স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ০৫ ডিসেম্বরঃ অঙ্ক কী কঠিন! মাধ্যমিকের পর তাই আর অঙ্কের ধারপাশে যাননি। ধরুন, উচ্চশিক্ষায় বেছে নিয়েছেন ইতিহাসকে। আবার বায়োলজিও আপনার খুব ভালো লাগে। জীব আর জীববিজ্ঞানের হরেক নতুন নতুন তথ্য আগ্রহ। কিন্তু উচ্চশিক্ষায় তো দুটি বিষয় নিয়ে একসঙ্গে পড়া যায় না। এবার এই মুশকিল আসান করতে নিয়মে একগুচ্ছ বদল আনতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। যা বাস্তবায়িত হলে উচ্চশিক্ষায় নিজের পছন্দের একাধিক ভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়তে পারবে পড়ুয়ারা। আর তা হয়ে উঠবে কেরিয়ারমুখী। এই পরিবর্তন সংক্রান্ত UGC-র প্রস্তাবকে সমর্থন জানাচ্ছে শিক্ষক মহল। খুশি পড়ুয়ারাও। তবে তা বাস্তবায়নের অপেক্ষা।
ইউজিসি-র নতুন খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, স্নাতকের পাশাপাশি স্নাতকোত্তরেও দুটি ভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ থাকবে। এমনকী যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের বছরে দুবার ভর্তি নেওয়ার ক্ষমতা আছে, তারা জুলাই-আগস্ট এবং জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সেশনে ভর্তির প্রক্রিয়া চালু করতে পারবে। থাকবে একাধিক এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্টও। অর্থাৎ যে কোনও সময় কোর্স ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে সার্টিফিকেট পেতে পারে পড়ুয়ারা। আবার পরে ফিরে আসার সুযোগ থাকবে।
বৃহস্পতিবার ইউজিসি-র চেয়ারম্যান এ প্রসঙ্গে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। তাতেই স্পষ্ট হল, শুধু বাংলা বা সমতুল বিষয় নয়, একই সঙ্গে টেকনিক্যাল কোর্সও করতে পারবেন কোনও পড়ুয়া। অর্থাৎ উচ্চমাধ্যমিকে যে পাঠ্যক্রমই থাকুক না কেন, যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষায় পাশ করলেই যে কোনও বিষয় নিয়ে উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হতে পারবে পড়ুয়া। এছাড়াও থাকছে ‘ফ্লেক্সিবল অ্যাটেন্ড্যান্স পলিসি’ ও ডিগ্রির জন্য ‘ক্রেডিট ডিস্ট্রিবিউশন’। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ অনুযায়ী, ইতিমধ্যে নয়া কোর্স সংক্রান্ত খসড়া তৈরি করেছে ইউজিসি। তাতে বলা হয়েছে, পড়ুয়ারা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে দুটি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন।
ইউজিসির মতে, বর্তমানে উচ্চশিক্ষার পরিসরে ব্যাপক বদল হচ্ছে। এখন উচ্চশিক্ষায় একের বেশি বিষয় নিয়ে পড়াশোনার আগ্রহ দেখাচ্ছে পড়ুয়ারা। পাশাপাশি দুটি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করলে পড়ুয়ার ক্রেডিট পয়েন্ট বাড়বে, যা তাকে ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। স্নাতক স্তরে এক জন পড়ুয়া যদি একটি বিষয়ে ৫০ শতাংশ ক্রেডিট পয়েন্ট পায় তাহলে বাকি ৫০ শতাংশ স্কিল নির্ভর ও মাল্টিডিসিপ্লিনারি বিষয়ে পড়াশোনা করেও পেতে পারে। যদিও ইউজিসি-র এই খসড়া প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি তুলেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর আশঙ্কা, এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে উচ্চশিক্ষা আরও ব্যয়বহুল হবে।