃতদেহ ঢুকানো হয়। তারপর জয়দীপ দাসের বাড়ির অপর একটি ঘরে ট্রলিটি রাখা হয়। ৯ জুন ডাক্তার দিবাকর সাহার বাবা দীপক সাহা ও মা দেবিকা সাহা একটি ইকো গাড়ি নিয়ে গণ্ডাছড়া থেকে জয়দীপ দাসের বাড়িতে আসে। তারপর সেই গাড়িতে করে ট্রলি ভর্তি শরিফুলের মৃতদেহ গণ্ডাছড়ায় নিয়ে গিয়ে পান দোকানের ডিপ ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা গোটা ঘটনা স্বীকার করেছে। মঙ্গলবার রাতেই অভিযুক্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতরা হল জয়দেব দাস, ডাক্তার দিবাকর সাহা, অনিমেষ যাদব, নবনিতা দাস, দীপক সাহা ও দেবিকা সাহা। বৃহস্পতিবার ধৃতদের তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডের আর্জি জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করে এনসিসি থানার পুলিশ। সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান আদালতে এইদিন অভিযুক্তদের পুলি রিমান্ডের আবেদনের পক্ষে সাওয়াল করেছেন। কি কারনে তাদের পুলিশ রিমান্ড প্রয়োজন তা আদালতে তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি এইদিন পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আরও দুইটি ধারা যুক্ত করার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়। কারন প্রথমে যখন মামলা হয় তখন সেইটি ছিল অপহরণের মামলা। তারপর উদ্ধার হয়েছে শরিফুলের মৃতদেহ। তাই বর্তমানে আরও দুইটি ধারা যুক্ত করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।অপরদিকে অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী জানান মামলার তদন্তকারি অফিসার অভিযুক্তদের তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে আদালতে। এই আবেদনের উপর এইদিন সাওয়াল করেন তিনি। তিনি পুলিশ রিমান্ডের আবেদনের বিরোধিতা করেছেন। কারন অভিযুক্তদের পুলিশ রিমান্ডের জন্য যে কারন দেখানো হয়েছে, তা সঠিক নয়। তাই তিনি অভিযুক্তদের জেল হেপাজতে পাঠানোর জন্য আবেদন জানিয়েছেন আদালতে। অভিযুক্তদের জামিনের জন্য এইদিন কোন আবেদন জমা করেন নি। অভিযুক্তরা তদন্ত প্রক্রিয়ায় পুলিশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে। এইদিকে শরিফুলের অকাল মৃত্যুতে শোঁকের ছায়া নেমে এসেছে ইন্দ্রনগর এলাকায়। এলাকাবাসিদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে অভিযুক্তদের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি প্রদানের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইন্দ্রনগর এলাকার জনগণ অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে এলাকায় মোমবাতি হাতে নিয়ে মৌন মিছিল সংগঠিত করে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: Alert: Content selection is disabled!!