Friday, December 27, 2024
বাড়িবিশ্ব সংবাদ৭০ শিশুকে যৌন নিপীড়ন: শিশু পরিচর্যা কর্মীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

৭০ শিশুকে যৌন নিপীড়ন: শিশু পরিচর্যা কর্মীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৯ নভেম্বর:   প্রায় ৭০ জন মেয়ে শিশুকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ায় চাইল্ড কেয়ারের সাবেক এক শিশু পরিচর্যা কর্মীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।বিবিসি জানায়, ৪৭ বছর বয়সী অ্যাশলে পল গ্রিফিথ যৌন নির্যাতনের ৩০৭ টি ঘটনায় অভিযোগ স্বীকার করেছেন।২০০৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রিফিথ অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্য এবং বিদেশের চাইল্ডকেয়ার সেন্টারগুলোতেও এ অপরাধ করেছেন।

তার নিপীড়নের শিকার হয়েছে ১ থেকে ৭ বছর বয়সী শিশুরা। ব্রিসবেনের ডিস্টিক্ট কোর্টের বিচারক পল স্মিথ এই অপরাধের ব্যাপকতা এবং স্বরূপকে ‘বিকৃত’ ও ‘ভয়ঙ্কর’ আখ্যা দিয়েছেন।গ্রিফিথের বিরুদ্ধে এই মামলা ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস ও ইতালিতে দুই ডজনের বেশি শিশুকে নির্যাতনের আলাদা অভিযোগে আনা হয়েছে।শুক্রবার ব্রিসবেন আদালতের বিচারক স্মিথ বলেন, গ্রিফিথের মানসিক বিকৃতি ‘পেডোফিলিক ডিসঅর্ডার’বা (শিশুকামীতা) রয়েছে।

গ্রিফিথকে প্রথম ২০২২ সালের অগাস্টে অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এক বছর পর তাকে ১,৬০০’রও বেশি শিশুকে যৌন অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।তবে সব অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেশিরভাগই বাদ পড়ে।পরে তদন্তকারীরা তার নির্যাতনের প্রমাণ হিসেবে হাজার হাজার ফটোগ্রাফ এবং ভিডিও পায়। ভিডিওগুলো গ্রিফিথ নিজেই ধারণ করে ডার্ক ওয়েবে আপলোড করেছিলেন।

তবে ভিডিও গুলোতে গ্রিফিথের মুখ স্পষ্ট বোঝা না গেলেও আশেপাশের কিছু জিনিসের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়ায় তাকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন তদন্তকারীরা। ভিডিওতে দেখা যাওয়া ৪ জন মেয়ে শিশু ছিল ইতালির একটি চাইল্ডকেয়ার সেন্টারের। আর অন্য ৬৫ জন ছিল ব্রিসবেনের ১১ টি এলাকার শিশু।শুক্রবার আদালত সাজা ঘোষণার আগে ভুক্তভোগী ও তাদের অভিভাবকদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে কিন্ডারগার্টেনে নির্যাতিত দুই বোন ছিল, যাদের মধ্যে একজন গ্রিফিথকে তার প্রিয় শিক্ষক হিসেবে সম্মান করত।

একজন ভুক্তিভোগী বলেন, “আমার সঙ্গে ঠিক কি হয়েছে সেটা বলা আমার জন্য খুব কঠিন। আমি এখনও পর্যন্ত কিছু বুঝে উঠতে পারি না। বাস্তব জগত থেকে আমি নিজেকে গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছি।”অন্য একজন বলেছেন, এই ঘটনা কীভাবে তার স্বাভাবিক শৈশব ছিনিয়ে নিয়েছিল, আর এরপর থেকে মানসিক অসুস্থতার সাথে তার লড়াইয়ের কথাও বর্ণনা করেন তিনি।

গার্ডিয়ান অস্ট্রেলিয়া পত্রিকার নিবন্ধে এই ভুক্তভোগীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, “আমি কখনওই জানতে পারব না আমার জীবন কেমন হতে পারত। আমি কখনই জানবো না, মানুষকে ভয় না পেয়ে বড় হওয়া কেমন।”এদিকে, আদালতে ভুক্তভোগী শিশুদের বাবা মায়েরাও তাদের ভয়াবহ দিন গুলোর কথা তুলে ধরেছেন। অনেকে বলেছেন, গ্রিফিথকে বিশ্বাস করার জন্য নিজেকে কখনও ক্ষমা করতে পারবেন না।

একজন অভিভাবক ‘নিউজ কর্প অস্ট্রেলিয়া’কে বলেন, “আমার মেয়ে আপনাকে পিতাসমতুল্য মনে করত, ভালোবাসত। আর আপনি সেই শিশুকে খেলনার মত ব্যবহার করলেন।”আরেকজন বলেন, “আমি হয়ত আমার মেয়েকে আগের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে পারব না, কিন্তু তাকে ভাল রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”একজন বাবা সাংবাদিকদের বলেন, “বাবা-মায়েরা আজ তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার মিথ্যা আশায় এসব চাইল্ড কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যাচ্ছেন।”

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য