স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩ নভেম্বর : ছেলে, ছেলের বউ দুজনেই ডিগ্রীধারী চিকিৎসক। অথচ ঘরে দুবেলা ভাত এবং চিকিৎসা জোটে না চিকিৎসকের বাবার। গত তিনদিন ধরে বাড়িতে গ্রীল তালা দিয়ে আটকে রেখেছিল পাষণ্ড পুত্র। শেষে পর্যন্ত বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় এসে ঠাঁই নিলো এই পিতা। এই অসহায় পিতার নাম সম্পদ কুমার রায়। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। গুণধর ডাক্তার পুত্রের নাম ডঃ প্রসেনজিৎ রায়, পুত্রবধূ নাম বৃত্তিকা অধিকারী।
সম্পদ বাবুর বাড়ি রাজধানী ব্যানার্জি পাড়ায়। জীবনের সর্বস্ব উজাড় করে ছেলেকে ডাক্তার বানিয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিনি অসুস্থ, চিকিৎসা হয় না, বাড়িতে খাওয়ার জোটে না, ঘরে তালা দিয়ে আটকে রাখা হয় সম্পদ বাবুকে। সম্পদ বাবু কাবু সুরে বলেন, তার জীবনে এমন দিন দেখতে হবে সেটা কখনো ভাবেননি। শরীরের রক্ত জল করে জীবনের সমস্ত কামাই ছেলের উপর ব্যয় করে ডাক্তার বানিয়েছেন। কিন্তু আজ তার সাথে যা ঘটছে তা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। সামাজিক অবক্ষয় বললেও কম হবে। ছেলের বউয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে সব সময় বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে। গত তিনদিন ধরে কোন খাবার দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদ করলে ছেলে এবং ছেলের বউ তাকে মেরে ফেলবে।
তাই বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছেন তিনি। রাস্তা দিয়ে মানুষ যখন পায়ে হেটে যাচ্ছে তখন সম্পদ বাবুর এই দৃশ্য দেখে সকলের তাজ্জব হয়ে যাচ্ছে। ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত বানানো কি তার অপরাধ ছিল? নাকি ছেলেকে বড় করে তোলার ক্ষেত্রে কোন ত্রুটি ছিল? সমাজের সব বাবার মতোই ছেলেকে মানুষের মত মানুষ করে তুলতে চেয়েছিলেন সম্পদ বাবু। কিন্তু ছেলে যে এতটা পাষণ্ড হবে সেটা হয়তো স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি রাস্তার পাশে আজ বসে থাকা এই পিতা। বহু স্বপ্ন নিয়ে কষ্টে উপার্জিত দিয়ে ছেলেকে ডাক্তার পদবী লাগানোর যোগ্য করেছিলেন তিনি। কিন্তু কথায় আছে শুধু উচ্চশিক্ষিত হলেই মানুষ হয় না। কারণ আগরতলা শহরে বহু রিক্সা চালক রয়েছেন যারা প্রতিদিন নিজে তিন বেলা ভাত খেতে না পারলেও মা বাবার সেবা সুস্থতা করে চলেছে। সুতরাং, এই সামাজিক অবক্ষয়ের ঘটনাটি সকলকেই অবাক করেছে। আশেপাশের মানুষজন চাইছে পাষণ্ড ছেলে বিরুদ্ধে যাতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।